Featured Post

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। ত্রয়োত্রিংশ সংখ্যা ।। জুন ২০২৪

ছবি
  প্রচ্ছদ-চিত্রঃ সুনীত নস্কর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা। সম্পাদকীয় কেমন আছো ছোট্ট বন্ধুরা। গরমের ছুটি তো শেষ হয়ে এল। স্কুল খুলে যাচ্ছে। কিন্তু গরমের দাবদাহ কিন্তু এতটুকু কমেনি। এই গরমে  খুবই সাবধানে নিয়ম মেনে চলতে হবে তোমাদের। এখন তো আম, জাম কাঁঠালের সময়। এখন এইসব মৌসুমী ফল খেতে হবে। তাহলে শরীর সুস্থ থাকবে। শরীর সুস্থ থাকলে মন সুস্থ থাকবে। মন সুস্থ থাকলে পড়াশুনো ভালো হবে।           আশাকরি এতদিন বাড়িতে থেকেই মন দিয়ে পড়াশুনো করেছ। সঙ্গে অনলাইন কিশলয়ের পাতায় চোখও রেখেছ। পড়াশুনোর পাশাপাশি গল্প লেখা, ছবি আঁকা ইত্যাদির শখও মনের মধ্যে লালন পালন করতে হবে তোমাদের। পড়াশুনোর চাপে সব ছেড়ে দিলেও চলবে না কিন্তু। স্কুলের পড়া, বাড়ির পড়ার পাশাপাশি গল্প- কবিতা লেখা, প্রবন্ধ লেখা, ছবি আঁকা ইত্যাদি চালিয়ে যাও। তোমাদের প্রতিভার বিকাশ হোক। তোমাদের সৃজনীসত্ত্বার প্রকাশ হোক তোমাদের সৃষ্টির মধ্য দিয়ে। আর সাথে সাথে তোমার সেই সৃষ্টি অনলাইন কিশলয়ে প্রকাশের জন্য পাঠিয়ে দাও। বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে থাকা বাকি বন্ধুরাও জানুক তোমার সৃষ্টি সম্পর্কে। আর কী? সবাই সুস্থ থাকো, ভালো থাকো, আনন্দে থাকো।   শুভকামনাসহ-- প্রিয়ব্রত দত্ত ও কার্

ছোটগল্প ।। কিশোর ভুতের গল্প ।। ছাত্র শঙ্কর ।। শাশ্বতী চ্যাটার্জী



ছাত্র শঙ্কর

শাশ্বতী চ্যাটার্জী


রাত রারোটায় স্টেশনে নামতেই ঝুপ করে লোডশেডিং হয়ে গেল।গাটা ছম ছম করে উঠলো আমার।জায়গাটা শুনেছি ভালো না।পুরুলিয়া আর ঝাড়খণ্ডের প্রায় সীমানায় অবস্থিত 'পুনদাগ' স্টেশন।পরিবহন ব্যবস্থা প্রায় কিছুই নেই।সারাদিন ঝালদা থেকে দু'তিন জোড়া প্যাসেঞ্জার ট্রেন যাতায়াত করে।সেই পুনদাগ স্টেশনের মাইল দুই দূরে অবস্থিত 'আনন্দনগর'।ওখানে একটা আবাসিক স্কুলের নিয়োগ পত্র নিয়ে অসীম চেপে বসে হাওড়া থেকে "ব্লাক ডায়মন্ড এক্সপ্রেসে"।ধানবাদে নেমে জানতে পারে ১০ মিনিটের মধ্যে ঝালদা যাওয়ার একটা প্যাসেঞ্জার ট্রেন আছে।কাঁধে সাইড ব্যাগটা ঝুলিয়ে হাতে ট্রলি সুটকেশটা নিয়ে প্লাটফর্ম চেঞ্জ করে গিয়ে ওঠে ঝালদা প্যাসেঞ্জারে।ঝালদা স্টেশনে যখন ট্রেন পৌঁছায় তখন সন্ধ্যা অতিক্রম করেছে।সেদিন ভূত চতুর্দশী আবার ওই তিথিতেই কালি পুজোও বটে।চারি দিকে অন্ধকার বেশ গাঢ় হয়ে উঠছে।পাখিরাও বাসায় ফিরেছে অনেক আগে।ট্রেনে তেমন ভিড় নেই।সামান্য কিছু ডেইলি প্যাসেঞ্জার আর ওই এলাকার কিছু আদিবাসী মানুষ।ট্রেন যথাসময়ে ছাড়লেও কোনো অজানা কারণে ট্রেন যায় দাঁড়িয়ে।দুটো স্টেশনের মধ্যবর্তী এক অজানা জায়গায় ঘন অন্ধকারে ট্রেন দাঁড়িয়ে আছে।ইতিমধ্যে যাত্রীরাও কয়েকজন আগের স্টেশনে নেমে পড়েছে।অসীম ভীষণ ক্লান্ত,খুব খিদেও পেয়েছে।প্রায় ফাঁকা বগিতে বসে বসে কখন যে ও ঘুমিয়ে পড়েছে,তা ও জানেও না।এক সহযাত্রী একটু ধাক্কা দিয়ে অসীমকে জানায় ঝালদা চলে এসেছে।সম্বিৎ ফেরে অসীমের।ঘড়িতে দেখে রাত প্রায় ন'টা।ট্রেন থেকে নামতে নামতে শুনতে পায় পাশের প্লাটফর্মে দাঁড়িয়ে থাকা লাল কয়লা বাহিত গাড়িটা পুনদাগ যাবে।অসীম দ্রুত ওই গাড়ির প্রথম বগিতে উঠে পড়ে।ট্রেনও দেয় ছেড়ে।যেন অসীমের জন্যই ট্রেনটা অপেক্ষা করছিল।
    ঝালদা প্যাসেঞ্জারে তবু কিছু যাত্রী ছিলো, কিন্তু এই লাল প্যাসেঞ্জার ট্রেনে ওই বগিতে ও ছাড়া আর মাত্র সাত-আটজন আদিবাসী মানুষ নীচে বসে ঢুলছে।অসীম ব্যাগ পাশে রেখে জানলার পাশে বসে।বাইরে থেকে বেশ ঠান্ডা হাওয়া আসছে।অসীম ব্যাগ থেকে মাফলার বের করে মাথায় জড়িয়ে নেয়।দুপুরে ট্রেনে কিছু খেয়েছিল।তারপর আর কিছু খাওয়া হয় নি।খিদেতে ওর বমি আসছে।ওর কিছু খাওয়া দরকার।এমন সময় পরের স্টেশনে ট্রেন দাঁড়িয়ে যায়।অসীম দেখে স্টেশনের নাম 'ঝুলন স্টেশন'।অসীম কিছু খাবারের খোঁজে কাঁধে সাইড ব্যাগ ঝুলিয়ে প্লাটফর্মে নেমে পড়ে।
   অসীম এমন স্টেশন  কোনোদিন দেখে নি!স্টেশনে কোনো বিদ্যুৎ নেই। প্লাটফর্মের শেষে একটি বড়ো ঘর।সম্ভবত ওটাই টিকিট ঘর,অফিস ঘর আবার স্টেশন মাস্টারের থাকারও ঘর।ওখানে একটা হালকা হ্যাজকের আলো।আর সমস্ত প্লাটফর্ম একেবারে অন্ধকার।চোখটা একটু ধাতস্থ হতেই অসীম দেখে যেখানে ও নেমেছে,ঠিক সেখানেই আছে একটা চায়ের দোকান।টিম টিম করে একটা হ্যারিকেন জ্বলছে।অসীম দোকানে গিয়ে বলে -
   চা হবে নাকি?
অসীম দেখে দোকানে একটা ধবধবে হাফ শার্ট আর ততোধিক সাদা হাফ প্যান্ট পরা একটা ছেলে টুলের উপর বসে ঢুলছে।অসীমের কথায় তাকিয়ে বলে ,
    - নিশ্চই হবে।আপনি বসুন।চায়ের সঙ্গে আর কিছু দেবো নাকি?
  - তুমি এতো ছোট বয়সে দোকান করছ?তোমার পোশাক দেখে তো মনে হচ্ছে তুমি কোনো স্কুলে পড়?
   - ও কথা থাক স্যার।চায়ের সঙ্গে আপনাকে আর কিছু দেবো।এখানে পাঁউরুটি আলুর দমও পাওয়া যায়।
 - না না পাঁউরুটি আমার সহ্য হয় না।
   - আটার রুটিও করে দিতে পারি।আটা মাখাই আছে।
   - না না আমার দেরি হয়ে যাবে।এই ট্রেনেই আমাকে যেতে হবে।
   - আপনি তো পুনদাগে আনন্দনগরে যাবেন।
   - তুমি কি করে জানলে?
   - আমি সবই জানি।
   - আজ আর পুনদাগে যাবেন না।আজ ভূত চতুর্দশী।অমাবস্যা।ঘোর অন্ধকার।ওখানে পৌঁছাতে পৌঁছাতে রাত এগারোটা বেজে যাবে।ওখানে গিয়ে আপনি রিকশা বা ভ্যান কিছুই পাবেন না।
   - না না আমাকে যেতেই হবে।
   - বলছি তো আজ ওখানে যাবেন না।
 অসীম যেন ছেলেটার গলায় একটা আদেশের সুর শুনতে পায়।অবাক হয়ে তাকিয়ে দেখে।ছেলেটা আরো গম্ভীর হয়ে বলে,
   - আজ এখানেই থেকে যান।পুনদাগ স্টেশনে থাকার কোনো জায়গা পাবেন না।
  - না, বললাম তো আমাকে যেতেই হবে।
চায়ের জল ফুটে গেছে।ছেলেটা গ্লাসে দুধ দিয়ে ছাঁকনিতে চা পাতা ঢালছেন।এমন সময় ট্রেনের হুইসেল বেজে ওঠে।অসীম বলে ,
   - আমার আর চা খাওয়া হলো না।
   - চা না খেয়ে আপনি যেতে পারবেন না।আপনার কথাতেই চা বানিয়েছি।
   - তোমাকে আমি চায়ের দাম দিয়ে দিচ্ছি।
বলেই অসীম পকেটে হাত দিয়ে দেখে কোনো খুচর পয়সা নেই।অথচ ওর স্পষ্ট মনে আছে ওর পকেটে  অনেকগুলো খুচর কয়েন ছিলো।ট্রেনের গতি বাড়ছে।অসীম প্যান্টের পিছনের পকেটে হাত দিয়ে দেখে মানিব্যাগ নেই।ওর শিরদাঁড়া দিয়ে একটা শীতল স্রোত নেমে আসে।অসীম নামার সময়ও লক্ষ করেছে,ওর ব্যাক পকেটে মানিব্যাগটা আছে।ট্রেনের গতি আরো বেড়ে যায়।অসীম ট্রেনের দিকে যেতে যেতে বলে ,
   - তোমার চায়ের দামটা দু'এক দিনের মধ্যে এসে দিয়ে যাবো।
অসীম ট্রেনের দিকে দৌড়াচ্ছে।কিন্তু একটুও এগোতে পারছে না।কে যেন পিছন দিয়ে ওর জামাটা টেনে ধরেছে।অসীম ভাবছে,ছেলেটা  তো দশ এগারো ফুট দূরে ।তাহলে কে ওর জামা ধরে টানছে!!তখনও ছেলেটা বলছে,
   - ওই ট্রেনে গেলে আর কোনো দিন আমি চায়ের দাম পাবো না।
ট্রেনের গতি যায় বেড়ে।অসীম এক পাও এগোতে পারে না।ওর চোখের সামনে দিয়ে দুরন্ত গতিতে ট্রেনটি প্লাটফর্ম ছেড়ে বের হয়ে যায়।অসীম কপালে হাত দেয়।ওর ট্রলি ব্যাগটাও ট্রেনে রয়ে গেছে।
   - সকালের প্রথম সূর্যের আলো যখন ওর মুখে এসে পড়েছে তখন চোখ মেলে অসীম দেখে ওর সামনে কালো কোট পরা এক ভদ্রলোক দাঁড়িয়ে ওকে বলছে ,
   - ও মশাই,উঠে পড়ুন।সকাল হয়ে গেছে।কাল তো আপনাকে দেখলাম ঝালদা প্যাসেঞ্জার থেকে নেমে এখানে বসলেন,পরে আর বাড়ি যান নি?আপনি কোথায় যাবেন?
   - অসীম থতমত খেয়ে উঠে বসে।বলে ,স্যার আপনি ?
  - আমি এই স্টেশনের স্টেশন মাস্টার।
  - আমি যাব তো পুনদাগ।কাল ট্রেন দাঁড়াতে আমি একটু চা খেতে নেমেছিলাম।
  - তার মানে আপনি ওই ট্রেনে আর ওঠেন নি!আপনি তো ভাগ্যবান মশাই।ওই ট্রেন পুনদাগ ঢোকার আগেই একটা মাল গাড়ির সঙ্গে মুখোমুখি ধাক্কা মারে।মাল গাড়ির শুধু ড্রাইভার মারা যায়।কিন্তু ঝালদা প্যাসেঞ্জার সম্পর্কে যা শোনা যাচ্ছে,তাতে মনে হয় ড্রাইভার সহ ১৮/১৯ জন মারা গেছে।প্রথম দুটো বগি একেবারে দুমড়ে গেছে।
    বিস্ময়ে হতবাক হয়ে অসীম বলে,
   - কাল এই চায়ের দোকানের ছোট্ট ছেলেটা আমাকে কিছুতেই যেতে দিলো না।
   বলে যেই চায়ের দোকানের দিকে ফিরে দেখে ,কোথায় দোকান!পুরো প্লাটফর্মটাই ফাঁকা।কয়েকটা বড়ো গাছ ছাড়া আর কিছু নেই।স্টেশন মাস্টার বলেন,
   - এই ঝুলন স্টেশনে আবার চায়ের দোকান কোথায়?সারা দিনে প্যাসেঞ্জার তো হাতে গোনা কয়েকজন।সবাই এই অঞ্চলের আদিবাসী।তারা চা খায় না।তাছাড়া এই স্টেশনে কোনো দিন কোনো দোকান ছিল না।ওটা আপনার মনের ভুল।
   - কিন্তু আমি যে দেখলাম।আমার সাথে কথা হলো!
   - ও সব ছাড়ুন।আজ ওই ভাঙা দুটো গাড়ি সরিয়ে কখন ট্রেন ছাড়বে তার ঠিক নেই।এখান থেকে মাইল চারেক দূরে বড়ো রাস্তা।একটা বাস সার্ভিস আছে।ওদের প্রথম বাসটা আসে সকাল আটটা নাগাদ।এখনই বেরিয়ে পড়ুন।ওই বাসটা পেয়ে যাবেন।
   - আমার যে লাগেজ ছিল ট্রেনে।ওটার কি হবে?
   - ওই লাগেজে আপনার নাম,ঠিকানা ইত্যাদি কিছু লেখা ছিল?
   - না ওসব কিছু লিখি নি।
   - তাহলে পাওয়ার সম্ভাবনা কম।তাছাড়া আপনি তো প্রথম বগিতে ছিলেন।ওই ব্যাগ কি আর অক্ষত আছে?
   সকাল আটটার প্রথম বাসে করে অসীম পুনদাগে  গিয়ে নামে।নামতেই একটা ভ্যান রিকশা পেয়ে যায়।ও যখন আনন্দনগরে স্কুলে গিয়ে পৌঁছায় তখন প্রায় বেলা এগারোটা।স্কুলের গেটের সামনে দু'চারজন মানুষ।অসীম সাইড ব্যাগ থেকে নিয়োগ পত্রটা বের করতেই একজন এগিয়ে এসে বলে,
    - আপনি কি অসীম রায়?
    - হ্যাঁ।
    - আসুন।আমি বিকাশ মাইতি।এই স্কুলেই পড়াই।
    - আজ তো ছুটি।তাহলে স্কুলে এতো ভিড় কেন?
    - আমাদের এক প্রিয় ছাত্র গতবছর এই কালি পূজার দিন একটা দুর্ঘটনায় মারা যান।ও আমাদের হেড মাস্টারের ছেলে ছিল।খুব ভালো ছাত্র।তার আত্মার শান্তি কামনায় আমরা স্কুলের কয়েকজন শিক্ষক,স্থানীয় দু'একজন মানুষ আর পঞ্চায়েত প্রধান এসেছেন।চলুন, ভেতরে চলুন।
ভেতরে গিয়ে অসীম দেখে আরও কয়েক জন ছড়িয়ে ছিটিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।বিকাশ মাইতি সবার সাথে অসীমের পরিচয় করিয়ে দেয়।পঞ্চায়েত প্রধান বলেন,
   - শঙ্কর ছিল আমাদের সকলের খুব প্রিয়।আমাদের হেড মাস্টারের ছেলে। বলতে  বলতেই হেড মাস্টার বিমর্ষ মুখে প্রবেশ করেন।সবাই মিলে টেবিলের দিকে এগিয়ে যান।টেবিলে রাখা ফটোটার দিকে অসীম তাকিয়ে দেখে বিস্মিত হয়ে যায়।ঠিক তখনই বিকাশ মাইতি সবার উদ্দেশ্যে বলেন,
   - এখন আমাদের প্রিয় প্রাক্তন ছাত্র শঙ্করের ছবিতে মাল্যদান করবেন আমাদের মাননীয় পঞ্চায়েত প্রধান।
    আর কোনো কথাই অসীমের কানে যায় না।ও মাথায় হাত দিয়ে একটা বেঞ্চে বসে পড়ে।মিনিট পনেরো কুড়ির মধ্যে অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পরে বিকাশ বাবু এসে আসীমকে বলেন ,
   - আপনার কি শরীর খারাপ লাগছে?একটু জল খাবেন?
 জল খেয়ে একটু সুস্থ বোধ করলে পঞ্চায়েত প্রধানের প্রশ্নের উত্তরে অসীম বলে,
   - কাল ঝালদা স্টেশনের পরে 'ঝুলন স্টেশনে' নেমেছিলাম একটু চা খাওয়ার জন্য।ওখানে চায়ের দোকানে যে ছোটো ছেলেটি ছিল সে কিছুতেই আমাকে ঝালদা লোকালে উঠতে দেয় নি।নানা কথা বলে আটকে দিয়েছে।
   - গতকাল রাতের ঝালদা প্যাসেঞ্জারে তো ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা ঘটেছে।বহু মানুষ মারা গেছে।যে খবর পেয়েছি,প্রথম দু'টো বগি নাকি একেবারে থেতলে গেছে।
   - হ্যাঁ,আমিও শুনেছি।সেই প্রথম বগিতেই আমি ছিলাম।
   - আপনি তো নতুন জীবন পেয়েছেন!!
   - তা তো নিশ্চই।কিন্তু অবাক করা কান্ড হলো চায়ের দোকানের যে বাচ্চা ছেলেটা আমাকে আটকে দিয়েছিল,কিছুতেই ঝালদা লোকালে উঠতে দেয় নি - - - 
অসীমের কথা শেষ করতে না দিয়েই পঞ্চায়েত প্রধান বলেন,
   - ঝুলন স্টেশনে তো কোনো চায়ের দোকান নেই?
   - বিস্ময় তো ওখানেই! ঝুলনের স্টেশন মাস্টার আমাকে সে কথা জানিয়েছেন।কিন্তু আরো বিস্ময়ের ব্যাপার, যে ছেলেটা আমাকে কিছুতেই ট্রেনে উঠতে দেয় নি,সেই ছেলেটি আসলে এই শঙ্কর -- যাকে আপনারা আজ মালা পরালেন।
    ঠিক তখনই শঙ্করের বাবা এসে পাশে দাঁড়িয়ে বলেন,
   - এই স্কুল ছিলো শঙ্করের প্রাণের থেকেও প্রিয়।ও ওদের স্কুলের মাস্টার মশাইকে বাঁচিয়ে দিলেন।
ওদের কথা শেষ হতেই এক ভ্যান ওয়ালা অসীমের বড়ো ব্যাগটা এনে হেড স্যারকে বললেন -
   - পুনদাগ স্টেশন থেকে একটা ছোট ছেলে এই ব্যাগটা দিয়ে বলেছে,- আপনাদের স্কুলে পৌঁছে দিতে।
   আরো বিস্ময় মাখা মুখে অসীম বলে,- ব্যাগটা আমার।কাল ঝালদা প্যাসেঞ্জারের প্রথম বগিতে রেখে আমি চা খেতে নেমেছিলাম।
   অদূরে ছোটো পাহাড়টার দিকে তাকিয়ে অসীমের চোখ দিয়ে কয়েক ফোঁটা নোনা জলে গড়িয়ে পড়ে।
__________________________________________________________________________________________
                
 
   

নাম :শাশ্বতী চ্যাটার্জি
ঠিকানা :৭৩০ বি টি রোড, কলকাতা ১১৪
 [ছবি: ইন্টারনেট মাধ্যম থেকে সংগৃহীত]

মন্তব্যসমূহ

সপ্তাহের পছন্দ

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। ত্রয়োত্রিংশ সংখ্যা ।। জুন ২০২৪

ছোটোদের আঁকা ।। মনামি মন্ডল, রায়সী চক্রবর্তী ও নিশান্তিকা নস্কর।

ছড়া ।। একটা খুশি ।। তীর্থঙ্কর সুমিত

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 32nd issue: May 2024

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। কিশলয় - ১২ ।। সেপ্টেম্বর ২০২২

ধারাবাহিক উপন্যাস ।। তিতলির বিশ্বভ্রমণ ।। ডাঃ অরুণ চট্টোপাধ্যায়

ছড়া ।। ও জোনাকি ।। কান্তিলাল দাস

দুটি ছড়া ।। গোবিন্দ মোদক

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। আত্মপ্রকাশ সংখ্যা ।। অক্টোবর ২০২১

মাসের পছন্দ

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। ত্রয়োত্রিংশ সংখ্যা ।। জুন ২০২৪

কবিতা || মর্যাদা || অবশেষ দাস

ছোটোদের আঁকা ।। মনামি মন্ডল, রায়সী চক্রবর্তী ও নিশান্তিকা নস্কর।

নিবন্ধ ।। কোনারক মন্দিরের ভয়াবহতা ।। সুজয় সাহা

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 32nd issue: May 2024

ছোটর কলম ।। বইপড়া ।। উন্নীত কর্মকার

গল্প ।। রবীন্দ্রজয়ন্তী ।। কুহেলী ব্যানার্জী

ছড়া ।। একটা খুশি ।। তীর্থঙ্কর সুমিত

অণুগল্প ।। পুরস্কার ।। চন্দন দাশগুপ্ত

বছরের পছন্দ

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। ত্রয়োত্রিংশ সংখ্যা ।। জুন ২০২৪

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচীপত্র ।। 29th Issue: February

প্রচ্ছদ ও সূচীপত্র ।। 24th issue: September 2023

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 31st issue: April 2024

প্রচ্ছদ ও সূচীপত্র ।। 25th issue: October 2023

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 32nd issue: May 2024

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 30th issue : March 2024

প্রচ্ছদ ও সূচীপত্র ।। 23rd issue: August 2023

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচীপত্র ।। 26th issue: November 2023

অতি প্রিয়

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। আত্মপ্রকাশ সংখ্যা ।। অক্টোবর ২০২১

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। দ্বিতীয় সংখ্যা ।। নভেম্বর ২০২১

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 4th issue: January 2022,

নিবন্ধ ।। শিশু-কিশোর সাহিত্যবলয়ে শিশুরাই যেন ব্রাত‍্য না থাকে ।। অরবিন্দ পুরকাইত

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 7th issue: April 2022

নিবন্ধ ।। দেশীয় উদ্ভিদ কেন গুরুত্বপূর্ণ ? ।। ডঃ চিত্তরঞ্জন দাস

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। কিশলয় - ১০ ।। জুলাই ২০২২

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। কিশলয় - ১১ ।। আগস্ট ২০২২

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র : 8th issue: May 2022

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। কিশলয় - ১২ ।। সেপ্টেম্বর ২০২২