হাঁস চোর
বাঁটলের বাড়িটা ছিল পাড়াতুতো খোকন কাকার বাড়ি ঘেঁষা৷ খোকন পাড়ার ছেলে বুড়োসকলের কাকা ৷শিক্ষিত মানুষ,একটু বুদ্ধি দীপ্ত৷পাড়ায় কোন সমস্যা হলে তার ডাক আসে ৷ কোনবিচার হলে প্রথমেই লোক খোকনকে খবর দেয়৷
সে দিন সবে মাত্র সকাল হয়েছে,গামছা পরে খোকন বেরিয়েছে বাথরুম থেকে,দরজার সামনে চিৎকার জুড়ে দেয় বিভূতির বৌ ৷
বড়ো অপ্রস্তুত হয়ে পড়ে খোকন ৷ কি ব্যপার সে ঠাওর করতে পারে না৷ রীতি মতো গালিগালাজ করে বসে বিভূতির বৌ ৷
খোকনের ভয় হয় নন্টেকে নিয়ে ৷নন্টে খোকনের ছেলে ৷
দিনেদিনে তার ঔদ্ধত্য হয়ে হয়ে পড়ছে লাগাম ছাড়া ৷
এবার কি তবে খোকনকে নিয়ে তাকে বিচার করতে বসতে হবে? লোকে শুনলে বলবে কি?
পাড়ার লোকে আর কি তাকে আগের মতো মান্যি করবে?
কয়েকটা প্রশ্ন করেই খোকন ধাতস্ত হয় ৷ নাহ্,যাক এ যাত্রায় রক্ষে পায় সে ৷ নন্টের নামে কোন নালিশ আসে নি ৷ নালিশ কার নামে তাও স্পষ্ট নয় ৷
বিভূতি গিন্নির দুটো দুটো হাঁস উধাও হয়েছে গত কাল ৷ খালের হাঁটু জলে রোজ চরে বেড়ায়৷ সন্ধ্যের ঠিক নিয়ম করে খোঁড়ে ঢুকে যায়৷ অথচ গতকাল ঘটল উল্টো ঘটনা ৷
বিচারক খোকন বুঝে পায় না, এমন কাজ কার হতে পারে ৷ তবে বাঁটলেরউপরে তার সন্দেহ যে নেই তা নয় ৷ বাঁটলেরঘর থেকে কাল রাতে ভুরভুর করে মাংস রান্নার গন্ধ
ছড়িয়ে ছিল ৷ ওদের কি ঘরের হাঁস? নাকি চুরি করা?
বিভূতি গিন্নি কারোর নাম না করে এক প্রকার অলিখিত নালিশ জানিয়ে বাড়ি ফিরে গেল ৷ দিন কয়েক যেতে না যেতে আসলসত্য খোলস ছেড়ে বেরিয়ে এল ৷
বাঁটলে মানে পাড়ার বদ ছেলেদে দাদা বাঁটুল চন্দ্র সরকার পাড়ায় ছড়িয়েছে দিন কয়েকের মধ্যে সে পুলিশের চাকরিতে জয়েন করবে ৷ পুলিশের চাকরি তো আর ছেলের হাতের মোয়া নয় যে চাইলেই পাওয়া যায়। তাতে অনেক কাঠ খড় পোড়াতে হয় ৷ অনেক কসরত করতে হয় ৷বাঁটল সকলকে ডেকে ডেকে বলে দেখো আমি কেমন দৌড়চ্ছি ৷ শুধু মাঠে নয় ,এক হাঁটু জলে আমি রোজ ছুটি ৷
সে দিন দুটো হাঁসের পিছনে ও যখন ছুটছিল কেউ তখন ওকে সন্দেহ করে নি ৷আর সন্দেহ করবে কেন ওকে ? ও তো আগে নাটক করে রেখে দিয়ে ছিল ৷প্রত্যেক দিন একটা হাঁস খালের হাঁটু জলে ছেড়ে তাকে ধরার নাটকীয় চেষ্টা করত ৷
তাই হাঁস চোরকে ধরাটা খুব সহজ কাজ নয় খোকন কাকার কাছে ৷
_________________________________________
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন