Featured Post

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। ত্রয়োত্রিংশ সংখ্যা ।। জুন ২০২৪

ছবি
  প্রচ্ছদ-চিত্রঃ সুনীত নস্কর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা। সম্পাদকীয় কেমন আছো ছোট্ট বন্ধুরা। গরমের ছুটি তো শেষ হয়ে এল। স্কুল খুলে যাচ্ছে। কিন্তু গরমের দাবদাহ কিন্তু এতটুকু কমেনি। এই গরমে  খুবই সাবধানে নিয়ম মেনে চলতে হবে তোমাদের। এখন তো আম, জাম কাঁঠালের সময়। এখন এইসব মৌসুমী ফল খেতে হবে। তাহলে শরীর সুস্থ থাকবে। শরীর সুস্থ থাকলে মন সুস্থ থাকবে। মন সুস্থ থাকলে পড়াশুনো ভালো হবে।           আশাকরি এতদিন বাড়িতে থেকেই মন দিয়ে পড়াশুনো করেছ। সঙ্গে অনলাইন কিশলয়ের পাতায় চোখও রেখেছ। পড়াশুনোর পাশাপাশি গল্প লেখা, ছবি আঁকা ইত্যাদির শখও মনের মধ্যে লালন পালন করতে হবে তোমাদের। পড়াশুনোর চাপে সব ছেড়ে দিলেও চলবে না কিন্তু। স্কুলের পড়া, বাড়ির পড়ার পাশাপাশি গল্প- কবিতা লেখা, প্রবন্ধ লেখা, ছবি আঁকা ইত্যাদি চালিয়ে যাও। তোমাদের প্রতিভার বিকাশ হোক। তোমাদের সৃজনীসত্ত্বার প্রকাশ হোক তোমাদের সৃষ্টির মধ্য দিয়ে। আর সাথে সাথে তোমার সেই সৃষ্টি অনলাইন কিশলয়ে প্রকাশের জন্য পাঠিয়ে দাও। বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে থাকা বাকি বন্ধুরাও জানুক তোমার সৃষ্টি সম্পর্কে। আর কী? সবাই সুস্থ থাকো, ভালো থাকো, আনন্দে থাকো।   শুভকামনাসহ-- প্রিয়ব্রত দত্ত ও কার্

গল্প ।। রূপলুর দূরবীন ।। সোমা চক্রবর্তী


রূপলুর দূরবীন

সোমা চক্রবর্তী

রূপলুকে তার মামা একটা দূরবীন উপহার দিয়েছে। বিদেশ থেকে আনা। যদিও খেলনা দূরবীন, তবু সেটা দিয়ে বেশ খানিকটা দূর পর্যন্ত দেখা যায়। দূরবীনটা পেয়ে তো রূপলু দারুণ খুশী। যতক্ষণ পারে দূরবীন দিয়ে বাইরের দিকে তাকিয়ে থাকে। আর তার ফলে, চারপাশের না জানা, চোখ এড়িয়ে যাওয়া অনেক কিছু সে ইদানিং দেখতে পাচ্ছে। এই যেমন, কয়েক দিন ধরেই দূরবীন দিয়ে রূপলু দেখেছে, পুকুর পাড়ের তালাছটায় দুটো বাবুই পাখি বাসা বুনছে। এমনিতে খালি চোখে কিছু ঠাওর হয় না। কিন্তু দূরবীনটা চোখে লাগিয়ে দেখতে পাওয়া গেলো যে, বাসা বানাবার জন্য বাবুই পাখি দুটো এই ক'দিন কেমন অক্লান্ত পরিশ্রম করলো। এখন গরম কাল। দুপুর বেলা রোদের দাপট প্রচন্ড। গ্রীষ্মের দুপুর এমনিতেই বেশ নিঃঝুম। ছোট্ট পাখি দুটোর কিন্তু কাজে ক্লান্তি নেই। রূপলু দেখলো, প্রথমে তারা ঠোঁট দিয়ে একটা ঘাসের আস্তরণ তৈরী করলো। তারপর পেট দিয়ে ঘষে ঘষে সেটা গোল আর মসৃণ করে তুললো। শুরুতে বাসাটার নীচের দিকটায় দুটো গর্ত ছিল। পরে একটা গর্ত ওরা বন্ধ করে দিলো। রূপলু মা'কে জিজ্ঞেস করে জানতে পারলো যে, ওই দিকে ওদের ডিম রাখার জায়গা হবে। আর খোলা গর্তটা হলো ওদের বাড়ির যাতায়াতের পথ। মা বললো, "লোকে বলে, সন্ধ্যা বেলায় ঘর আলো করার জন্য ওরা নাকি ঘরে জোনাকি ধরে নিয়ে আসে"। শুনে রূপলু তো অবাক। এত ছোট ছোট পাখি, তাদের মাথায় এতো বুদ্ধি! মা'কে জিজ্ঞেস করে,
- সত্যি মা?
- তা তো জানিনা। তবে লোকে বলে। আমরাও ছোটবেলা থেকে শুনেছি।
কয়েক দিনের মধ্যেই রূপলুর চোখের সামনেই বাবুই পাখির উল্টানো কলসির মতো বাসাখানা তৈরী হয়ে গেলো। বাবুই পাখির বাসার ছবি রূপলু বইতে দেখেছে। কিন্তু এতো একেবারে নিজের চোখে বাসাটা তৈরী হতে দেখা। রূপলুর উত্তেজনা তখন দেখে কে!

- বাবুই পাখিকে বলা হয় তাঁতী পাখি।
- আর টুনটুনি পাখিকে?
- দর্জি পাখি।
- ঠিক বলেছো। আচ্ছা, বুলবুলি পাখিকে কি বলা হয় জানো?
- না তো। কি বলা হয়, মা?
রূপলু পাশ ফিরে মায়ের গলা জড়িয়ে ধরলো। মাও রূপলুকে দুই হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরে বললো,
- বুলবুলি পাখিকে বলা হয় লড়াকু পাখি।
- কেন?
- এদের স্বভাব খুব লড়াকু তো, তাই।
রাতে শুয়ে শুয়ে কথা হচ্ছিলো। বাবুই পাখির বাসা বানানো নিজের চোখে দেখে, এখন পাখিদের নিয়ে রূপলুর খুব উৎসাহ বেড়ে গেছে। চেনা জানা পাখিদের নিয়ে মাঝে মাঝেই মা'কে নানা রকম প্রশ্ন করে চলেছে ও। পড়শু আবার দূরবীন দিয়ে রূপলু দেখেছে, বাগানের গন্ধরাজ লেবুর গাছে একজোড়া টুনটুনি পাখি সকলের চোখ এড়িয়ে কখন যেন বাসা বুনেছে। অনেকটা দোলনার মতো গাছের ডালে ঝুলে আছে বাসাটা। চারটে ছোট ছোট পাখির ছানা তার মধ্যে থেকে উঁকি দিচ্ছে আর কিচমিচ করে ডাকছে। ছানাগুলো বোধহয় এখনো উড়তে শেখেনি। মা'কে ডেকে এনে দেখিয়েছে রূপলু। উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর লেখা "টুনটুনির বই" পড়েছে রূপলু। সেখানে টুনটুনি পাখিটা বেগুন গাছের পাতা ঠোঁট দিয়ে সেলাই করে তার বাসা বানিয়েছিল। মনে পড়ে যেতে রূপলু জিজ্ঞেস করল, 
- বেগুন গাছে বাসা না বেঁধে কেন লেবু গাছে বাসা বাঁধলো মা, আমাদের টুনটুনি পাখিটা?
মা হেসে উঠলো। বললো,
- শুধু মাত্র বেগুন গাছেই বাসা বাঁধতে হবে, তা কিন্তু নয়। ছোট ঝাঁকড়া যে কোনো গাছেই বাসা বাঁধতে পারে। গাছটা ছোট হলেও, পাতাগুলো বড়ো বড়ো হলে বাসা বানাতে সুবিধা হয় ওদের। তবে পাখিরা একটু নিরিবিলি পছন্দ করে তো, তাই যেখানে নিরিবিলি পরিবেশে পায়, সেখানেই বাসা বানায়।
একটু থেমে মা রূপলুকে জিজ্ঞেস করলো,
- আচ্ছা, বলতো, কি ভাবে টুনটুনি পাখি বাসা বানায়?
- জানি আমি। গাছের পাতা ঠোঁট দিয়ে সেলাই করে।
গম্ভীর গলায় রূপলু উত্তর দিলো। মা তখন বললো,
- ঠিক বলেছো। টুনটুনি পাখি তার বাসা তৈরি করার সময় দুটো বা তিনটে পাতা ঠোঁট দিয়ে সেলাই করে প্রথমে একটা বাটির মতো বানিয়ে নেয়। তারপর তার মধ্যে নরম ঘাস,পাতা, পালক এইসব দিয়ে বাসাটা ভর্তি করে। তারপর সেখানে ডিম পাড়ে। একসঙ্গে দুটো থেকে চারটে ডিম পাড়ে টুনটুনি পাখি। তার বেশী না।
- পাতা গুলো কি দিয়ে সেলাই করে, মা?
- দুটো পাতাকে উল্টিয়ে, ঠোঁটের সাহায্যে, গাছের আঁশ দিয়ে অদ্ভুত ভাবে জুড়ে দেয়। ওপর দিয়ে শুধু একটুখানি ফাঁক রাখে। সেই ফাঁক দিয়েই ওরা আসা যাওয়া করে।

রূপলুদের বাড়িতে একটা ঝুপসি আমগাছ আছে। মা বলেছে, আম গাছটার অনেক বয়েস। রূপলুর দাদুর থেকেও নাকি অনেক বড়ো ওই আমি গাছটা। বিশাল, মোটা গুঁড়িটা শ্যাওলায় একেবারে ঢেকে আছে। তাতে কতো যে আগাছা আর লতাপাতা জন্মেছে, তার ঠিক নেই। ঘন পাতাগুলোর মধ্যে যেন সবসময় রাতটা আটকে থাকে, এমনই অন্ধকার। সকালের স্কুলে যায় বলে, এমনি দিনেও সারা দুপুর বাড়িতেই থাকে রূপলু। তার ওপর গরমের ছুটি পড়ে গেছে। আগে তো দুপুর বেলা ছবি আঁকতো অথবা মায়ের পাশে শুয়ে ঘুমিয়ে পড়তো। এখন কিন্তু একদিনও ঘুমাতে চায় না। জানালা দিয়ে দূরবীনে চোখ রেখে তাকিয়ে থাকে। এইভাবেই একদিন হঠাৎ করে দেখতে পেলো আম গাছটার ঝুপসি পাতার ফাঁকে অন্ধকার আবছায়ায় মিশে কালো কালো কিসব যেন ঝুলছে। "ভূত", "ভূত" বলে চেঁচিয়ে বাড়ি একেবারে মাথায় করে তুললো রূপলু। চিৎকার শুনে দৌড়ে এলো মা। দূরবীনে চোখ রেখে অনেকক্ষণ ধরে দেখে বললো, "ওগুলো তো বাদুড়"। মায়ের কথা শুনে এবার ভালো করে দেখলো রূপলু। ও বইতে পড়েছে, বাদুড় নিশাচর প্রাণী। দিনের বেলা ঘুমিয়ে থাকে, আর রাতে খাবারের খোঁজে বেরোয়। এখন রূপলু দূরবীন দিয়ে দেখলো, বাদুড়গুলো পেছনের পায়ের নখ দিয়ে গাছের ডালটা শক্ত করে আঁকড়ে মুখটাকে নীচের দিকে দিয়ে ঝুলে রয়েছে। আর ওদের ভাঁজ করা ডানাগুলো চাদরের মতো ওদের শরীরটাকে ঢেকে রেখেছে। ডানাগুলো দেখতে অবিকল রূপলুর দাদুর পুরনো ছাতাটার কালো রঙের কাপড়ের মতো। 

রূপলুদের বাড়িটা খুব পুরনো। অনেক কাল আগেকার। বড়ো বড়ো ঘর আর বিশাল দরজা। গোল গোল খিলানের ওপর অনেক উঁচুতে ছাদ, তাতে পুরনো দিনের কড়িবরগা। মাঝখানে উঠোন আর চারিদিকে বারান্দা। কয়েক দিন ধরে দুটো বুলবুলি পাখি কেবলই বারান্দায় উড়ে উড়ে আসছে আর মানুষের সাড়াশব্দ পেলেই ফুড়ুত করে উড়ে চলে যাচ্ছে। রূপলু ওদের ঠোঁটে করে খড়, ঘাস এইসব নিয়ে আসতেও দেখেছে। মাও পাখি দুটোকে দেখতে পেলো একদিন। বললো, ওরা নাকি বাসা বানানোর জন্য জায়গা খুঁজছে। ওদের বিরক্ত করলে কিম্বা কাছাকাছি গেলে কিন্তু ওরা আর এখানে বাসা বাঁধবে না। দূরে চলে যাবে। সেই থেকে ওদের পিছু পিছু ঘোরা বন্ধ করে দিয়েছে রূপলু। নিজের ঘর থেকে দূরবীন দিয়ে যেটুকু দেখা যায়, আপাতত তাই নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছে ওকে। 
বেশ কয়েক দিন পাখি দুটোর দেখা নেই। কোথাও কোনো সাড়াশব্দও নেই। মহা চিন্তায় পড়ে গেলো রূপলু। ওরা কোথাও চলে গেলো নাকি? অন্য কোথাও গিয়ে বাসা বানালো তবে? কিন্তু রূপলু তো ওদের কোনো রকম বিরক্ত করেনি। তাহলে পাখি দুটো গেলো কোথায়? তারপর হঠাৎ একদিন আবার পাখি দুটোর ডাকাডাকি কানে এলো। "বি-কুইক-কুইক", চেনা ডাক শুনে বাইরে এসে রূপলু দেখলো, ওদের বাড়ির ছাদের কার্নিশে এই ক'দিনেই ছোট্ট একটা বাটির মতো দেখতে, বেশ সুন্দর বাসা বানিয়ে ফেলেছে বুলবুলি পাখি দুটো। একছুটে ঘরে এসে দূরবীনটা বের করে চোখে লাগালো রূপলু। দেখলো, ছোট ছোট গাছের ডাল, পাতা, সরু তার, কঞ্চি, ঘাস, চুল এইসব জিনিস বেশ করে মাকড়শার জালে জড়িয়ে, পরিপাটি একখানা বাসা বানানো হয়েছে। বাসাটার মধ্যে ছোট্ট ছোট্ট তিনটে ডিম। ডিমগুলো হালকা গোলাপি রঙের, তার উপরে লাল রঙের ছিট ছিট দাগ। 
দিন পনেরোর মধ্যে ডিম ফুটে তিনটে ছানা বেরোলো। সারাদিন তারা বাসা থেকে বাইরের দিকে মুখ বাড়িয়ে বসে থাকে আর কিচকিচ শব্দ করে। মায়ের কথা শুনে রূপলু আর ওদের কাছাকাছি যায় না। শুধু সারাদিন চোখে দূরবীন এঁটে বুলবুলির বাসার দিকে তাকিয়ে থাকে। পালা করে মা পাখি আর বাবা পাখি বাচ্চাদের পাহারা দেয়। একজন যখন খাবার খুঁজতে যায়, আর একজন তখন বাসায় থাকে।

ঠিকঠাক চলছিল সবকিছু। পাখির ছানা তিনটে সামান্য একটু বড়ো হয়েছে। ওরা কবে উড়তে পারবে, এখন খালি সেইটাই রূপলুর চিন্তা। উড়তে শিখে ওরা একদিন চলে যাবে। আর ওদের সঙ্গে দেখা হবে না রূপলুর- এই ভেবে একটু যে মন খারাপ হয় না, তা নয়। তবে ছানাগুলোকে উড়তে দেখার ইচ্ছেটাও প্রবল। একদিন দুপুরবেলা মায়ের সঙ্গে একটু শুয়েছে, হঠাৎ খুব জোরে আর তীক্ষ্ণ ভাবে "পীক", "পীক" চিৎকার শুনে উঠে বিছানার ওপর উঠে বসলো রূপলু। ডাকটা মাও শুনেছে। পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে ভয় পেয়ে ডাকছে একসঙ্গে অনেক গুলো পাখি। তাড়াতাড়ি খাট থেকে নেমে দূরবীনটা নিয়ে জানালার সামনে এসে দাঁড়ালো রূপলু। আর দেখে কি, একটা সরু, হিলহিলে সাপ ছাদের কার্নিশ বেয়ে বুলবুলির বাসাটার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। সাপটার গা টা কুচকুচে কালো। আর তার ওপর সাদা ছিট ছিট দাগ। "মা" বলে রূপলুও চিৎকার করে উঠলো। চিৎকার শুনে মা দৌড়ে এলো রূপলুর কাছে। ওরা দেখলো, বুলবুলির বাচ্চা গুলো প্রচন্ড ত্রাসে চিৎকার করছে। মা পাখিটা সেদিন বোধহয় বাসায় ছিল না। বাবা বুলবুলি পাখিটার বীরত্ব সেদিন দেখলো রূপলু আর মা। ঘাড় ফুলিয়ে, লেজের পালক ফুলিয়ে ঘুরে ঘুরে উড়ছে আর সাপটাকে ঠোঁট দিয়ে ঠোকরাচ্ছে। সেই সঙ্গে প্রচন্ড জোরে ডাকছে পাখিটা। বাচ্চা গুলোও খুব ডাকছে আর ছোট্ট ডানাগুলো ঝাপটাতে চেষ্টা করছে। রূপলু ভাবছিলো, ইস্, ওরা যদি উড়তে শিখে যেতো, তাহলে তো এতক্ষণে উড়ে চলে যেতে পারতো। 
- কি লড়াইটাই না একা একা করছে পাখিটা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পারবে কি?
আপন মনে বললো রূপলুর মা। কি করবে ভাবছে ওরা। ওদিকে বেশ কয়েকবার ঠোক্কর খেয়ে সাপটা একটু দিশেহারা হয়ে পড়েছে। চলা থামিয়ে অবস্থাটা বোঝার চেষ্টা করছে। তার মধ্যে বাবা বুলবুলিটা দিলো আরো কয়েকটা ঠোক্কর বসিয়ে। একটা ছোবল মারলো সাপটা। সেটা বুলবুলির গায়ে লাগলো না। ঠোকর মেরেই উড়ে গেছে বাবা পাখি। 
- নাঃ। এভাবে চুপচাপ থাকা যায় না।
বলে উঠলো রূপলুর মা। 
- কি করবে মা?
- দেখি, ছাদে উঠে কার্বলিক অ্যাসিড ঢেলে সাপটাকে তাড়ানো যায় কিনা।
দ্রুত পায়ে ঘর ছেড়ে বেরিয়ে গেলো মা। রূপলু আবার দূরবীনে চোখ রাখলো। ঠোক্কর খেয়ে খেয়ে সাপটা বোধহয় সামান্য আহত হয়েছে। তাই মুখ ঘুরিয়ে ধীরে ধীরে চলে যাচ্ছে। একটু দূরের একটা ফাটলের আড়ালে চলে গেলো সাপটা। এতক্ষণ পরে বাসাটার একপাশে এসে বসলো বাবা বুলবুলি। গায়ের সব পালক খাড়া হয়ে গেছে ওর। অনেক পালক ঝরেও গেছে। এতক্ষণে চিৎকার থামিয়েছে বাচ্চারাও। মা ছাদে উঠে কার্নিশের আশেপাশে আর বাসাটার কাছাকাছি একটু কার্বলিক অ্যাসিড ছড়িয়ে দিয়েছে ততক্ষণে। এতে নাকি সাপ আসে না। রূপলু মনে মনে ভাবছিলো, বুলবুলিকে নাকি বলে লড়াকু পাখি। সত্যিই লড়াকু পাখি বটে!

এর দিন কয়েকের মধ্যেই বুলবুলি পাখির তিনটে ছানা উড়তে শিখে, বাসাটা ছেড়ে চলে গেলো। শুধু দূরবীনে চোখ রেখে রূপলু এখনো সেই খালি বাসাটাই রোজ একবার দেখে- নিয়ম করে!
 
_______________________
 
 
 

সোমা চক্রবর্তী

কালিকাপুর, টাকী রোড,
বারাসাত, উত্তর ২৪ পরগণা।

মন্তব্যসমূহ

সপ্তাহের পছন্দ

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। ত্রয়োত্রিংশ সংখ্যা ।। জুন ২০২৪

ছোটোদের আঁকা ।। মনামি মন্ডল, রায়সী চক্রবর্তী ও নিশান্তিকা নস্কর।

ছড়া ।। একটা খুশি ।। তীর্থঙ্কর সুমিত

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 32nd issue: May 2024

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। কিশলয় - ১২ ।। সেপ্টেম্বর ২০২২

ধারাবাহিক উপন্যাস ।। তিতলির বিশ্বভ্রমণ ।। ডাঃ অরুণ চট্টোপাধ্যায়

ছড়া ।। ও জোনাকি ।। কান্তিলাল দাস

দুটি ছড়া ।। গোবিন্দ মোদক

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। আত্মপ্রকাশ সংখ্যা ।। অক্টোবর ২০২১

মাসের পছন্দ

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। ত্রয়োত্রিংশ সংখ্যা ।। জুন ২০২৪

কবিতা || মর্যাদা || অবশেষ দাস

ছোটোদের আঁকা ।। মনামি মন্ডল, রায়সী চক্রবর্তী ও নিশান্তিকা নস্কর।

নিবন্ধ ।। কোনারক মন্দিরের ভয়াবহতা ।। সুজয় সাহা

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 32nd issue: May 2024

ছোটর কলম ।। বইপড়া ।। উন্নীত কর্মকার

গল্প ।। রবীন্দ্রজয়ন্তী ।। কুহেলী ব্যানার্জী

ছড়া ।। একটা খুশি ।। তীর্থঙ্কর সুমিত

অণুগল্প ।। পুরস্কার ।। চন্দন দাশগুপ্ত

বছরের পছন্দ

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। ত্রয়োত্রিংশ সংখ্যা ।। জুন ২০২৪

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচীপত্র ।। 29th Issue: February

প্রচ্ছদ ও সূচীপত্র ।। 24th issue: September 2023

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 31st issue: April 2024

প্রচ্ছদ ও সূচীপত্র ।। 25th issue: October 2023

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 32nd issue: May 2024

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 30th issue : March 2024

প্রচ্ছদ ও সূচীপত্র ।। 23rd issue: August 2023

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচীপত্র ।। 26th issue: November 2023

অতি প্রিয়

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। আত্মপ্রকাশ সংখ্যা ।। অক্টোবর ২০২১

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। দ্বিতীয় সংখ্যা ।। নভেম্বর ২০২১

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 4th issue: January 2022,

নিবন্ধ ।। শিশু-কিশোর সাহিত্যবলয়ে শিশুরাই যেন ব্রাত‍্য না থাকে ।। অরবিন্দ পুরকাইত

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 7th issue: April 2022

নিবন্ধ ।। দেশীয় উদ্ভিদ কেন গুরুত্বপূর্ণ ? ।। ডঃ চিত্তরঞ্জন দাস

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। কিশলয় - ১০ ।। জুলাই ২০২২

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। কিশলয় - ১১ ।। আগস্ট ২০২২

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র : 8th issue: May 2022

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। কিশলয় - ১২ ।। সেপ্টেম্বর ২০২২