Featured Post

ছড়া ।। আকাশটাকে খোঁজে ।। দীনেশ সরকার

ছবি
আকাশটাকে খোঁজে দীনেশ সরকার            পড়তে বসলে জানলা দিয়ে মন ছুটে যায় দূরে গাইছে পাখি ওই যে গাছে মিষ্টি-মধুর সুরে। কিংবা যখন হাত বাড়িয়ে আকাশ আমায় ডাকে পড়ার পাতায় মন আমার কি বাঁধা তখন থাকে?   পূবের হাওয়া কড়া নাড়ে যখন আমার দোরে কিংবা অলি গুনগুনিয়ে চতুর্দিকে ঘোরে প্রজাপতি পাখা মেলে ওড়ে ফুলের মেলায় কখন যেন অবুঝ এ মন যায় হারিয়ে হেলায়।   কাঠবেড়ালি কাটুস্‌-কুটুস্‌ আমার দিকে তাকায় মন তখন কি আটকে থাকে পড়ার বইয়ের পাতায়? টুনটুনিটা তিড়িং-বিড়িং পুচ্ছ নাচায় গাছে মনটা বাঁধা তখন কি আর অঙ্কখাতায় আছে?   অঙ্ক কষতে ভুল হয়ে যায়, পড়া যাই যে ভুলে স্যারের বকা মাঝে মাঝেই খাই আমি ইস্কুলে। মনকে আমি কত্ত বোঝাই, মন তবু কি বোঝে সুযোগ পেলেই জানলা দিয়ে আকাশটাকে খোঁজে।   ******************************************** দীনেশ সরকার ১৪০ ডি, হিজলি কো-অপারেটিভ সোসাইটি, প্রেমবাজার, খড়্গপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর---- ৭২১৩০৬

গল্প ।। অটিজম ।। চিত্তরঞ্জন গিরি


অটিজম

চিত্তরঞ্জন গিরি


ফুন্তু তো বাবা-মার খুব প্রিয় সন্তান। রতন বাবু রোজ ই  ছেলে ফুন্তুকে স্কুলে নিয়ে যায় সকাল সাতটার সময়।
ছেলেটা খুব ভালো। সমবয়সী ছেলেরা স্কুলে প্রায় দুষ্টামি করে। ও এসবে নেই ।ওর একটা অসুখ ধরা পড়েছে । অটিজিম !অর্থাৎ ভালো করে বললে ওর ম্যাচিওরিটি অন্যদের থেকে একটু কম। অন্যরা দুষ্টামি করলেও -ও চুপচাপ বসে দেখতে থাকে। ফুন্তু সব সময় বাইরে কম কথা বলে। বাড়িতে প্রচুর কথা বলে। কথা বলাটা দেরি করে শিখেছে ।
যখন তখন ফুন্তুকে নিয়ে চিন্তায় থাকে রতন বাবু ও তার স্ত্রী অনিতা। সাধারণ বাচ্চা থেকে এরা দেরি করে পড়াশোনা শেখে। যখন-তখন অসুখ বিসুখ লেগেই থাকে। ওরা যে কাজটা করে মন দিয়েই করে। অর্থাৎ মনটাকে সেখানেই রেখে দেয়। কথা যখন বলতে পারত না। তারা কলকাতার উপর নানা ডাক্তার দেখিয়েছেন। এশিয়ার সেরা শিশু চিকিৎসক অপূর্ব ঘোষ। তিনি শিশুর তাকানো দেখেই বলে দেন অসুখটা অটিজিম কিনা। অটিজমের ভালো ট্রিটমেন্ট হয় বাইপাস রুবির কাছে মনোবিকাশ কেন্দ্রে। কিন্তু প্রতিদিন নিয়ে আসা নিয়ে যাওয়াটাও সমস্যা। ওদের বাড়ীর নিকটবর্তী পেয়ারলেস হসপিটাল এ ট্রিটমেন্ট হয়। সাইকিয়াট্রিস্ট অনিন্দিতা চ্যাটার্জির তত্ত্বাবধানে স্পেসাল এডুকেসান এর ক্লাস হয়। তারপর ধীরে ধীরে ফুন্তু  কথা বলতে শেখে। মনের মধ্যে খুশির ছোঁয়া এলেও চিন্তা থেকে যায়। বন্ধু অরিজিতের ছেলের এরকম অবস্থা। চার পাঁচ বছর বয়স পর্যন্ত খুব ভালোভাবে কথা বার্তা খেলাধুলা করত। তারপর হঠাৎ  চুপ হয়ে যায়। কোন কথা আর বলতে পারে না। ভারতবর্ষের নানা চিকিৎসাকেন্দ্রে তার ছেলেকে দেখানোর চেষ্টা করেছে। সবক্ষেত্রেই বিফল। রতন বাবুর চিন্তা -তার ছেলের কি এই রকম অবস্থা হবে ? এই দুশ্চিন্তা, সব সময় রতন বাবু ও তার স্ত্রীকে  কুরে কুরে খায়। ডাক্তারের কথা মত মডেলিং ক্লে ও পাজেল সাজানো শেখানো হয়। এই গুলো আবার কিডজিতে শেখানো হয়। শিশুদের ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল হল কিডজি। মুম্বাইয়ের জি  টিভির সংস্থার  তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হয় ।নিকটবর্তী কিডজি তে, ফুন্তুকে ওখানে দু'বছর পড়ানো হয়। ওখানে ক্লাস করতে করতে ভালোভাবে কথা বলাটা শিখে যায়। কিডজি স্কুল হল বাচ্চাদের প্রাকটিক্যাল ক্লাস। হাতেনাতে শিখানো। যারা তাড়াতাড়ি ধরতে পারেনা তাদের এই স্কুলে যাওয়া উচিত। দু বছরে প্রায় 70 হাজার টাকার মতো খরচ। 
এই স্কুলে পড়ে ফুন্তু যেমন কথা বলা তাড়াতাড়ি শিখতে পেরেছে। তেমনি একটা সমস্যাও তৈরি আছে। পড়াশোনার কম্পিটিশনের পিছিয়ে গেছে। পিছিয়ে যাওয়া মানে কিডজি থেকে পড়া শেষ করে অন্য স্কুলে ওয়ানে ভর্তি যখন হবে তখন কম্পিটিশন পরীক্ষায় বিভিন্ন ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে ব্যর্থ হয়। রতন বাবু ও তাঁর স্ত্রী খুব চিন্তায় পড়ে। নিকটবর্তী ইংলিশ মিডিয়াম বিদ্যাপীঠ স্কুলে ভর্তি হওয়ার জন্য একটা ক্লাসে নামিয়ে যদি করা যায় সে চেষ্টাও করে ব্যর্থ হয়। উপায় না  পেয়ে পাশাপাশি নিম্নমানের প্রাইভেট বেঙ্গলি মিডিয়াম স্কুলে ভর্তি করানো হয়।
রীতিমতো বাংলা মিডিয়ামে ক্লাস করতে থাকে ফুন্তু । ইংলিশ মিডিয়াম থেকে হঠাৎ বাংলা মিডিয়ামে আশা যথেষ্ট কষ্ট কর বুঝতে। তাই রতন বাবু একটা ক্লাস নামিয়ে তাকে ভর্তি করায়। ঘরে প্রাইভেট টিউটর রেখে দেয়।
প্রতিদিন সাড়ে সাতটা থেকে সাড়ে দশটা পর্যন্ত ওর স্কুল। তার বাবা রোজ গিয়ে ছেড়ে দিয়ে আসে আবার নিয়েও আসে। প্রথম প্রথম স্ত্রী অনিতা নিয়ে যেত আর নিয়ে আসতো।  ও পায়ে চোট পাওয়াতে রতন  বাবুই রোজ নিয়ে যায়।
কয়েকটা দিন স্কুল যাওয়ার পর অনিতা রতনকে বলে- স্কুলে যারা পড়তে আসে লোয়ার ক্লাস ফ্যামিলির ছেলে মেয়েরা। কারো বাবা রিক্সা চালায় ।কারো বাবা ভ্যান।কারো বাবা লেবারের কাজ করে ।এইরকম ফ্যামিলি ছেলেমেয়েরা পড়তে আসে। নিজেকে কেমন কেমন লাগে !
রতন বাবু শুনে বলে। তা দেখে আমাদের লাভ কি ? কোথাও চান্স না পেয়ে এখানে যে সুযোগ পেয়েছি এটা আমার বাবার ভাগ্য ভালো।
---তা অবশ্য ঠিক। কিন্তু যখন কিডজিতে পড়তো তখন হাইফাই সোসাইটির ছেলে মেয়েরা আসতো। আর এখানে দেখো। এ স্কুলের ছেলেমেয়েদের মাকে দেখো যেন কারো বাড়িতে ঝি গিরি করে।
আমাদের ,স্ট্যাটাসের দিকে লক্ষ্য করলে চলবে না। আগে আমাদের ছেলের দিকে তাকাতে হবে।
-- তা অবশ্য ঠিক। কিন্তু লক্ষ্য করবে-এই সব ছেলেমেয়েরা প্রচুর বাজে খিস্তি মারে। ওদের মুখের ভাষা ভালো থাকবে না। কারণ ওদের বাবা মারাও প্রতিদিন দিনে রাতে নিজেদের মধ্যে বাজে খিস্তি মুখে এনে ঝগড়া করে। তাছাড়া আমি কোন বন্ধু বান্ধব আত্মীয় পরিজনরা যখন জিজ্ঞেস করে, তোমার ছেলে কোন স্কুলে পড়ে? উত্তরটা দিতে আমার এত কষ্ট লাগে।কি বলে বুঝাবো তোমায়।
রতন বাবু বলে- আমারও কি ভালো লাগে ? ছেলের মুখে র দিকে তাকিয়ে সব মেনে নিই। বাজে খিস্তির কথা বলছো।তা হয়তো খারাপ বলনি। আমাদের তো করার কিছু নেই। আর আমার ছেলে ওদের সাথে মেশার সুযোগ পাবে কি করে ? ঘন্টা বাজলে ঢুকে। আবার ঘন্টা বাজলে স্কুল থেকে ফিরে। মাঝখানে তো সব পিরিয়ড গুলোতেই স্যার থাকে ক্লাসরুমে। বছর দুয়েকের মধ্যেই অন্য কোন ভালো স্কুল পেলেই ছেলেকে নিয়ে চলে যাব।
স্বামীর কথায় স্ত্রীও সায় দেয়।
দিন যায়। এরমধ্যে ফুন্তুর দু-তিনটা দিদিমণি পাল্টে যায়। ফুন্তুর  যাকে পছন্দ নয় তার কাছে পড়তে চায় না। ফুন্তুর সম্পা আন্টিকে পছন্দ ছিল না বলে প্রচুর টেনশন করতো। ও আসবে শুনলে কিন্তু জানালার পাশে বসে তাকিয়ে থাকত টেনশানে। আর বলতো, পড়বেনা পড়বেনা। সম্পা আন্টিকে তার একদম পছন্দ নয় । তার বাবা-মা জানতে চাইলে কেন পছন্দ নয় । ফুন্তু কোনো উত্তর দিত না। একদিন অনিতা আড়ালের দেখতে থাকে কিন্তু কেন শম্পা আন্টিকে পছন্দ করেনা। পড়ানোর সময় শম্পা আন্টি চোখ দেখাতো। এই চোখ দেখানোটাই বড় ভয়ের কারণ । আর এটার জন্যই বড় টেনশন তার । আর এই টেনশনে মাথা যন্ত্রণা তার শুরু হয়। পাশাপাশি ডাক্তার দেখিয়ে কিছু কাজ হলোনা। বাধ্য হয়ে তাকে আমরি প্রাইভেট হসপিটালে ভর্তি করানো হলো। সেখানে বেশ কয়েকদিন থাকার পর বাড়ি ফিরলে। শম্পা আন্টির পরিবর্তে রানী আন্টি আসে।
রতন বাবু ও তাঁর স্ত্রী কিছু বলতে পারে না। ডাক্তারের পরামর্শ কথা মনে পড়ে যায়। "ওর যেটা পছন্দ সেটাই তো আপনারা করবেন ।"
ফুন্তুর বিশেষ করে রাগী টিচার পছন্দ নয়। গল্পের ছলে যে দিদিমণি পড়াবে তাতেই ফুন্তু বেশ খুশি হয়। ওর রানী আন্টির পড়ানো খুব পছন্দ।। তাই ফুন্তু রানি আন্টিতেই খুশি ।
ফুন্তুর যখন তখনই অসুখ লেগেই আছে। সাধারণ বাচ্চা থেকে একটু আলাদা। রাত্রে ঘরের মধ্যে আলো জ্বেলে ঘুমানো পছন্দ। আলো না থাকলে চিৎকার করে ঘর কাঁপিয়ে দেয়। আর খিদের সময় একটু খিদে পেলে চিৎকার করে ঘর কাঁপিয়ে দেয়। ডাক্তার বলেছে ওকে একটু খিদে অবস্থায় রাখবেন না। ও আরো  অসুস্থ হয়ে পড়বে।
প্রতিদিন স্কুলে যায়। টিফিনে অনিতা ছেলের জন্য নানা রকম খাবার তৈরি করে দেয়। কখনো চাওমিন। কখনো পরোটা। কখনো এগরোল। স্কুল থেকে বাড়ি ফিরলে মা বলে -কিরে সব খাবার খেয়েছিস ? ফুন্তু বলে জানো মা ওই দুষ্টু অভিজিত রায় ।ও প্রতিদিন আমার কাছ থেকে খাবার কেড়ে নেয়। এই অভিজিৎ রায়কে অনিতার একদম পছন্দ নয়। একদিন পেনের খোঁচা মেরে ছিল ফুন্তু কে। এখনো  সেই দাগ মুছে নি। ও এতই দুষ্টু যে ওদের ক্লাসের ছেলেরা ওর নামে সব সময় কমপ্লেন করে। অনিতা গিয়ে স্কুলে টিচার দের কে বলে -এইরকম ছেলেকে স্কুলে রেখেছেন কেন  ? আমার ছেলের  যদি কিছু হয়ে যায়। ক্ষতি তো আমারই হবে। সেদিন স্কুলের হেড মিস্ট্রেস অভিজিতের মাকে ডেকে পাঠান। সবার সামনে অভিজিতের মাকে অপমান করা হয়। অনিতা ওর মাকে বলে -কেমন ছেলে জন্ম দিয়েছ ?  সবার যা ক্ষতি করছে বড় হলে তো সমাজের বড় anti-social তৈরি হবে । আর টিচার দের কে  বলে আপনারা যদি যথাযথ ব্যবস্থা না নেন । আমি থানায় কমপ্লেন করতে বাধ্য হব । টিচাররা যেমন শাস্তি দিয়েছে । আর সেই সময় তার মা সপাটে তিন চারটা থাপ্পড় গালে লাগিয়ে দেয় । বুঝা যায় যে ওর মার ছেলেকে নিয়ে কত কষ্ট।
এরপর ফুন্তু ঘরে ফিরলে অনিতা আগে দেখে নেয় ছেলের কোথায় কেউ পেন ফুঁটিয়ে দিয়েছেন কিনা। যদি কোন ডাক্তার দেখতে পেত তখন অনিতার চিৎকার শুরু হয়ে যেত। একটা বস্তির স্কুল। বস্তির ছেলে মেয়েরা আর কত ভালো হবে ? স্বামী কে বলতো- কবে তাড়াতাড়ি এই স্কুল চেঞ্জ করবে বলোতো ? অভিজিৎ রায়ের নামে যা তা বলে যেত। শিবাজী ছেলেটাকে নিয়ে আমার বেশি ভয় । এখন তো এখন যা করে বেড়ায় । বড় হলে দেখে বড় গুন্ডা হয় তৈরি হবে । রতন বাবু আশ্বাস দেয় তাড়াতাড়ি অন্য স্কুলে সিফট করিয়ে দেবে।
এর কিছুদিন পর ফুন্তু অসুস্থ হয়ে পড়ে। ডাক্তার দেখে  ওষুধ দেয় । এবং বলে খালি পেটে একবারে থাকা চলবে না। দেড় ঘণ্টা অন্তর ওকে খেতে হবেই। যদি না খায় ভয়ংকরভাবে শরীরটা ওর ক্ষতি হয়ে যাবে। ডাক্তারের কথা শুনে প্রায় বেশিরভাগ দিন ছেলেকে কামাই  করা তো ।
স্কুলের অ্যানুয়াল পরীক্ষা।স্কুলের টিফিন দিতে কোনদিন ভুলে নি অনিতা। সে জানে ছেলে টিফিন না খেলে বড় অসুখে পড়ে যাবে।
সেদিন বুধবার। ফুন্তুর অংক পরীক্ষা। আগের দিনের পরীক্ষা গুলো ভালোই হয়েছে। আগের দিন রাত্রে গেস্ট আসার জন্য  খেয়ে ঘুমোতে রাত একটা বেজে যায়। এলার্ম দেওয়া হয়নি। পরের দিন ঘুম ভাঙতে 07:15। পরীক্ষা সাড়ে সাতটার সময়। তাড়াতাড়ি ছেলেকে রেডি করে নিয়ে চলে যায় রতন বাবু। যাওয়ার সময় স্ত্রী অনিতা মনে করিয়ে দেয় দোকান থেকে একটা কেক ও বিস্কিটের প্যাকেট অবশ্যই নিয়ে যেতে। মাথা নেড়ে হাঁ বলে ছেলেকে নিয়ে যায়।
পরীক্ষা চলছে। সাড়ে দশটার সময় পরীক্ষা শেষ হবে।
রতন টিফিন করছে। পাশে স্ত্রী বলে- ছেলের জন্য টিফিন ব্যাগের ভিতর ঢুকিয়ে দিয়েছিলে তো ?
হঠাৎ খাওয়া বন্ধ করে রতন। বলে হাইরে একটা বড় ভুল হয়ে গেছে।
অবাক চোখে তাকায় অনিতা। বলে -কি?
আরে ছেলে কি টিফিন দেওয়া হয়নি।
অনিতা কথাটা শুনে হতভম্ব হয়ে যায়। বলে তুমি ঠিক বলছো তো ?
রতন খাওয়া বন্ধ করে মুখটা ধুয়ে নেয়। অনিতা ঘড়ির দিকে তাকায়। এখন বেজেছে সাড়ে নটা। সকাল নটার সময় ফুন্তুদের টিফিন হয় পনেরো মিনিট।
অনিতার চোখ জলে ভরে আসে। বলে- ছেলেটা আমার না খেয়ে আছে। এতক্ষণ মনে হয় শরীর খুব খারাপ হয়ে গেছে। নিশ্চিত কষ্ট পাচ্ছে। বলে -দাঁড়াও আমিও যাব ।
দুজন বেরিয়ে পড়ে। স্কুলের সামনে অন্যদের মতো এরাও দাঁড়িয়ে আছে। কখন ছুটির ঘন্টা পড়বে তার প্রতীক্ষায়। মাথার ভিতরে কত দুশ্চিন্তার জাল বুনে যাচ্ছে দুজনেই। এর মধ্যে কতবারই ঈশ্বরকে ডাকা । রতন বারবার হাত ঘড়ির দিকে তাকায়। আর পাইচারি করতে থাকে। এমন সময় ছুটির ঘন্টা পড়ে । রতন ভিড় ঠেলে গেটের কাছে পৌঁছে যায়। এক একটা ছেলে বেরিয়ে আসে। অর্জুনের পাখির চোখের মতো দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে কখন ফোন তো বেরিয়ে আসে। বেশ কিছু ছেলেমেয়ে পেরিয়ে যাওয়ার পরও কিন্তু আসছে না দেখে মাথার ভিতরে রক্ত চাপ যেন ক্রমশ বেড়েই চলেছে। গা থেকে ঘাম বেরিয়ে যাচ্ছে দরদর করে। ক্রমশ পৃথিবী যেন অন্ধকার হয়ে আসছে। নিশ্চয়ই কিছু একটা হয়েছে ওর। দুশ্চিন্তার ধোঁয়াশার ভিতর হঠাৎ যেন আগুনের ফুলকি। ওই তো ফুন্তু ! বেশ হাসিখুশিতে আসছে। নিশ্চয়ই তেমন কিছু হয়নি। কেন হয়নি ? কাছে  আসতেই ছেলেকে জড়িয়ে ধরে। বাবা তোমার কোন কষ্ট হয়নি। আজকে যে বাবা তোমাকে খাবার দিতে ভুলে গেছি । আর কোনদিন হবে না বাবা।
ফুন্তু ওই অভিজিতের দিকে আঙ্গুল তুলে বলে। বাবা ও আজকে আমাকে খাবার দিয়েছে। আমি চাইনি। ও ও যখন দেখল আমার খাবার নেই। ও আমাকে জোর করে খাওয়ালো। ওর মা আলু ভাজা পরোটা দিয়েছিল। ততক্ষণে অনিতা ওপাশে হাজির। ছেলের কথা শুনে অভিজিৎ কে জড়িয়ে ধরে অনিতা ও রতন বাবু। দুজনেই বলে আমায় ক্ষমা করে দে তোকে আমি এখন আমরা অনেক কিছুই বাজে কথা বলেছি।
 
___________________________________________________________________________




 
 চিত্তরঞ্জন গিরি
C-03 Sreenagar paschimpara panchasayar road
Post -panchasayar
Kolkata 700094
West Bengal India


মন্তব্যসমূহ

সপ্তাহের পছন্দ

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 38th issue: January 2025

কবিতা ।। আকাশ-সাগর ।। শান্তনু আচার্য

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সুচিপত্র ।। 37th issue: December 2024

কবিতা ।। নতুন বছর ।। জীবন সরখেল

চোখের ভাষা ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত

ছড়া ।। শীতের দু'টি মাসে ।। গোবিন্দ মোদক

প্রচ্ছদ ও সূচীপত্র ।। 24th issue: September 2023

ছোটদের আঁকিবুঁকি ।। কিশলয় - ২২ ।। জুলাই ২০২৩

ছড়া ।। দৃষ্টিকাড়া বৃষ্টি ।। শচীন্দ্র নাথ গাইন

ছড়া ।। অদ্ভূতুড়ে ।। প্রবোধ কুমার মৃধা

মাসের পছন্দ

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 38th issue: January 2025

কবিতা ।। আকাশ-সাগর ।। শান্তনু আচার্য

ছড়া ।। শৈশবের রথ ।। ইয়াসমিন বানু

কবিতা ।। নতুন বছর ।। জীবন সরখেল

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সুচিপত্র ।। 37th issue: December 2024

অণুগল্প ।। ঝুমুক ঝুমুক ।। ব্রজ গোপাল চ্যাটার্জি

ছোটগল্প ।। হেমন্ত দাদার সাথে ।। দীপক পাল

ছড়া ।। আকাশটাকে খোঁজে ।। দীনেশ সরকার

ছড়া ।। শীতবুড়িটা ।। প্রবোধ কুমার মৃধা

কবিতা ।। খুকির বায়না ।। খগেশ্বর দেব দাস

বছরের পছন্দ

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। ত্রয়োত্রিংশ সংখ্যা ।। জুন ২০২৪

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 38th issue: January 2025

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সুচিপত্র ।। 37th issue: December 2024

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। চতুর্ত্রিংশ সংখ্যা ।। জুলাই ২০২৪

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচীপত্র ।। 29th Issue: February

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 31st issue: April 2024

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 32nd issue: May 2024

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 30th issue : March 2024

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। পঞ্চত্রিংশ সংখ্যা ।। আগষ্ট ২০২৪

অতি প্রিয়

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। আত্মপ্রকাশ সংখ্যা ।। অক্টোবর ২০২১

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। দ্বিতীয় সংখ্যা ।। নভেম্বর ২০২১

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 4th issue: January 2022,

নিবন্ধ ।। শিশু-কিশোর সাহিত্যবলয়ে শিশুরাই যেন ব্রাত‍্য না থাকে ।। অরবিন্দ পুরকাইত

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 7th issue: April 2022

নিবন্ধ ।। দেশীয় উদ্ভিদ কেন গুরুত্বপূর্ণ ? ।। ডঃ চিত্তরঞ্জন দাস

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। কিশলয় - ১০ ।। জুলাই ২০২২

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। কিশলয় - ১১ ।। আগস্ট ২০২২

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র : 8th issue: May 2022

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। কিশলয় - ১২ ।। সেপ্টেম্বর ২০২২