Featured Post

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। কিশলয় ৪৪ ।। জুলাই ২০২৫

ছবি
      সম্পাদকীয় ছোট্ট বন্ধুরা আশা করি তোমরা ভালো আছো। তোমরা তো জানো, বাংলার ঋতু বৈচিত্রে আষার-শ্রাবন বর্ষাকাল। একথাটা যেন আমরা ভুলতেই বসেছিলাম। পরিবেশ দূষণ আর আমাদের বিভিন্ন প্রযুক্তির যথেচ্ছ সীমাহীন ব্যবহারে আমরা প্রকৃতির মহিমা থেকে বঞ্চিত হচ্ছিলাম। গরমে হাঁসফাঁস করতে করতে যেটুকু বর্ষার ছোঁয়া পেতাম তা যেন ক্ষণিকের! গ্রীষ্মের সীমাহীন আস্ফালনের পর হঠাৎ-ই বর্ষা মিলিয়ে যেতে শীতের দিনকয়েকের আগমন। ফের গ্রীষ্মের দৌরাত্ম্য।কিন্তু এবারে যেন জাকিঁয়ে নেমেছে বর্ষা।রিমঝিম শব্দের মধুরতায় মন মোহিত হয়ে যাচ্ছে। তোমরাও নিশ্চয় উপভোগ করছো বর্ষার সৌন্দর্য্য। চারদিকের খালবিল, নালা-নদী জলে থৈ থৈ। সবুজের সমারোহ চারপাশে।এটাই তো কবিদের সময়, কবিতার সময়। মন-প্রান উজার করে লেখার সময়। পরাশুনোর ফাঁকে, বৃষ্টি-স্নাত বিকেলে তেলেভাজা মুড়ি খেতে খেতে তোমরাও বর্ষার আনন্দে মাতোয়ারা হয়ে নিজেদের আবেগে ভাসিয়ে দাও লেখার খাতা। ধীরে ধীরে পরিণত হোক তোমাদের ভাবনার জগৎ। তবে বর্ষার ভালো দিকের সাথে সাথে তার ভয়াল রূপও রয়েছে । অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে  বন্যার আশঙ্কা থেকেই যায়। কত মানুষের কষ্ট, দূর্ভোগ বলো? সেই রকম বর্ষ...

গল্প ।। ভুলো মনের কাণ্ড ।। সান্ত্বনা ব্যানার্জী

absent minded - Single by Norman Sann | Spotify

ভুলো মনের কাণ্ড

সান্ত্বনা ব্যানার্জী

     
     "প্রতিদিন রোববার" পত্রিকায় নবনীতা দেব সেন-এর ভুলভুলাইয়া পড়ে খুব হেসেছিলাম,আর তারপরই মনে হলো , আরে!আমি নিজেই তো তার একটি প্রকৃষ্ট উদাহরণ! ভুলো মনের সে সব কাণ্ড কারখানা দিয়ে একটা মজার পাতা তো ভরা যেতেই পারে!এই কঠোর কঠিন সময়ে যদি  একটু হাসির বাতাস বইয়ে দেওয়া যায় তো ভালো হয় না?
              আমি তখন ক্লাস নাইনের ছাত্রী। শক্তিগরে আমার ছোটো কাকার বাড়ী। ওখানে প্রায়ই ভালো ভালো যাত্রা থিয়েটার হতো। কত নামকরা যাত্রা যে দেখেছি ওখানে, বীনা দাশগুপ্তর নটি বিনোদিনী, শান্তি গোপালের আমি সুভাষ বলছি, ক্রীতদাস,অরুণ বরুণ কিরণবালা ,থিয়েটার... মারিচ সংবাদ,সিংহগর, বেকার,সে সব আজও যেন চোখ বুজলে দেখতে পাই!যাইহোক,এমনই এক যাত্রাপালা দেখার জন্য কাকুর আমন্ত্রণ পেলাম।সকাল বেলাতেই বাস ধরে কাকুর বাড়ী চলে এলাম। দুপুরে খাওয়া দাওয়ার পর কাকু আমায় টিকিট টা দিয়ে বললো...সন্ধ্যেবেলা যাত্রা তলায় চলে যাস কাকিমার সঙ্গে। আমি টিকিটটা হাতে নিয়েই দুপুর বেলা খাটে উঠলাম শরৎচন্দ্রের ছোটো গল্পের সংকলন টা নিয়ে। ব্যাস, গল্পে ডুব! পড়ছি লালুর পাঁঠা বলি দেওয়ার গল্প,আর ক্রমশঃ সোজা হয়ে বসছি,আর কখন যে ভুলো মনে...!
            সন্ধ্যেবেলা কাকীমা বললো... কিরে ওঠ এবার, তৈরী হয়ে নে,না হলে জায়গা পাওয়া যাবে না। আমাদের দেরী দেখে কাকুও এসে হাজির।আর এসেই আমায় বকুনি....এখনো তৈরী হোসনি?
আমি বললাম...শরীর টা খারাপ লাগছে,যাবো না। কাকু আরও দুচার বার জোর করলো যাবার জন্য,তারপর বললো...কি আর হবে, যাবিই না যখন টিকিট টা দে,অন্য কেউ একজন যেতে পারবে।তখন কেঁদে ফেললাম!গল্প পড়তে পড়তে কখন যে টিকিট টা দাঁত দিয়ে কুচিয়ে ফেলেছি..! খুব রেগে গিয়েও কেন জানিনা কাকু বেশি কিছু বললো না,আবার টিকিট কেটে যাত্রা দেখা হলো আরো কয়েক বছর পর,ওই স্টেশনেই বসে আছি ট্রেন ধরবো বলে।একজন সাদা কাপড় পরা বিধবা মহিলা গুটি গুটি আমার কাছে এসে
বললো....ও মা!বুলা যে!ভালো আছো মা? আমিও এক গাল হেসে বললাম .....ভালো আছি, তুমি কেমন আছো ছবি মাসী?দাদু দিদা,মামা সবাই ভালো আছে?....ও কেমন অবাক হয়ে বললো...
দাদু দিদা মামা কি সব বলছো! আমি তো মানু পিসী,তোমার পিসিমার বাড়ীর বাঁধা নোক!....
এ মা!সত্যি তো ! এতো মানু পিসিমা!মামার বাড়ির ছবি মাসী নয়! চ্ছিঃ!ছি!কি গেরো!
              পরের টা ঘটেছে খুব সম্প্রতি। সব রান্না হয়ে গেছে,ভাত টা গরম গরম খাওয়া হবে। কুকারে ভাত বসিয়ে একটা সিটি দিয়ে চান করতে গেলাম।চান করে বেরিয়ে ডেকচিতে উপুড় দিয়ে সব তরি তরকারি খাবার টেবিলে নিয়ে গেলাম।শেষে গরম ভাতের কুকার তুলতেই দেখি হালকা!খালি কুকার!  চালই দিই নি!কপালে জুটলো গৃহকর্তার বকুনি।শেষে সবাই হেসে নিল খুব।
               তবে গৃহকর্তা ও কিছু কম যান না। একদিন স্কুলে যাওয়ার জন্য তৈরী হয়েছি। তিনি আমাকে স্টেশনে পৌঁছে দেওয়ার জন্য গেটের বাইরে স্কুটার নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। আমি গেট খুলে , শাড়ীর আঁচল টা কোমরে জড়িয়ে বসতে যাবো, তিনি স্কুটার চালিয়ে চলে গেলেন আমাকে পৌঁছে দিতে!আমি পিছন পিছন ছুটে জোরে জোরে হেঁকে ও তাকে থামাতে পারলাম না! যথারীতি ট্রেন মিস হলো,স্কুলে যাওয়া হলো না। 
            আর এক দিনের কথা! স্কুল থেকে বাসে ট্রেনে,তারপর হেঁটে,প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা পথ যুদ্ধ করে ক্লান্ত অবসন্ন দেহে বাড়ী ফিরে খাটের ওপর বসেছি, কর্তা তাড়াতাড়ি ফ্যান টা চালিয়ে দিলেন।বললাম, এক গ্লাস জল দেবে?...উনি জলের জালারকাছে গেলেন,এক গ্লাস জল আনলেন,দাঁড়িয়ে আমার সঙ্গে কি সব যেন কথা বলতে বলতে জলটা খেয়ে নিলেন,কিছুক্ষন পর খালি গ্লাস টার দিকে চোখ পড়তেই আমায় জিজ্ঞেস  করলেন....আর জল নেবে?
          এবার আমারএক জ্যাঠামশাই এর কথা বলে ভুলো মনের গল্পের ইতি টানবো। একদিন জ্যাঠামশাই চান খাওয়া করে অফিস চলে গেলেন। জ্যাঠাইমার কাজ তার ছাড়া জামা কাপড়,গামছা কেচে দেওয়া। তো কাচতে গিয়ে কোথাও গামছা টা খুঁজে পেলেন না। বিকেলে  ফিরলে জ্যাঠাইমা গামছার কথা জিজ্ঞেস করতে ঘরে ঢুকে দেখেন তিনি ইতি মধ্যেই জামা প্যান্ট খুলে ফেলেছেন আর তার আন্ডার ওয়্যার এর তলা দিয়ে লাল গামছাটা ঝুলছে!জ্যাঠাইমা বলতেই তিনি কেমন থতমত খেয়ে বললেন.....তাই তো! একি কাণ্ড! তাই সারাদিন পিছন টা কেমন ভিজে ভিজে লাগছিল!আর একদিন!জ্যাঠাইমা তার কাচ ভাঙা চশমার ফ্রেম টা ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন সমেত জ্যাঠামশাইকে দিয়ে বললেন নতুন কাচ লাগিয়ে আনতে।বিকেলে অফিস থেকে ফেরার পর চশমার কথা জিজ্ঞেস করতে গিয়ে ওনার দিকে তাকিয়ে চক্ষুস্থির!সেই কাচ ছাড়া চশমার
ফ্রেম টা জ্যাঠামশাই এর চোখে!এবারও বললেন.....তাই আজ অফিসে কাজ করতে কেমন অসুবিধে হচ্ছিল!আর বাসে ওই কলেজের মেয়েটা কেমন ফিক্ ফিক করে হাসছিলো!!
__________________________________________________________________________
     
 [ছবি: ইন্টারনেট মাধ্যম থেকে সংগৃহীত]       

মন্তব্যসমূহ

সপ্তাহের পছন্দ

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। কিশলয় ৪৪ ।। জুলাই ২০২৫

ছড়া ।। কেলে গাইটা ।। প্রবোধ কুমার মৃধা

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। কিশলয় ৪৩ ।। জুন ২০২৫

কবিতা ।। এখন ।। সুশান্ত সেন

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। কিশলয় ৪২ ।। মে ২০২৫

ছড়া ।। বাঘের থাবায় কাঁটা ।। প্রবীর বারিক

ছড়া ।। নতুন বই এর গন্ধ ।। দীনেশ সরকার

ছোটদের পাতা ।। বর্ষার দিনে ।। প্রমা কর্মকার

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। কিশলয় ৪০ ।। মার্চ ২০২৫

থ্রিলার গল্প ।। লাশ কাটার ঘর ।। ইয়াছিন ইবনে ফিরোজ

মাসের পছন্দ

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। কিশলয় ৪৪ ।। জুলাই ২০২৫

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। কিশলয় ৪২ ।। মে ২০২৫

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। কিশলয় ৪৩ ।। জুন ২০২৫

ছড়া ।। কেলে গাইটা ।। প্রবোধ কুমার মৃধা

ছড়া ।। তাপের বহর ।। রঞ্জন কুমার মণ্ডল

গল্প ।। মামা বাড়ি ভারি মজা ।। মিঠুন মুখার্জী

কবিতা ।। এখন ।। সুশান্ত সেন

ছোটদের আঁকিবুঁকি ।। ত্রিত্বারিংশ সংখ্যা ।। জুন, ২০২৫

ছড়া ।। বাঘের থাবায় কাঁটা ।। প্রবীর বারিক

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। কিশলয় ৪০ ।। মার্চ ২০২৫

বছরের পছন্দ

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। কিশলয় ৪০ ।। মার্চ ২০২৫

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 38th issue: January 2025

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সুচিপত্র ।। 37th issue: December 2024

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। কিশলয় ৪১ ।। এপ্রিল ২০২৫

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। কিশলয় ৪২ ।। মে ২০২৫

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। ,39th issue: February 2025

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। পঞ্চত্রিংশ সংখ্যা ।। আগষ্ট ২০২৪

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। ষড়ত্রিংশ সংখ্যা ।। সেপ্টেম্বর ২০২৪

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। কিশলয় ৪৩ ।। জুন ২০২৫

কবিতা ।। আকাশ-সাগর ।। শান্তনু আচার্য

অতি প্রিয়

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। আত্মপ্রকাশ সংখ্যা ।। অক্টোবর ২০২১

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। দ্বিতীয় সংখ্যা ।। নভেম্বর ২০২১

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 4th issue: January 2022,

নিবন্ধ ।। শিশু-কিশোর সাহিত্যবলয়ে শিশুরাই যেন ব্রাত‍্য না থাকে ।। অরবিন্দ পুরকাইত

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 7th issue: April 2022

নিবন্ধ ।। দেশীয় উদ্ভিদ কেন গুরুত্বপূর্ণ ? ।। ডঃ চিত্তরঞ্জন দাস

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। কিশলয় - ১০ ।। জুলাই ২০২২

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। কিশলয় - ১১ ।। আগস্ট ২০২২

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। কিশলয় - ১২ ।। সেপ্টেম্বর ২০২২

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র : 8th issue: May 2022