প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। কিশলয় ৪৫ ।।আগস্ট, ২০২৫

আজ দীপাবলি। সন্ধেবেলা গুনগুন মায়ের সাথে চোদ্দ প্রদীপে সোলতে, তেল দিচ্ছে। মা বলছে, আজ ভূতচতুর্দশী। কোথাও যেন অন্ধকার না থাকে। ঠাকুরঘরে প্রদীপ দিয়ে ,সিঁড়ির ঘরে প্রদীপ দিয়ে মা গুনগুনকে নিয়ে বাগানে প্রদীপ দিতে গেল। মা তুলসী তলায় প্রদীপ দিয়ে গুনগুনকে বলল,যাও বাতাবি লেবু গাছটার তলায় প্রদীপ দিয়ে এস। গুনগুন লেবু গাছটার নীচে প্রদীপ দিয়ে আসার পর মা বলল, 'চল মা, কলা বাগানে প্রদীপ দিয়ে আসি। তাই শুনে গুনগুন মা কে বলল,কলা বাগানটা খুব অন্ধকার। ওখানে আমি যাবো না।আমার ভয় করছে যদি ভূত থাকে। মা গুনগুন কে সাহস দিয়ে বলল, কিচ্ছু নেই ,ভয় পাস না।আমি আছি তো। নিজের ওপর বিশ্বাস রাখ। গুনগুণের তাও একটু ভয় করছিল কিন্তু সে মায়ের কথা শুনে সাহস করে এগিয়ে গেল কলা বাগানের দিকে। হঠাৎ কেমন একটা ঠাণ্ডা হাওয়া বয়ে গেল, এমন ঠাণ্ডা যে ছোট্ট মেয়েটির হাড় কেঁপে উঠলো। কলা বাগানের দিকে তাকিয়ে গুনগুনের মনে হল কেউ একজন ঘোমটা মাথায় দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। একটু নড়াচড়া করছে মনে হল। গুনগুন শক্ত করে মায়ের হাতটা চেপে ধরে এগিয়ে গেল। মার হাতে প্রদীপের থালায় প্রদীপ গুলো জ্বলছে। সেই আলোতে গুনগুন দেখল কলা বাগানের ভিতর থেকে ভুকভুক শব্দ করে ভুলু বেরিয়ে এল। ভুলু গুনগুনের পোষা কুকুর ছানা। আর যাকে দেখে গুনগুনের মনে হয়েছিল কেউ ঘোমটা মাথায় দাঁড়িয়ে আছে সেটা আসলে কলা পাতা। তখন সে নিজের মনেই হেসে উঠলো এই ভেবে যে শুধুশুধুই সে ভয় পাচ্ছিলো। আসলে, ভূত বলে কিছু নেই। আর শীতের সময় এরকম ঠাণ্ডা হাওয়া হয়। মা কলা বাগানে প্রদীপ দিল, কল পারে প্রদীপ দিল, পাঁচিলে প্রদীপ দিল, ছাদে আকাশ প্রদীপ দিল। বাড়িতে কোথাও আর অন্ধকার নেই। বাগানে প্রদীপের আলো মিটিমিটি জ্বলছে। বারান্দায় বসে গুনগুন মা'র গান শুনছে ''আকাশ প্রদীপ জ্বলে, দুরের তারার পানে চেয়ে…'' মার গান শুনতে শুনতে গুনগুন ভাবছিল প্রদীপের আলোতে বাড়িটা কতো সুন্দর লাগছে, কাল যখন বাড়িতে মোমবাতি লাগিয়ে, বাবাকে সঙ্গে নিয়ে মোমবাতি জ্বালাবে তখন আরও কত সুন্দর লাগবে দেখতে বাড়িটা।
_____________________________________________________
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন