প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। কিশলয় ৪১ ।। এপ্রিল ২০২৫

বাগানের অতিথি - পলুপোকা
সৌমিক ঘোষ
নরম তুলতুলে লম্বাটে দেহে শক্ত খোলকে ঢাকা মাথায় দাগ ও দুপাশে ভয়ঙ্কর দু রঙের চোখের বিন্যাস আছে। বুকের তিনটি খন্ডকে এক জোড়া করে হুকযুক্ত সন্ধিল পা থাকে। পেটের নীচের দিকে চার জোড়া উপপদ আছে। মুখোপাঙ্গ হিসাবে ১ জোড়া ওষ্ঠ, একটি মজবুত ম্যান্ডিবল্, ১ জোড়া ম্যাক্সিলা, ২ জোড়া ম্যাক্সিলারী ও লেবিয়াল পাল্প থাকে। মুখের ওপরের দিকে ২ জোড়া ওসেলাই নামের সরল চোখ ও নীচে একটি বুনন যন্ত্র থাকে।
নির্জনে সারাদিন গাছের পাতা, মুকুল খায়। ৫ বার খোলস বদলায়। ৮ দিন পাতা ও মুকুল খাওয়ার পর স্থির হয়ে যায়। বড়ো হওয়ার জন্য নিজের ওজনের প্রায় ৩০,০০০ গুণ বেশি ওজনের খাবার খেয়ে থাকে। পরিণত পলুপোকা প্রায় ৩ থেকে ৪ ইঞ্চি লম্বা হয়।
গল্পে আছে, প্রাচীন কালে চিনের তৎকালিন সম্রাজ্ঞী একদিন সাই লিং শি বাগানের তুঁত গাছের নিচে বসে চা পান করছিলেন। এমন সময় গাছ হতে পলু পোকার গুটি এসে তার গরম চায়ে পড়ে। যখন তিনি গুটিটি তোলার চেষ্টা করেন। তখন তিনি অবাক হয়ে লক্ষ্য করেন গুটি থেকে সূক্ষ্ম সুতা বেরিয়ে আসছে। তিনি এর রহস্য খোঁজা শুরু করলেন এবং রেশম সুতার খোঁজ পান।
খ্রিস্টপূর্ব ৩,৫০০ আগে থেকেই সম্ভবত চিনারা রেশম ব্যবহার জানত। এটির হালকা গুনগত মানের জন্য এটি চিনা ব্যবসায়ীদের দৃষ্টি আকর্ষন করে।
পতঙ্গভূক প্রাণী বা পাখি অন্যতম শত্রু হলেও; আমরা কখনও ভয় পেয়ে এই পলুপোকাকে মেরে ফেলি। কিন্তু প্রকৃতির মাঝে পলুপোকাকে আগলে রাখলে আগামীতে রেশমের ছোঁয়া থাকবে হাতের কাছে ।
=======000======
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন