Featured Post

ছড়া ।। আকাশটাকে খোঁজে ।। দীনেশ সরকার

ছবি
আকাশটাকে খোঁজে দীনেশ সরকার            পড়তে বসলে জানলা দিয়ে মন ছুটে যায় দূরে গাইছে পাখি ওই যে গাছে মিষ্টি-মধুর সুরে। কিংবা যখন হাত বাড়িয়ে আকাশ আমায় ডাকে পড়ার পাতায় মন আমার কি বাঁধা তখন থাকে?   পূবের হাওয়া কড়া নাড়ে যখন আমার দোরে কিংবা অলি গুনগুনিয়ে চতুর্দিকে ঘোরে প্রজাপতি পাখা মেলে ওড়ে ফুলের মেলায় কখন যেন অবুঝ এ মন যায় হারিয়ে হেলায়।   কাঠবেড়ালি কাটুস্‌-কুটুস্‌ আমার দিকে তাকায় মন তখন কি আটকে থাকে পড়ার বইয়ের পাতায়? টুনটুনিটা তিড়িং-বিড়িং পুচ্ছ নাচায় গাছে মনটা বাঁধা তখন কি আর অঙ্কখাতায় আছে?   অঙ্ক কষতে ভুল হয়ে যায়, পড়া যাই যে ভুলে স্যারের বকা মাঝে মাঝেই খাই আমি ইস্কুলে। মনকে আমি কত্ত বোঝাই, মন তবু কি বোঝে সুযোগ পেলেই জানলা দিয়ে আকাশটাকে খোঁজে।   ******************************************** দীনেশ সরকার ১৪০ ডি, হিজলি কো-অপারেটিভ সোসাইটি, প্রেমবাজার, খড়্গপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর---- ৭২১৩০৬

রহস্য রোমাঞ্চ গল্প ।। ভয়ংকর আওয়াজের রহস্য ।। অঞ্জনা মজুমদার

ভয়ংকর আওয়াজের রহস্য

অঞ্জনা মজুমদার 

 


 সুন্দরবনের  বিপিনহাটের পোস্টমাস্টারের  চাকরি পেয়েছি। কলকাতা থেকে যাতায়াত সম্ভব নয়।  পিওন সাগর বললো, একটা বাড়ি আছে। কিন্তু সেখানে নাকি ভয়ংকর আওয়াজ হয় রাতে।
 রাখোবাবু  জঙ্গলের ধারের বাড়িতে  একাই থাকেন।  কেষ্ট রান্না,  ঘরের কাজ করে বাড়ি চলে যায়।  
 থাকতে চাই শুনে আমার জন্য ওপরের ঘর বরাদ্দ হলো।  ভাড়া থাকবেন, তবে রাতের বেলা নীচে নামবেন না। জঙ্গলের ধারে ঘর তো! 
আমি খুশি।
জামাকাপড় ছেড়ে,  হাতমুখ ধুতেই  কেষ্ট চা  দিল। রাতে রুটি তরকারি দেবে। আমি নিশ্চিন্তে বাড়িতে মাকে ফোন করলাম। 
গ্রামের সন্ধ্যা তাড়াতাড়ি নামে। চারপাশে আঁধার। সাড়ে সাতটার সময় কেষ্ট খাবার দিলে খেয়ে শুয়ে পড়লাম, দরজাটা ভালো করে বন্ধ করে। আর কিছু না হোক, সাপখোপ থাকতে পারে। 
সারাদিনে ক্লান্ত। বেশ শীত  লাগছিল।  চাদরটা  জড়িয়ে ঘুমাতে চেষ্টা করলাম। ঘুম আসে না।
গভীর রাত। খাটে এপাশ ওপাশ করছিলাম। হঠাৎ যেন মেঝে থেকে উঠে এল আওয়াজটা। হাড় হিম করা। 
বুকের ভেতর যেন দামামা বাজল। ধড়ফড়িয়ে উঠে বসলাম। 
আওয়াজটা কিন্তু  দুবার  হয়েই  থেমে গেছে।  চারপাশ নিঝুম।  কোনও আওয়াজ নেই।  বাইরে গাঢ় অন্ধকার। ভয়ে বাইরে বেরোতে পারলাম না। জড়োসড়ো হয়ে কখন ঘুমিয়ে পড়েছি।
পরদিন  ঝকঝকে  সকাল। কোনও অস্বাভাবিকতা নেই। 
কেষ্ট বললো, রাখোবাবু বাড়ি নেই।   কাজে  শহরে গেছেন। 
কেষ্ট কাজকর্ম করছে। আমি বাড়ির চারপাশে ঘুরে দেখতে গেলাম। বাড়ির চারপাশে বাগান জঙ্গল হয়ে আছে। নীচে তিনটে ঘর। একটা ঘরে তালা দেওয়া। কেষ্ট বললো,  ওই ঘরটা খোলা হয় না। বাবুর দরকারি জিনিস আছে। ঘরের কাছে খুব বাজে গন্ধ। 
আমি খেয়েদেয়ে অফিস গেলাম। আমার মাথা থেকে ব্যাপারটা যাচ্ছিল না। 
 অর্চিদাকে ফোন করে সব বললাম। অর্চিদা, আমার মাসতুতো দাদা। দাদা কম, বন্ধু আসল। ও আই পি এস। ভবানী ভবনে পোস্টেড। বললো,  দাঁড়া, আমি আসছি।
বিকেলের ট্রেনে অর্চিদা এলো। রাখোবাবু অর্চিদাকে দেখে খুব একটা খুশি হলেন বলে মনে হলো না।
রাতে খেয়েদেয়ে শুয়ে পড়লাম দুজনে। চারপাশ নিঝুম হলে অর্চিদা আমাকে ঠেলা দিয়ে বললো, ওঠ বুড়ো।  দুজনে কালো চাদর মুড়ি দিয়ে পা টিপে টিপে বাইরে এলাম। চুপিচুপি নীচে এসে অবাক কান্ড!  রাখোবাবু আর দুজন ষন্ডাগন্ডা লোক সেই বন্ধ দরজার সামনে। ছোট এমারজেন্সি লাইটটা দিয়ে দরজার ফাঁক দিয়ে দেখি কি কান্ড! ভেতরে ডাঁই করা পশুর চামড়া। সাথে একটা জ্যান্ত বাঘ। খাঁচায়। আর কয়েকটি হরিণ। 
রাখোবাবু বলছেন, দ্যাখো, আর দরাদরি কোরোনা।  বনবিভাগ খুব কড়াকড়ি করছে। কালই  টাকা দিয়ে মাল নিয়ে যাও। লোকদুটি বললো, বেশ, কাল রাজাবাবু নিজে  আসবেন। ওরা চলে গেলে আমরাও  ওপরে চলে এলাম।
অর্চিদা বললো, বুঝতে পারছিস?  এখানে পশু আর চামড়ার চোরাচালান হয়। কাল হাতেনাতে ধরবো।
পরদিন সারাদিন উত্তেজনা। অর্চিদা সারাদিন ফোনে ব্যস্ত থাকলো।  সন্ধ্যায় রাখোবাবু যেন বিরক্ত।  আজও কি আপনার দাদা থাকবেন?  যাহোক,  রাতে যেন বাইরে বেরোবেন না। কাল রাতে একটা চিতা গ্রামে ঢুকেছিল। অর্চিদা অবাক যেন। 
রাতে তাড়াতাড়ি খেয়ে শোয়ার ভান করলাম। রাত গভীর হতেই আবার সেই ভয়ংকর আওয়াজ। 
 অর্চিদা দরজা খুলে বাইরে এলো। নীচে আজ বেশি আলো। কালো চশমা পরা এক ভদ্রলোক রাখোবাবুকে টাকা দিচ্ছেন।   একটা জাল দেওয়া গাড়ি  দাঁড়িয়ে।  
  হুইসিল বাজলো। রাইফেল হাতে পুলিশেরা চারিদিকে ঘিরে ধরেছে। রাজাবাবুর হাত পকেটের দিকে যেতেই অর্চিদা তার দিকে রিভলবার তাক করে হ্যান্ডস্ আপ। খাঁচার বাঘটা  ভয়ংকর হুংকার দিয়ে উঠলো।  রাজাবাবুর চোখ থেকে কালো চশমাটা থানার বড়বাবু টেনে খুলে নিলেন।  একি! এযে গ্রামের প্রাইমারি স্কুলের হেডমাস্টারমশাই! 
ইনিই চোরাচালানের মাথা ?  আশ্চর্য! 


অঞ্জনা মজুমদার 
চাঁদপুর পল্লী বাগান 
পোঃ রাজবাড়ি কলোনী 
কলকাতা৷ ৭০০০৮১


মন্তব্যসমূহ

সপ্তাহের পছন্দ

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 38th issue: January 2025

কবিতা ।। আকাশ-সাগর ।। শান্তনু আচার্য

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সুচিপত্র ।। 37th issue: December 2024

কবিতা ।। নতুন বছর ।। জীবন সরখেল

চোখের ভাষা ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত

ছড়া ।। শীতের দু'টি মাসে ।। গোবিন্দ মোদক

প্রচ্ছদ ও সূচীপত্র ।। 24th issue: September 2023

ছোটদের আঁকিবুঁকি ।। কিশলয় - ২২ ।। জুলাই ২০২৩

ছড়া ।। দৃষ্টিকাড়া বৃষ্টি ।। শচীন্দ্র নাথ গাইন

ছড়া ।। অদ্ভূতুড়ে ।। প্রবোধ কুমার মৃধা

মাসের পছন্দ

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 38th issue: January 2025

কবিতা ।। আকাশ-সাগর ।। শান্তনু আচার্য

কবিতা ।। নতুন বছর ।। জীবন সরখেল

ছড়া ।। শৈশবের রথ ।। ইয়াসমিন বানু

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সুচিপত্র ।। 37th issue: December 2024

অণুগল্প ।। ঝুমুক ঝুমুক ।। ব্রজ গোপাল চ্যাটার্জি

ছোটগল্প ।। হেমন্ত দাদার সাথে ।। দীপক পাল

ছড়া ।। আকাশটাকে খোঁজে ।। দীনেশ সরকার

ছড়া ।। শীতবুড়িটা ।। প্রবোধ কুমার মৃধা

কবিতা ।। খুকির বায়না ।। খগেশ্বর দেব দাস

বছরের পছন্দ

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। ত্রয়োত্রিংশ সংখ্যা ।। জুন ২০২৪

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 38th issue: January 2025

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সুচিপত্র ।। 37th issue: December 2024

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। চতুর্ত্রিংশ সংখ্যা ।। জুলাই ২০২৪

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচীপত্র ।। 29th Issue: February

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 31st issue: April 2024

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 32nd issue: May 2024

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 30th issue : March 2024

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। পঞ্চত্রিংশ সংখ্যা ।। আগষ্ট ২০২৪

অতি প্রিয়

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। আত্মপ্রকাশ সংখ্যা ।। অক্টোবর ২০২১

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। দ্বিতীয় সংখ্যা ।। নভেম্বর ২০২১

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 4th issue: January 2022,

নিবন্ধ ।। শিশু-কিশোর সাহিত্যবলয়ে শিশুরাই যেন ব্রাত‍্য না থাকে ।। অরবিন্দ পুরকাইত

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 7th issue: April 2022

নিবন্ধ ।। দেশীয় উদ্ভিদ কেন গুরুত্বপূর্ণ ? ।। ডঃ চিত্তরঞ্জন দাস

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। কিশলয় - ১০ ।। জুলাই ২০২২

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। কিশলয় - ১১ ।। আগস্ট ২০২২

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র : 8th issue: May 2022

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। কিশলয় - ১২ ।। সেপ্টেম্বর ২০২২