Featured Post

ছড়া ।। আকাশটাকে খোঁজে ।। দীনেশ সরকার

ছবি
আকাশটাকে খোঁজে দীনেশ সরকার            পড়তে বসলে জানলা দিয়ে মন ছুটে যায় দূরে গাইছে পাখি ওই যে গাছে মিষ্টি-মধুর সুরে। কিংবা যখন হাত বাড়িয়ে আকাশ আমায় ডাকে পড়ার পাতায় মন আমার কি বাঁধা তখন থাকে?   পূবের হাওয়া কড়া নাড়ে যখন আমার দোরে কিংবা অলি গুনগুনিয়ে চতুর্দিকে ঘোরে প্রজাপতি পাখা মেলে ওড়ে ফুলের মেলায় কখন যেন অবুঝ এ মন যায় হারিয়ে হেলায়।   কাঠবেড়ালি কাটুস্‌-কুটুস্‌ আমার দিকে তাকায় মন তখন কি আটকে থাকে পড়ার বইয়ের পাতায়? টুনটুনিটা তিড়িং-বিড়িং পুচ্ছ নাচায় গাছে মনটা বাঁধা তখন কি আর অঙ্কখাতায় আছে?   অঙ্ক কষতে ভুল হয়ে যায়, পড়া যাই যে ভুলে স্যারের বকা মাঝে মাঝেই খাই আমি ইস্কুলে। মনকে আমি কত্ত বোঝাই, মন তবু কি বোঝে সুযোগ পেলেই জানলা দিয়ে আকাশটাকে খোঁজে।   ******************************************** দীনেশ সরকার ১৪০ ডি, হিজলি কো-অপারেটিভ সোসাইটি, প্রেমবাজার, খড়্গপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর---- ৭২১৩০৬

ছোটগল্প ।। রানুর দুষ্টুমি ।। লক্ষ্মী বিশ্বাস


        রানুর দুষ্টুমি


                 লক্ষ্মী বিশ্বাস

                        

রানু ও রনি আর ওদের বাবা-মা .. ছোট্ট সংসার । রানু ক্লাস টুয়ে পড়ে ,রনি এখনো স্কুলে ভর্তি হয়নি ।বাবা সরকারি চাকুরে ,মা সারাদিন ঘরের কাজ  নিয়ে ব্যস্ত থাকেন, সবকিছু দেখাশুনা করা, বাবার ডিউটি যাওয়ার সময় খাবার তৈরি করে দেওয়া, রানু রনির পড়াশোনায় তদারকি করা-এসবই মা করেন। রানুর বাবার সপ্তাহে একটা দিন ছুটি, ছুটিতে ছেলে মেয়েকে অনেকটা সময় দেন- ওদের স্নান করিয়ে দেওয়া, ওদের সঙ্গে খেলা করা, নতুন বইয়ের মলাট লাগিয়ে দেওয়া- সপ্তাহে একটা দিন বাবা সব সময় কাছে কাছে, যে বাবা সারা সপ্তাহ না থাকলেও ওদের কোনো অভিযোগ নেই ।বেশ ভালই চলছিল সব কিছু । হঠাৎ করে একদিন রানুর মা অসুস্থ হয়ে পড়লেন, ওষুধের দোকান থেকে ওষুধ এনে দিয়েছিল রানুর বাবা কিন্তু মায়ের শরীর  ঠিক হচ্ছিল না, অগত্যা মাকে নিয়ে হসপিটাল--তারপর অনেক ঔষধ, ইনজেকশন দিয়ে তবে মা ঠিক হলো । মা হসপিটাল থেকে বাড়ি এলে রানু মায়ের ব্যাগ থেকে একটা নতুন সিরিঞ্জ পেল, অত্যন্ত গোপনে সেটা ডিকশনারির পিছনে লুকিয়ে রেখেছিল।ওটা নিয়ে নানারকম এক্সপেরিমেন্ট চলছে--সবার অলক্ষ্যে। দুপুরবেলা যখন সবাই ঘুমিয়ে পড়ে তখন রানুর নানা রকম দুষ্টুমি শুরু হয়।
বাথরুমে ঢুকে কখনো ডিটারজেন্ট পাউডার মগে জল দিয়ে গুলে কখনো আবার Vim লিকুইড জল দিয়ে গুলে সিরিঞ্জ দিয়ে টানা অভ্যেস করে ফেলেছে ।ওটাতে ও খুব মজা পেয়েছে, আবার সবাই দেখার আগেই ও আবার সব লুকিয়ে ফেলেছে ।একদিন মাথায় একটা বুদ্ধি এলো ও  ইঞ্জেকশান দেওয়া দেওয়া খেলা করবে। কিন্তু কাকে দেবে ?  বাড়ির উঠোনে ফলন্ত পেঁপে গাছ। রানুর ওটার উপর নজর পড়লো। ও দেখলো পেঁপে গাছের কান্ড খুব নরম ,পেঁপে গাছে প্রায় সারা বছরই খুব বড় বড় প্রচুর পেঁপে হয় ,মাঝে মাঝেই পাড়াসুদ্ধ সবাইকে ওর মা পেঁপে  দিয়ে থাকে। সবাই খুব খুশী হয় আর বলে সত্যিই তোমাদের গাছে এত পেঁপে হয়--- খুব ভালো জাতের পেঁপে গো রানুর মা। দুপুরবেলা হতেই রানু ওর দুষ্টু বুদ্ধি দিয়ে কাজ শুরু করে দিলো । ডিটারজেন্ট ভালো করে জলে গুলে সিরিঞ্জে টেনে  সিরিঞ্জের মুখে needle লাগিয়ে পেঁপে গাছের নরম কাণ্ডে পুশ করতে থাকলো , রানু ভীষণ মজা পেল। একবার নয় বারবার ও পেঁপে গাছে ইনজেকশন দিতে থাকলো। প্রতিদিন দুপুর বেলা সবার অলক্ষ্যে পেঁপে গাছে ইনজেকশন দিয়ে ও চুপ করে গিয়ে আবার বিছানায় শুয়ে পড়তো, কেউ কিছু বুঝতে পারতো না ।এরকমভাবে চলতে থাকলো --রানু নিজের মনে মনে খুব আনন্দ পেত,  প্রায় দুই সপ্তাহ পরে গাছটা কেমন যেন ঝিমিয়ে পড়লো, মাসখানেক পরে গাছের সমস্ত পাতা হলুদ হয়ে গেল, তারপর গাছটা আস্তে আস্তে শুকিয়ে গিয়ে মরে গেল। রানু কেমন যেন মনমরা হয়ে গেল, জীবনের এই প্রথম ভীষণ কষ্ট পেল কিন্তু কাউকে সত্যি কথাটা বলতে পারল না। বাবা-মা কেউ বুঝতে পারলো না যে গাছটা হঠাৎ করে কেন মরে গেল? সবাই নানারকম বলতে থাকলো --রানু কষ্টে একা একা সবার অগোচরে কাঁদলো আর মনে মনে ভাবল ও তো খেলা করছিল, কাউকে মারতে চায় নি।গাছটা কেমন যেন সবুজ থেকে হলুদ তারপর  আস্তে আস্তে পাতাগুলো শুকিয়ে ঝরে পরলো, গাছে যে কয়টা পেঁপে ছিল সেগুলোও আর বড় হলো না ।চোখের সামনে একটা ফলন্ত গাছ আস্তে আস্তে শেষ হয়ে গেল আর কেউ জানতে পারল না মৃত্যুর কারণ। বহুবার রানু চেষ্টা করেছে বাবা মাকে সত্যি কথাটা বলার, কিন্তু ভয়ে আর  চূড়ান্ত অপরাধবোধে ছোট বয়সে মনে অতটা সাহস হলো না যে বড়দের সামনে গিয়ে নিজের দুষ্টুমির কথা স্বীকার করে নেবে। আস্তে আস্তে সবাই ভুলে গেল পেঁপে গাছটার কথা কিন্তু রানু প্রতিদিন রাতে ফলন্ত তরতাজা পেঁপে গাছকে দেখতে পায় আর ঘুমের ঘোরে বলতে থাকে আমায় ক্ষমা করো, আমায় ক্ষমা করো, আমি আর জীবনে কখনো কারোর ক্ষতি করব না।
 ___________________________________________________
 

   লক্ষ্মী বিশ্বাস
  জোকা ডায়মন্ড পার্ক
  কলকাতা -১০৪

মন্তব্যসমূহ

সপ্তাহের পছন্দ

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 38th issue: January 2025

কবিতা ।। আকাশ-সাগর ।। শান্তনু আচার্য

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সুচিপত্র ।। 37th issue: December 2024

কবিতা ।। নতুন বছর ।। জীবন সরখেল

চোখের ভাষা ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত

ছড়া ।। শীতের দু'টি মাসে ।। গোবিন্দ মোদক

প্রচ্ছদ ও সূচীপত্র ।। 24th issue: September 2023

ছোটদের আঁকিবুঁকি ।। কিশলয় - ২২ ।। জুলাই ২০২৩

ছড়া ।। দৃষ্টিকাড়া বৃষ্টি ।। শচীন্দ্র নাথ গাইন

ছড়া ।। অদ্ভূতুড়ে ।। প্রবোধ কুমার মৃধা

মাসের পছন্দ

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 38th issue: January 2025

কবিতা ।। আকাশ-সাগর ।। শান্তনু আচার্য

ছড়া ।। শৈশবের রথ ।। ইয়াসমিন বানু

কবিতা ।। নতুন বছর ।। জীবন সরখেল

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সুচিপত্র ।। 37th issue: December 2024

অণুগল্প ।। ঝুমুক ঝুমুক ।। ব্রজ গোপাল চ্যাটার্জি

ছোটগল্প ।। হেমন্ত দাদার সাথে ।। দীপক পাল

ছড়া ।। আকাশটাকে খোঁজে ।। দীনেশ সরকার

ছড়া ।। শীতবুড়িটা ।। প্রবোধ কুমার মৃধা

কবিতা ।। খুকির বায়না ।। খগেশ্বর দেব দাস

বছরের পছন্দ

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। ত্রয়োত্রিংশ সংখ্যা ।। জুন ২০২৪

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 38th issue: January 2025

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সুচিপত্র ।। 37th issue: December 2024

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। চতুর্ত্রিংশ সংখ্যা ।। জুলাই ২০২৪

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচীপত্র ।। 29th Issue: February

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 31st issue: April 2024

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 32nd issue: May 2024

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 30th issue : March 2024

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। পঞ্চত্রিংশ সংখ্যা ।। আগষ্ট ২০২৪

অতি প্রিয়

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। আত্মপ্রকাশ সংখ্যা ।। অক্টোবর ২০২১

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। দ্বিতীয় সংখ্যা ।। নভেম্বর ২০২১

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 4th issue: January 2022,

নিবন্ধ ।। শিশু-কিশোর সাহিত্যবলয়ে শিশুরাই যেন ব্রাত‍্য না থাকে ।। অরবিন্দ পুরকাইত

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 7th issue: April 2022

নিবন্ধ ।। দেশীয় উদ্ভিদ কেন গুরুত্বপূর্ণ ? ।। ডঃ চিত্তরঞ্জন দাস

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। কিশলয় - ১০ ।। জুলাই ২০২২

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। কিশলয় - ১১ ।। আগস্ট ২০২২

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র : 8th issue: May 2022

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। কিশলয় - ১২ ।। সেপ্টেম্বর ২০২২