Featured Post
থ্রিলার গল্প ।। লাশ কাটার ঘর ।। ইয়াছিন ইবনে ফিরোজ
- লিঙ্ক পান
- X
- ইমেল
- অন্যান্য অ্যাপ
লাশ কাটার ঘর
ইয়াছিন ইবনে ফিরোজ
মেডিকেলের অডিটোরিয়ামে নিস্তব্ধতা নেমে এসেছে। আমিন স্যার শিক্ষার্থীদের দিকে তাকিয়ে বললেন, "এখন তোমরা বলো, এরপর কী হতে পারে?" একজন শিক্ষার্থী হাত তুলল, "স্যার, লাশ কি সত্যিই মৃত ছিল, নাকি অন্য কিছু?" আমিন স্যার একটু মুচকি হাসলেন, তারপর বলতে শুরু করলেন—
রহস্যের শুরু রাতের নিস্তব্ধতা ভেদ করে হাসপাতালের মর্গে একটা অদ্ভুত শব্দ শোনা গেল। যেন কেউ নিঃশ্বাস নিচ্ছে। কিন্তু সেখানে তো কেউ থাকার কথা নয়! কবির হোসাইনের নিথর দেহ পড়ে আছে মর্গের মেঝেতে। তার চোখ দুটি বিস্ফারিত, মুখ বিকৃত। যেন মৃত্যুর আগে সে ভয়ংকর কিছু দেখেছে। কিন্তু সবচেয়ে অদ্ভুত ব্যাপার হলো—লাশ নম্বর ৫৭০ কোথাও নেই! মর্গের বাতাস ভারী হয়ে উঠল। ফ্রিজিং মেশিনের কাঁচে একটা অদ্ভুত দাগ দেখা গেল—যেন কারও নখ দিয়ে আঁচড় কাটা! রাতের পালার কর্মচারী রফিক ভয় পেয়ে গেল। সে সিসিটিভির ফুটেজ দেখতে বসল। প্রথমে সব স্বাভাবিক। কিন্তু রাত ৩:০৭ মিনিটে হঠাৎ আলো নিভে গেল। পরের দৃশ্য—কবির হোসাইন ধীরে ধীরে মেঝেতে লুটিয়ে পড়ছে, তার চারপাশে ছায়ার মতো কিছু একটা নড়ছে। আর লাশ ৫৭০ টেবিল থেকে গায়েব!
লাশের পরিচয় পরদিন সকালে হাসপাতালের পরিচালক ডা. রফিকুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করলেন। তিনি শুনেছিলেন লাশ ৫৭০-এর কথা, তবে জানতেন না, এটি আসলে কার দেহ। রেকর্ড ঘেঁটে বের হলো, মেয়েটির নাম নাজফা রহমান। বয়স ২৫। পাঁচদিন আগে শহরের এক পুরনো বাড়ির কাছ থেকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছিল। মৃত্যুর কারণ—অজানা। কিন্তু সবচেয়ে অদ্ভুত ব্যাপার ছিল, নাজফা পাঁচ বছর আগে নিখোঁজ হয়েছিল! তার শরীরের অবস্থান দেখে মনে হচ্ছিল, সে মাত্র একদিন আগে মারা গেছে। তাহলে এত বছর সে কোথায় ছিল?
অলৌকিক ঘটনা এরপর থেকেই হাসপাতালের লাশ কার্টার ঘরে অদ্ভুত ঘটনা ঘটতে লাগল। মাঝরাতে কেউ ঢুকলে হালকা হাসির শব্দ শুনতে পেত। করিডোরের জানালায় মাঝে মাঝে একটা ছায়া দেখা যেত। কিছু ডাক্তার বললেন, তারা রাতে নারীদের গোঙানির শব্দ শুনেছেন। এক রাতে সাহসী কর্মচারী রফিক সত্যটা জানার জন্য লাশ কার্টার ঘরে ঢুকল। দরজা ঠেলে ঢুকতেই দেখল, কাঁচের জানালায় একটা রক্তাক্ত হাতের ছাপ! সে আলো জ্বালানোর চেষ্টা করল, কিন্তু সুইচ কাজ করল না। ঠিক তখনই সে অনুভব করল, কেউ তার পেছনে দাঁড়িয়ে আছে। ঠাণ্ডা বাতাস বয়ে গেল। রফিক ধীরে ধীরে পেছনে ঘুরে দাঁড়ালো।
পরদিন সকালে রফিকের নিথর দেহ পাওয়া গেল। তার চোখ বিস্ফারিত, মুখ বিকৃত। কবির হোসাইনের মৃত্যুর মতোই! কিন্তু সবচেয়ে ভয়ংকর বিষয় ছিল—সিসিটিভির ফুটেজ! রাত ৩:০৭ মিনিটে দেখা গেল, রফিক নিজে নিজেই নিজের গলা চেপে ধরছে! কিন্তু পাশে কেউ ছিল না! হাসপাতালের কর্মকর্তারা এই লাশ কার্টার ঘর চিরতরে বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল। আর কেউ এখানে প্রবেশ করবে না।
অডিটোরিয়ামে নীরবতা আমিন স্যার থামলেন। শিক্ষার্থীরা হতভম্ব! একজন ধীরে ফিসফিস করে বলল, "স্যার, তাহলে কি নাজফা সত্যিই মরে যায়নি?" আমিন স্যার এক পলক চুপ করে থেকে বললেন, "পাপ কখনো ক্ষমা করে না, সে ফিরেই আসে!"
অডিটোরিয়ামের নিস্তব্ধতা ভেঙে হঠাৎ দরজার বাইরে একটা আওয়াজ হলো— মৃদু পদশব্দ, যেন কেউ ধীরে ধীরে হাঁটছে। শিক্ষার্থীরা চমকে পেছনে তাকালো। আমিন স্যার কৌতূহলী দৃষ্টিতে তাকালেন, কিন্তু কেউ নেই।"স্যার, কেউ কি এসেছিল?" একজন শিক্ষার্থী জিজ্ঞেস করল। আমিন স্যার মৃদু হাসলেন, "হয়তো গল্পের প্রভাব! তবে এই ঘটনাগুলো কখনো পুরোপুরি মিথ্যা হয় না।"ঠিক তখনই শ্রেণিকক্ষের আলো এক মুহূর্তের জন্য মৃদু কমে গেল, যেন বিদ্যুৎ সরবরাহে সমস্যা হয়েছে। শিক্ষার্থীরা একে অপরের দিকে তাকালো। কেউ একজন ফিসফিস করে বলল, "ঘড়ি দেখুন!এখন ৩:০৭! "সবাই তৎক্ষণাৎ মোবাইল বের করে সময় দেখল। কিন্তু ৩:০৭ তো হয়নি, এখন দুপুর ২:৩৭!
আমিন স্যার চেয়ার থেকে উঠে জানালার দিকে তাকালেন। কাচের ওপরে যেন হালকা ধোঁয়াটে হাতের ছাপ! এক শিক্ষার্থী ভয়ে বলল, "স্যার, এটা কি?"আমিন স্যার আর কিছু বললেন না। ধীরে ধীরে ফিরে এসে চেয়ার টেনে বসলেন। তারপর মৃদু স্বরে বললেন, "পাপ কখনো ক্ষমা করে না, সে ফিরেই আসে"।
অডিটোরিয়ামের বাতাস ভারী হয়ে উঠল, নিস্তব্ধতা ছড়িয়ে পড়ল চারপাশে।হঠাৎ বাতাসে একটা শীতল অনুভূতি ছড়িয়ে পড়ল। শিক্ষার্থীরা একে অপরের দিকে তাকাল—একটা অদ্ভুত অস্বস্তি তাদের চেপে ধরেছে। এমন সময় সামনের সারিতে বসে থাকা এক ছাত্রী হঠাৎ কেঁপে উঠল। "আমার গায়ে কেউ স্পর্শ করল!" মেয়েটি ভয়ে চিৎকার করে উঠে দাঁড়াল।তারপরই শ্রেণিকক্ষের জানালার কাচে আচমকা লম্বা আঁচড়ের দাগ দেখা গেল! শিক্ষার্থীদের কেউ কেউ চিৎকার দিয়ে উঠে দরজার দিকে দৌড় দিল, কিন্তু দরজা যেন নিজে থেকেই বন্ধ হয়ে গেল!"স্যার, এটা কী হচ্ছে?" একজন আতঙ্কিত কণ্ঠে বলল।আমিন স্যার গম্ভীর গলায় বললেন, "শান্ত হও! ভয় পেও না। আমাদের কিছু করতে পারবে না।"কিন্তু তার কণ্ঠেও এক ধরনের অস্বস্তি ছিল। কারণ কাচের জানালার ওপারে একটা ছায়া স্পষ্ট হয়ে উঠছিল। লম্বা কালো চুল, নিঃসাড় দাঁড়িয়ে থাকা অবয়ব—একটা নারীর প্রতিচ্ছবি! একজন শিক্ষার্থী কাঁপা কাঁপা গলায় বলল, "নাজফা?"ঠিক তখনই বাতাসে ফিসফিস করে একটা কণ্ঠ শোনা গেল—"আমাকে খুঁজে পেয়েছ?"সবাই ভয়ে একসঙ্গে চেঁচিয়ে উঠল। আলো নিভে গেল। কক্ষের মধ্যে ভয়ার্ত নিঃশ্বাসের শব্দ ছাড়া আর কিছুই শোনা যাচ্ছিল না। ঘর অন্ধকারে ডুবে গেল। শিক্ষার্থীরা নিঃশ্বাস বন্ধ করে দাঁড়িয়ে রইল। হঠাৎ করে এক তীক্ষ্ণ শীতল বাতাস পুরো কক্ষে বয়ে গেল, যেন কেউ পাশ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে। একজন শিক্ষার্থী কাঁপা কাঁপা গলায় বলল, "আমিন স্যার, এটা কী হচ্ছে?"আমিন স্যার কোনো উত্তর দিলেন না। হঠাৎই পেছনের সারি থেকে এক বিকট চিৎকার শোনা গেল!
সবাই আতঙ্কে পেছনে তাকাল। এক ছাত্র মাটিতে লুটিয়ে পড়েছে। তার গলা শক্ত করে চেপে ধরা, যেন সে নিঃশ্বাস নিতে পারছে না! তার চোখ বিস্ফারিত, মুখ বিকৃত! ঠিক যেমন কবির হোসাইন আর রফিকের হয়েছিল!মাটিতে পড়ে থাকা ছাত্র কাঁপতে কাঁপতে ফিসফিস করে বলল, "সে…সে এখনো এখানে আছে!" আমিন স্যার দ্রুত তার কাছে গিয়ে তাকে উঠালেন, "শান্ত হও, কিছু হবে না।" কিন্তু কক্ষের কোণ থেকে আবার সেই ফিসফিসে কণ্ঠস্বর ভেসে এলো— "তারা আমাকে লুকিয়ে রেখেছিল। কিন্তু তোমরা আমাকে দেখতে পেয়েছ!" তারপর দরজা ধীরে ধীরে খুলে গেল, যেন কেউ বেরিয়ে গেল কক্ষ ছেড়ে। আলো স্বাভাবিক হয়ে এলো, বাতাস আবার গরম হয়ে উঠল। কিন্তু সবাই জানত—এই ভয়ংকর অধ্যায় শেষ হয়নি! শিক্ষার্থীরা হতবাক হয়ে একে অপরের দিকে তাকাল। সবার মনে একটাই প্রশ্ন—এটা কি সত্যি ঘটল, নাকি কেবল মনের ভুল?
আমিন স্যার একটু নড়েচড়ে বসলেন, তার মুখেও এক ধরনের অস্বস্তি। তিনি ধীর গলায় বললেন, "ক্লাস এখানেই শেষ। তোমরা সবাই ফিরে যাও।" কিন্তু কেউই নড়ল না। সবাই যেন আটকে গেছে কোনো অদৃশ্য ভয়াবহতার ফাঁদে। ঠিক তখনই দরজার বাইরে করিডোরে ঠক ঠক ঠক শব্দ শোনা গেল—কারও খালি পায়ের চাপ! ধীর, ভারী, ছন্দহীন!
সবাই আতঙ্কে দরজার দিকে তাকাল। আলো নিভে গেল আবার!
ফিসফিস করে একটা কণ্ঠ ভেসে এলো—
"আমাকে খুঁজে পেয়েছ, তাই তো? এবার কি চলে যেতে দেবে?"
আচমকা জানালার কাচে আবার সেই রক্তাক্ত হাতের ছাপ পড়ল! বাতাসে কেমন একটা পোড়া মাংসের গন্ধ!
একজন শিক্ষার্থী চিৎকার দিয়ে দরজার দিকে দৌড় দিল, কিন্তু দরজা এমনভাবে আটকে গেল, যেন বাইরে থেকে কেউ চেপে ধরে রেখেছে!
আলো আবার জ্বলে উঠল।
কিন্তু এইবার কক্ষে একজন বেশি! সবার মাঝে, সবার মধ্যে, একটা ছায়া দাঁড়িয়ে আছে—উজ্জ্বল আলোয়, স্পষ্ট!
একজন মেয়ের অবয়ব, লম্বা কালো চুল, ফ্যাকাসে মুখ, রক্তাক্ত চোখ!
নাজফা রহমান!
সে ধীরে ধীরে ঠোঁট নাড়ল, কিন্তু কোনো শব্দ হলো না।
তারপর আচমকা এক বিকট হাসি!
"এখন আমি মুক্ত!"
আলো আবার নিভে গেল, জানালার কাঁচ চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে গেল!
আধঘণ্টা পর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নিরাপত্তারক্ষী এসে দেখে—অডিটোরিয়ামের দরজা ভাঙা, জানালার কাঁচ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে, কিন্তু ভেতরে কেউ নেই!
আমিন স্যার, শিক্ষার্থীরা—কেউই নেই!
শুধু মেঝেতে একটা লেখা আঁকা—৩:০৭!
কিন্তু সব থেকে ভয়ংকর ব্যাপার ছিল সিসিটিভির ফুটেজ!
তাতে দেখা গেল, ৩:০৭ মিনিটে সবাই ধোঁয়ার মতো মিলিয়ে যাচ্ছে, আর শেষ মুহূর্তে ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে এক নারীর বিকৃত হাসি!
নাজফা ফিরে এসেছে। এবার সে সত্যিই মুক্ত। কিন্তু কোথায়?
বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তারক্ষী হতবাক হয়ে সিসিটিভির ফুটেজের দিকে তাকিয়ে রইল। ঠান্ডা ঘাম তার কপাল বেয়ে গড়িয়ে পড়ছিল। সে তড়িঘড়ি করে প্রশাসনকে খবর দিল।
কয়েক ঘণ্টার মধ্যে পুলিশ এসে পৌঁছাল। পুরো অডিটোরিয়াম ঘিরে ফেলা হলো। তদন্ত শুরু হলো, কিন্তু কোনো দাগ, কোনো ক্লু, কিছুই নেই!
শুধু একটাই অদ্ভুত বিষয়—অডিটোরিয়ামের টেবিলের উপর খোদাই করা একটা বাক্য পাওয়া গেলঃ
"আমাদের খুঁজবে না, আমরাই আসবো!"
এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ে একের পর এক অদ্ভুত ঘটনা ঘটতে থাকল। গভীর রাতে করিডোরে পায়ের শব্দ, জানালার কাচে হাতের ছাপ, ফিসফিসে গলায় কান্নার শব্দ।
একজন ক্লিনার দাবি করল, সে স্পষ্ট দেখেছে আমিন স্যার করিডোর দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন! কিন্তু সমস্যা হলো, আমিন স্যার তো নিখোঁজ!
আর সবচেয়ে ভয়ের ব্যাপার?
বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ক্লাসরুমের বোর্ডে হঠাৎ একদিন চক দিয়ে লেখা পাওয়া গেল—
"৩:০৭ আবার আসবো!"
ইন্টার মিডিয়েট পরীক্ষা শেষ করে মেডিক্যাল ভর্তির প্রস্তুতি নিচ্ছেন রিহাত।
ছোটবেলায় পৃথিবীর বিখ্যাত হার না মানা বারবার ব্যর্থ হওয়া বিজ্ঞানীদের জীবনীগ্রন্থ পড়ে বিজ্ঞানী হওয়ার স্বপ্ন ছিল। তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন-আলোর কারিগর – এডিসনের ১০,০০০ ব্যর্থতাঃ
ঠান্ডা একটা সন্ধ্যা, এডিসনের ছোট্ট ল্যাবরেটরিতে কাজ চলছে। তাঁর চারপাশে পড়ে আছে শত শত ভাঙা ফিলামেন্ট, পোড়া বাল্ব, আর অগণিত হিসাবের কাগজ। সহকারীরা ক্লান্ত হয়ে বলল,— "স্যার, হাজারবার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হলেন, এবার কি থামবেন না?"এডিসন হাসলেন। চোখে ছিল জয়ের দৃঢ় সংকল্প।— "আমি ব্যর্থ হইনি। বরং ১০,০০০ উপায়ে শিখেছি, কীভাবে কাজ করতে হয়!"আরও কিছুদিন নিরলস পরিশ্রমের পর একদিন ঘরের ভেতর উজ্জ্বল হয়ে উঠল প্রথম বৈদ্যুতিক বাতি। সেদিন এডিসনের হাতে জ্বলেছিল শুধু একটি আলো নয়, সমগ্র পৃথিবীর ভবিষ্যৎ।
আইনস্টাইন – যে ছেলেটা স্কুলে ফেল করেছিলঃ
স্কুলের ছোট্ট ক্লাসরুমে বসে ছিল একটা ছেলেভোলা বালক। শিক্ষক রাগী কণ্ঠে বললেন,— "এই ছেলে কখনোই জীবনে কিছু করতে পারবে না। একেবারেই মনোযোগ নেই।"
বাড়িতে এসে ছেলেটা মাকে জিজ্ঞাসা করল,
— "মা, আমি কি সত্যিই বোকা?"মা আদর করে বললেন,— "না বাবা, তুমি আলাদা, তুমি অসাধারণ!" একদিন সেই 'মনোযোগহীন' ছেলেটা বিশ্বকে উপহার দিল আপেক্ষিকতা তত্ত্ব। তার নাম হলো আলবার্ট আইনস্টাইন, যিনি বিজ্ঞানের নতুন যুগের সূচনা করলেন।
ডারউইন – যে ডাক্তার হতে পারেনি, কিন্তু বিজ্ঞানী হলোঃ
এক তরুণ একসময় ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে মেডিকেল কলেজে ভর্তি হলো। কিন্তু রক্ত দেখলেই মাথা ঘুরে যেত! হতাশ হয়ে তিনি ডাক্তারি ছেড়ে দিলেন।— "তুমি ব্যর্থ হয়েছ," বলল পরিবার।— "নাহ, আমি ঠিক পথ খুঁজে পাইনি," বললেন তিনি। তিনি প্রকৃতির প্রেমে পড়লেন। দিনের পর দিন তিনি দ্বীপে ঘুরে ঘুরে জীবজগতের রহস্য আবিষ্কার করলেন। আর সেখান থেকেই জন্ম নিল বিবর্তন তত্ত্ব। এই ব্যর্থ ডাক্তারই পরে বিজ্ঞানী চার্লস ডারউইন হয়ে উঠলেন।
স্টিফেন হকিং – শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে জয়ঃ
২১ বছরের এক যুবক, স্টিফেন, একদিন জানতে পারল, সে এক ভয়ংকর রোগে আক্রান্ত, যা ধীরে ধীরে তাকে পঙ্গু করে দেবে। ডাক্তাররা বলল,— "আর বেশি দিন বাঁচবে না তুমি!"কিন্তু হকিং থামলেন না। হাত-পা নড়াতে না পারলেও, তাঁর মস্তিষ্ক ছিল অপ্রতিরোধ্য। তিনি মহাবিশ্বের গাণিতিক ভাষা বুঝলেন, ব্ল্যাক হোল নিয়ে গবেষণা করলেন, আর লিখলেন A Brief History of Time—যা বিশ্বজোড়া আলোড়ন তুলল।স্টিফেন হকিং বলেছিলেন,— "শরীর অসাড় হলেও, মনকে থামতে দিয়ো না।"
মারি কুরি – নারী বলে বাধা, তবুও জয়ীঃ
১৮৮০ সালের ইউরোপে নারীরা বিজ্ঞান পড়তে পারত না। কিন্তু মারি কুরি হার মানলেন না। পুরুষতান্ত্রিক সমাজ তাঁকে রুখতে চাইল, কিন্তু তিনি গবেষণা চালিয়ে গেলেন। দিনের পর দিন ল্যাবরেটরিতে থেকে তিনি একদিন রেডিয়াম ও পোলোনিয়ামের সন্ধান পেলেন। — "নারী বলে আমাকে থামিয়ে রাখা যাবে না!"তিনি প্রথম নারী হিসেবে নোবেল পুরস্কার পেলেন, তাও একবার নয়—দুইবার!
এই বিজ্ঞানীরা আমাদের শেখান—ব্যর্থতা মানেই শেষ নয়, বরং এটি সফলতার শুরু। তারা যদি হাল ছেড়ে দিতেন, তাহলে পৃথিবী হয়তো আজও অন্ধকারে থাকত। সফলতা শুধু মেধার নয়, অধ্যবসায়ের ফল।
কিন্তু তার গ্রাম ও দেশের অনেক দরিদ্র মানুষ সঠিক চিকিৎসার অভাবে মারা যাচ্ছিল। তাই তার মা ও বাবা চাই সে বড় হয়ে ডাক্তার হয়ে অসহায় মানুষের সেবা করবে। গবেষণা করে নতুন নতুন রোগের প্রতিষেধক তৈরি করবে। মা ও বাবার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করার জন্য সে গভীর রাত পর্যন্ত পড়াশোনা করে। আজ পড়তে পড়তে টেবিলে ঘুমিয়ে পড়েছিল। হঠাৎ মায়ের ডাকাডাকিতে সে দ্রুত বিছানা থেকে উঠে দরজা খুলল। মা চিন্তিত চোখে তাকিয়ে বললেন,
— "কি হয়েছে বাবা? দুঃস্বপ্ন দেখেছ?"
রিহাত কিছুক্ষণ চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকল। তার হৃদস্পন্দন এখনো স্বাভাবিক হয়নি। মাথার মধ্যে স্বপ্নের দৃশ্যগুলো একটার পর একটা ভেসে উঠছে—অন্ধকার করিডোর, একটা বন্ধ দরজা, দরজার ওপাশ থেকে আসা ফিসফিস শব্দ।
সে ধীরে বলল, "হ্যাঁ মা, খুব অদ্ভুত একটা স্বপ্ন দেখলাম।"
মা বিছানায় বসতে বললেন। মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন, "কী দেখলে বলো তো?"
রিহাত একটু গলা খাঁকারি দিয়ে "স্বপ্নে দেখা সবকিছু বললেন।
মা তার কপালে হাত রাখলেন, "দোয়া পড়ে ফু দিয়ে দিলেন। চিন্তা করো না, অনেক সময় বেশি পড়াশোনা করলে এমন দুঃস্বপ্ন দেখা যায়। যাও, একটু পানি খেয়ে এসো। আল্লাহর নাম নাও, ভয় কেটে যাবে।"
রিহাত উঠে গিয়ে পানি খেলো। কিন্তু তার মনে হলো, এই স্বপ্নটা স্রেফ দুঃস্বপ্ন নয়। এই স্বপ্নের পেছনে কিছু আছে। কিছু একটা রহস্য!
রিহাত পানি খেয়ে এসে আবার বিছানায় শুয়ে পড়ল, কিন্তু ঘুম আর আসছিল না। মাথার মধ্যে সেই স্বপ্ন ঘুরপাক খাচ্ছিল। সেই ভয়ংকর কণ্ঠস্বর এখনো তার কানে বাজছিল— সে ঘড়ির দিকে তাকাল—রাত ৩:০৭!
এই সময়টা কেমন যেন অস্বাভাবিক লাগল তার কাছে। কিছুক্ষণ বিছানায় এদিক-ওদিক গড়াগড়ি দেওয়ার পর সে উঠে বসলো। আলো জ্বালিয়ে টেবিলের দিকে তাকাতেই তার চোখ বিস্ফারিত হয়ে গেল!
তার বইয়ের উপর একটা ছোট্ট কাগজের টুকরো পড়ে আছে, যা সে কখনো দেখেনি! সে কাগজটা তুলে নিল। কাঁপা কাঁপা হাতে খুলতেই সেখানে লেখা—
"তোমাকে বেছে নেওয়া হয়েছে। প্রস্তুত হও!"
রিহাত হতভম্ব হয়ে গেল! কে এটা রেখে গেল? সে তো ঘুমিয়ে ছিল! দরজাও ভেতর থেকে বন্ধ ছিল! তাহলে এটা এল কোথা থেকে?তার মাথার মধ্যে হাজারটা প্রশ্ন ঘুরতে লাগল। কিন্তু সবচেয়ে বড় প্রশ্ন ছিল—
"বেছে নেওয়া হয়েছে" মানে কী? কিসের জন্য?"
=================
- লিঙ্ক পান
- X
- ইমেল
- অন্যান্য অ্যাপ
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন