Featured Post
ছোটগল্প ।। পবনপুত্রের কীর্তিকলাপ ।। বাণীব্রত গোস্বামী
- লিঙ্ক পান
- X
- ইমেল
- অন্যান্য অ্যাপ
পবনপুত্রের কীর্তিকলাপ
বাণীব্রত গোস্বামী
বাঘ, সিংহ, হাতি, ঘোড়া; এইসব কোনও পশু'র সাথে 'আমি' শব্দটা যোগ হয়নি। শুধু বাঁদরের পাশেই 'আমি' শব্দটা বসেছে। শুধু যে বসেছে তা-ই নয়, বাংলা অভিধানের শব্দভান্ডারে একটা নতুন অর্থবহ শব্দের যোগান দিয়েছে। সেই শব্দটি হল 'বাঁদরামি'। সবচেয়ে মজার ব্যাপার, 'বাঁদর' এই শব্দটি একমাত্র বিশেষণ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। আর বাকি সব পশুই বিশেষ্য। শুধু তাই নয়; বিধাতার সর্বশ্রেষ্ঠ জীব
মানুষের আগে আবার সেই বিশেষণ ব্যবহার হয়। সেই 'বাঁদর' শব্দ থেকেই এই 'বাঁদরামি' শব্দের উৎপত্তি। আর এই শব্দ যত না বাঁদরের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়েছে, তার থেকে বেশি ব্যবহার হয় মানবশিশুর বর্ণনায়। এ বড় অপমানের। কিন্তু কেন? কী কারণে এই বহুল প্রচলিত ব্যবহার! তার কিছু উদাহরণের গল্পই আজ বলব। তার থেকেই বোঝা যাবে কেন এই শব্দের ভেতর এত তিরস্কার লুকিয়ে থাকে ছোটদের কপালে? এর মূল কারণ, মানুষের দীর্ঘদিনের তিক্ত অভিজ্ঞতা লুকিয়ে আছে, বাঁদর অর্থাৎ আমাদের পূর্বপুরুষদের কিছু সাংঘাতিক ক্রিয়াকর্মে। হ্যাঁ; একটা একটা করে সেটাই আজকে বলব।
আমাদের ছোটবেলা; বেড়ে ওঠা চন্দননগরে। গঙ্গার ধারে আমাদের বাড়ি। বেশ বড় দোতালা বাড়ি। সেকেলে গড়ন। বাড়ির মাঝখানে দুটো উঠোন। চারপাশে ঘর। একদিকে ঠাকুরবাড়ি। পিছনে বাগান। বাগানে নানা ফলের গাছ। আম, জাম, কাঁঠাল। আর ছিল বিশাল এক জামরুল গাছ। এইসব বড় বড় গাছের নীচে কলাবাগান। আমরা এই জঙ্গলে ভাইবোনেরা লুকোচুরি খেলতাম। তবে একটা ভয় ছিল। সেটা হল হনুমানের। এদিকে লালমুখো হনুমান খুব একটা দেখা যায় না। বাগানে আসত মুখপোড়া বীর হনুমানের দল। দাঁড়ালে, মানুষের থেকে লম্বা। আর ছিল তাদের বিশাল লেজ। দল বেঁধে বাচ্চাকাচ্চা নিয়ে আমাদের বাগানে আক্রমণ করতো। যতক্ষণ খুশি নানা জাতের ফল পেট ভরে খেয়ে, হুপ্ হুপ্ করতে করতে আবার সব গঙ্গার ধারের জঙ্গলের দিকে পালিয়ে যেত। কিছুদিন আগে বড়দির বিয়ে হয়ে গেছে। মেজদি সে'বছর মাধ্যমিক দিয়েছে। ঘটল এক সাংঘাতিক ঘটনা! মেজদির ছিল খুব সাজগোজের ঝোঁক। সারাদিন বসে বসে মুখে লাউ, পেঁপে, কতরকমের ডাল, ব্যাসন, সব বেটে লাগাত। তারপর দোতালার ঘরে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে শুরু হত তার প্রসাধন। কত রকমের জিনিস, আর কতই বা তাদের রঙের বাহার, তার কোন হিসেব নেই। কিন্তু একটা জিনিস খেয়াল করে নি কোনদিন। ওর সেই সাজের ঘটা গাছের ডালে বসে অনেকদিন ধরেই লক্ষ্য করছিল হনুমানের দল। একদিন হল কী! দেখা গেল একদল হনুমান ওর সাজের ঘরে ঢুকে সব সাজের জিনিস খুলে, খুব করে মুখে মাখছে। ওদের মধ্যে কেউ কেউ আবার কপালে টিপ-ও পরেছে। সারা ঘরে পাউডারের ছড়াছড়ি। সারামুখে পাউডার মেখে, অনেকগুলো বীর হনুমানই ভূত সেজেছে। মেজদির ঘরে সব মজা করে নৃত্য করে বেড়াচ্ছে। মেজদি সিঁড়ি দিয়ে দোতালায় উঠতে উঠতে চিৎকার করে উঠল। মেজদির গলা পেয়ে, একটা বীর হনুমান সিঁড়ির সামনে বারান্দায় এসে দাঁড়াল। হাতে মায়ের সিঁদুরের কৌটো। মেজদি'র সামনে এসে মাথায় সিঁদুর কৌটোটা উল্টে দিল। মেজদি হাঁউমাউ করে কেঁদে উঠলো। হঠাৎ দিদির গালে সপাটে চড় কসাল হনুমানটা। ছোটকা মেজদির আর্তনাদ শুনে দৌড়ল লাঠি নিয়ে। বেশ খানিকটা লড়াই করে অবশেষে মেজদিকে উদ্ধার করল। মেজদির সারা চোখেমুখে আতঙ্ক। আমরাও বেশ ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। দাদু শুধু হেসে বলেছিল, " দিদিভাই, সারাদিন এত সেজেগুজে, শেষে কীনা হনুমান বর জুটল!"
মেজদি খুব রেগে গিয়েছিল। তবে জীবনে আর কোনদিন জানলা খুলে সাজেনি। জীবনের মত শিক্ষা হয়ে গিয়েছিল। তারপর থেকে বাগানে হনুমান এলে, আমরা মাঝেমধ্যে মেজদিকে খ্যাপাতাম, " ঐ দ্যাখ জামাইবাবু এসেছে!" মেজদি রেগে গিয়েও সেই 'বাঁদরের বউ' বদনাম থেকে বেরতে পারত না, ভুল করে চিৎকার করে ফেলত, "মা, ঐ দ্যাখো আবার ভাই বাঁদরামো শুরু করেছে।" আমরা হাসতাম। কিন্তু সে হাসি বেশিদিন টেঁকেনি। আমি নিজেও একদিন পড়লাম সেই বাঁদরের খপ্পরে।
ছোটকা তখন সবে নতুন কম্পিউটার কিনেছে। সেই পুরোনো দিনের কম্পিউটার। বড় মনিটর। সাদা-কালো ছবি। তবু আমাদের যাবতীয় লোভ ঐ মেশিনের ওপর। কম্পিউটারে গেম খেলাটা সবার আগে রপ্ত করেছিলাম। সুযোগ পেলেই গেম নিয়ে বসে যেতাম। তার মধ্যে সবচেয়ে আকর্ষণীয় ছিল জঙ্গলের একটা গেম। সেসব এখন পাওয়া যায় না। এখন অনেক সব উন্নত এবং ভয়ঙ্কর গেম এসে গেছে। তখন ওসব ছিল না। আমরা অল্পেই খুশি ছিলাম। বন্দুক দিয়ে জঙ্গলের ভেতর হিংস্র পশু আর দুষ্টু লোক মারা। একদিন গরমের দুপুর। মা, কাকিমা, জেঠিমা সব সারাদিনের কাজের শেষে শুয়েছে। আমি আর বিট্টু, মানে আমার খুড়তুতো ভাই নীচের ঘরে গরমের ছুটির হোম-ওয়ার্ক করছি। হঠাৎ বিট্টু আমায় বুদ্ধি দিল, "মেজদা, ছোটকা নেই, তুই কম্পিউটার খুলতে পারবি?"
আমি বললাম, "কেন?"
--- "চল্ না, দু'জনে গেম খেলি, সবাই তো ঘুমোচ্ছে।"
আমিও রাজি হয়ে গেলাম বিট্টুর কথায়। কুবুদ্ধি সবারই ভালো লাগে। পা টিপে টিপে ছোটকার ঘরে গিয়ে দেখি চক্ষুচড়কগাছ! দূর থেকে এক ঝলকে মনে হল যেন ছোটকা বসে আছে। শুধু একটা বড় ল্যাজ ঝুলছে চেয়ারের পাশ দিয়ে। হনুমানটা চেয়ারে বসে মন দিয়ে কি-বোর্ডে ঠুকঠাক করছে। এই দেখে আমাদের তো আত্মারাম খাঁচা। দৌড়ে পালাতে যাব। দেখি দরজার কাছে আর এক মূর্তিমান। বিশাল বীর হনুমান দাঁত-মুখ খিঁচিয়ে দরজা আটকে দাঁড়িয়ে। আমাদের গলা দিয়ে কোন আওয়াজ বেরোচ্ছে না। আসল বাঁদরামি'র কাছে আমাদের বাঁদরামি জব্দ। সেদিন যদি কিছুক্ষণের মধ্যে মা কাকিমারা উঠে না আসত আমাদের দূর্গতির সীমা ছিল না। তবে এই ঘটনার পর আমরা মানে, সব ভাইবোনেরা হনুমানের ভয়ে সিঁটিয়ে থাকতাম। এইভাবেই মাস ছয়েক কেটে গেল। একটা লঙ্কাকান্ড ঘটল কালীপুজোর পর।
ভাইফোঁটায় এসে হাজির হল আমার ছোটমামা। গ্ৰামের ছেলে। দেবীপুরে থাকে। সব ব্যাপারেই একটা 'গাঁয়ে মানে না আপনি মোড়ল' ভাব। তবে এখন যা-ই বলি। তখন কিন্তু ছোটমামা আমাদের চোখে হিরো। আমরা সব ছোটমামার স্যাঙাৎ ছিলাম। হনুমানের সব কান্ডকারখানার গল্পই ছোটমামাকে বললাম। মামা সব শুনে ফুঁ দিয়ে উড়িয়ে দিল। আমাদের সাহস দিয়ে বলল, "শোন, বুদ্ধি দিয়ে কত দুষ্টু লোককে সায়েস্তা করলাম, আর এতো হনুমান! দুদিনে সব টাইট করে দেব। কিচ্ছু ভাবিস না।"
আমরাও ভরসা পেলাম। ভাবলাম দুঃখের দিন বোধহয় শেষ হল। আবার দুপুরে বাগানে খেলা যাবে। শুরু হয়ে গেল আমাদের প্রস্তুতি। গাছের ডাল কেটে গুলতি বানানো হল। ঠিক হল বাগানে হনুমান এলেই গুলতি দিয়ে তাড়ানো হবে। আক্রমণই নাকি প্রতিরক্ষার একমাত্র উপায়। বাবা কাকা সবাই ছোটমামাকে বলল, "রঘুনাথ, কাজটা কি ঠিক হবে? ওরা যদি আরও বেশি ক্ষেপে যায়!"
--- "আরে…, মগের মুল্লুক নাকি? মানুষ হয়ে হনুমানের ভয়ে হাত গুটিয়ে, মুখ লুকিয়ে ঘরে বসে থাকব?"
কী আর বলবে! শালাবাবু বলে কথা। শান্ত হয়ে বলল, "ঠিক আছে, যা ভালো বোঝো; কর।"
পরদিন সকালে একপাল হনুমান জামরুল গাছে এসে হাজির হল। ছোটমামাও গুলতি নিয়ে রেডি। গুলতি দিয়ে পাথর বৃষ্টি শুরু হল হনুমানের ওপর। কয়েকটা হনুমান বেশ আহত হল। এবার কিন্তু জ্যাঠামশাই খুব রেগে গেলেন। বললেন, "কাজটা কিন্তু ঠিক হল না। অবলা প্রাণী। আমরা যদি ওদের গাছের ফল খেতে বাধা দিই। ওরা খাবে কি? প্রকৃতি, পৃথিবী-টা তো মানুষের একার নয়। সবারই বেঁচে থাকার সমান অধিকার আছে। না না রঘুনাথ, কাজটা তুমি ঠিক করনি।"
যাক সেদিন তো সব হনুমান পালিয়ে গেল।
পরদিন সকালে উঠে দেখা গেল, বারান্দার সিঁড়ির মুখে, যেখানে সবার জুতো থাকে, শুধু ছোটমামার জুতোটা নেই। কী অদ্ভুত ব্যাপার! জুতোটা কোথায় গেল? অনেকেই অনুমান করল, হনুমানে নিয়ে গেছে। ওটা যে ছোটমামার জুতো, সেটা হনুমান চিনল কী করে! এবার ছোটমামা বাড়ি যাবে কী করে? তার ওপর পুজোর নতুন জুতো। খুব মন খারাপ। অগত্যা বাবার একটা পুরনো হাওয়াই চটি পরেই বাড়ি ফিরে গল। যাওয়ার সময় একে জুতোর দুঃখ, তার ওপর হনুমানের কাছে হার স্বীকার এবং সর্বোপরি আমাদের কাছে সম্মানহানি। সব মিলিয়ে বাঁদরের বাঁদরামির জয় হল।
তবুও যে ঘটনাটা না বললে এই হনুমানের গল্প বলা সম্পূর্ণ হবে না, সেটাই এখন বলব। যেটা আগের গল্পগুলোর থেকে অনেক বেশি রোমহর্ষক। চন্দননগর ছেড়ে কোলকাতা চলে আসার আগে সেই ঘটনা আমার মনে একটা গভীর দাগ কেটে দিয়েছিল। একটু আগে থেকেই শুরু করছি।
সেদিনের সেই গুলতি আক্রমণে খুব সম্ভবত ওদের দলের কোন বাচ্ছা আহত হয়েছিল। ঘটনাটা আমরা স্বভাবতই ভুলে গিয়েছিলাম। কিন্তু পশুরা সহজে এইসব আঘাত ভোলে না। তার ফল হাড়ে হাড়ে টের পেলাম জঘদ্ধাত্রী পুজোর সময়। চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী পুজো খুবই বিখ্যাত। সব বাড়িতেই আত্মীয়-স্বজন এসে হাজির হয়। আমাদের বাড়িও লোকজনে গমগম করছে। সবচেয়ে মজার ব্যাপার বড়দি এসেছে পুচকু-কে নিয়ে। পুচকু আমার ভাগ্নে। তখনও মুখে ভাত হয়নি। ক্লাস 'এইটে'ই আমি মামা হয়ে গেলাম। এটা ভেবে নিজেকে বেশ বড় বড় লাগত। মা কাকিমা সবার কোলে কোলে আদর খাচ্ছে আর ঘুরছে পুচকু। সারাদিন খুব আনন্দে কাটছিল সবার।
সেবার জগদ্ধাত্রী পুজো পড়েছিল অঘ্রাণের মাঝামাঝি। আমাদের এদিকে, বিশেষ করে এইসব মফঃস্বল শহরে এইসময় হালকা ঠান্ডার আমেজ চলে আসে। যেহেতু আমাদের বাড়ি গঙ্গার ধারে শীত এখানে আগেই চলে আসত। সেদিন ছিল এক মোলায়েম ঠান্ডার সকাল। আমার মা, মানে পুচকুর দিদিমা পুচকুকে ভালো করে তেল মাখিয়ে বারান্দায় হালকা রোদে শুইয়ে দিল। আমরা সবাই খুব হৈ হৈ করছি। এখানে জগদ্ধাত্রী পুজো, কোলকাতার দুর্গাপুজোর মত চারদিনের। সেদিন মহাসপ্তমী। আমাদের বাড়িতেও যেহেতু পুজো হয়, তাই আনন্দ একদম তুঙ্গে। হঠাৎ বিনা মেঘে বজ্রপাত। পুচকুর বিছানা ফাঁকা। পুচকু নেই! আশেপাশে কোথ্থাও নেই। কারও কোলে নেই। চারিদিকে খোঁজ খোঁজ। কোথায় গেল পুচকু? হঠাৎ সবার চক্ষু চড়কগাছ! আমগাছের মগডালে পুচকুকে কোলে নিয়ে একটা হনুমান বসে আছে। সারা বাড়ি একসাথে চিৎকার করে উঠল।
দিদি, মা সবাই হাউহাউ করে কেঁদে উঠল। সেই দেখা-দেখি হনুমানটা পুচকুকে কোলে নিয়ে এক গাছ থেকে আর এক গাছে লাফালাফি করতে লাগল। পুচকু কিন্তু দিব্যি ঘুমোচ্ছে হনুমানটার কোলে। আমার মা তাড়াতাড়ি করে ঠাকুরের পুজোর ফলের ঝুড়িটা নিয়ে এসে বারান্দায় এনে বসিয়ে দিল। 'আয় আয়' করে হনুমানটাকে ডাকতে লাগলো। এত লোকজনের ভিড়ে হনুমান কী আর আসে! শেষে জ্যাঠামশাই বুদ্ধি দিলেন, "আমরা সবাই বাড়ির ভেতরে চলে যাই। এখন মাথা ঠান্ডা রাখতে হবে। চারদিক ফাঁকা দেখলে হয়তো নীচে নেমে এলেও আসতে পারে।" সেই কথামত আমরাও সব বাড়ির ভেতর চলে গেলাম। দরজা জানলা সব বন্ধ করে দিলাম। একটুখানি জানলা ফাঁক করে আমি আর বিট্টু দেখছি। ভয়ে সারা গায়ে কাঁটা দিচ্ছে। ফাঁকা উঠোন। তারপর বারান্দা। বারান্দায় পুচকুর খালি বিছানা। হঠাৎ একটা ধুপ্ করে শব্দ। দেখি বিরাট হনুমানটা গাছ থেকে লাফিয়ে উঠোনে নামল। তারপর ধীরে ধীরে বারান্দায় উঠে এল। আস্তে করে পুচকুকে ওর বিছানায় শুইয়ে দিল। পুচকু তখনও ঘুমোচ্ছে। ফলের ঝুড়িটার দিকে একবার তাকাল হনুমানটা। তারপর একটা কর্কশ শব্দ করল মুখ দিয়ে। একটা ফলও হাতে নিল না। একটা বিশ্রী শব্দ করতে করতে বাগান দিয়ে পালিয়ে গেল। যেন একটা জেহাদ ঘোষণা করল সমগ্ৰ মানবজাতির বিরুদ্ধে। দিদি দৌড়ে বেরিয়ে পুচকুকে বুকে তুলে নিল। মা কাকিমা জেঠিমা সবাই হাতজোড় করে কপালে হাত ঠেকিয়ে বলে উঠল, "জয় মা জগদ্ধাত্রী। তুমিই রক্ষা করলে।" পুচকু নড়ে উঠে ফিক্ করে হেসে দিল। আবার সারা বাড়ি আনন্দে মেতে উঠল। কিন্তু শিক্ষিত মানুষকে অবলা প্রাণীটি; যে কিনা আমাদের পূর্বপুরুষ, একটি মোক্ষম শিক্ষা দিয়ে গেল। যে; আঘাতের বদলা আঘাত নয়, ক্ষমাই হল প্রকৃত ধর্ম। ফল খাওয়ার লোভে নয়, প্রকৃত অর্থে সে আমাদের একপ্রকার মন থেকে ক্ষমাই করে দিয়ে গেল। বুঝিয়ে দিয়ে গেল গাছের ফল,নদীর জল শুধু মানুষের অধিকারের নয়, পশু, পাখি, কীটপতঙ্গ সকলের তাতে সমান অধিকার।
সবই ঈশ্বরের সৃষ্টি। তাঁর চোখে সবাই সমান। শুধু মানুষের পূর্বপুরুষ বললে, এখন মনে হয় ওরা একটু অপমানিত বোধ করে।
_____________________________________________
Name Banibrata Goswami
Address- 9/6 East Mall Road.Kolkata-700080
[ছবি: ইন্টারনেট মাধ্যম থেকে সংগৃহীত]
- লিঙ্ক পান
- X
- ইমেল
- অন্যান্য অ্যাপ
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন