Featured Post

ছড়া ।। আকাশটাকে খোঁজে ।। দীনেশ সরকার

ছবি
আকাশটাকে খোঁজে দীনেশ সরকার            পড়তে বসলে জানলা দিয়ে মন ছুটে যায় দূরে গাইছে পাখি ওই যে গাছে মিষ্টি-মধুর সুরে। কিংবা যখন হাত বাড়িয়ে আকাশ আমায় ডাকে পড়ার পাতায় মন আমার কি বাঁধা তখন থাকে?   পূবের হাওয়া কড়া নাড়ে যখন আমার দোরে কিংবা অলি গুনগুনিয়ে চতুর্দিকে ঘোরে প্রজাপতি পাখা মেলে ওড়ে ফুলের মেলায় কখন যেন অবুঝ এ মন যায় হারিয়ে হেলায়।   কাঠবেড়ালি কাটুস্‌-কুটুস্‌ আমার দিকে তাকায় মন তখন কি আটকে থাকে পড়ার বইয়ের পাতায়? টুনটুনিটা তিড়িং-বিড়িং পুচ্ছ নাচায় গাছে মনটা বাঁধা তখন কি আর অঙ্কখাতায় আছে?   অঙ্ক কষতে ভুল হয়ে যায়, পড়া যাই যে ভুলে স্যারের বকা মাঝে মাঝেই খাই আমি ইস্কুলে। মনকে আমি কত্ত বোঝাই, মন তবু কি বোঝে সুযোগ পেলেই জানলা দিয়ে আকাশটাকে খোঁজে।   ******************************************** দীনেশ সরকার ১৪০ ডি, হিজলি কো-অপারেটিভ সোসাইটি, প্রেমবাজার, খড়্গপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর---- ৭২১৩০৬

পৌরাণিক গল্প ।। ত্রিশঙ্কু দশা ।। মনোরঞ্জন ঘোষাল

 
ত্রিশঙ্কু দশা
মনোরঞ্জন ঘোষাল

বহুকাল আগের কথা। তখন সূর্য বংশের রাজ সিংহাসনে রাজা হরিশচন্দ্রের পিতা ত্রিশঙ্কু বসেছেন। 
দরবারে বসে তিনি দেখলেন সেটি অতটাও সুন্দর না। তিনি আদেশ দিলেন রাজ দরবার সংস্করণ করে একেবারে জৌলুসময় করে গড়ে তোলা হোক।
রাজার আদেশ মত রাজ দরবারকে নানান রত্নে আর প্রসাধনীতে সাজিয়ে একেবারে চোখে লাগার মত করা হল। 
এবার তিনি মনের আনন্দে রাজ সভায় বসে তৃপ্ত হচ্ছেন। 
হঠাৎ একদিন এক আগন্তুক রাজ দরবারে এসে হাজির হলেন। দরবারের কারুকার্য আর প্রসাধনী দেখে মন্তব্য করলেন, "মন্দ না। তবে স্বর্গের রাজ সভার মত না।" বলে আগন্তুক চলে গেলেন।
রাজার মনে কথাটি গেঁথে গেল। তিনি মনোবাঞ্ছা করলেন একবার স্বর্গে গিয়ে দেখবেন সেটি কেমন।
সভাসদদের জিজ্ঞাসা করলেন, "স্বর্গ কোথায় জানো?" 
সকলে একবাক‍্যে উত্তর করলেন, "শুনেছি উর্ধাকাশে মহারাজ।"
"সেখানে কে নিয়ে যেতে পারে? আমাকে সন্ধান এনে দাও।" রাজা আদেশ দিলেন।
অনেক খুঁজে জঙ্গলে বসে থাকা মুনি বিশ্বামিত্রের সন্ধান পাওয়া গেল। সে এমন অনেক কাজ করেছে যা অন‍্যকেউ পারবে না।
কয়েক জন তার কাছে গিয়ে তাকে জিজ্ঞেস করল। "হা বাপু আমাদের রাজাকে স্বর্গে পাঠাতে পারবে?"
সে বড় বড় লাল চোখ খুলে তাদের দিকে চেয়ে বলল, "পারব!"
তখন তাকে চ‍্যাঙদোলা করে তুলে নিয়ে যাওয়া হল রাজার কাছে। 
বিশ্বামিত্র দেখল রাজা নেহাতি প‍্যাংলা শরীরের একে বারে রোগা। একটা জোরসে ফুঁ মারলে কোথায় উড়ে যাবে তার ঠিক নেই। তাকে স্বর্গে পাঠাতে খুব বেশি কসরত করতে হবে না। 
তিনি রাজাকে স্বর্গে পাঠানোর জন‍্য রাজি হয়ে গেলেন।
রাজা ধবধবে ধুতি পাঞ্জাবি পরে স্বর্গে যাবার জন‍্য বিশ্বামিত্রের সামনে এসে হাজির হলেন। 
বিশ্বামিত্র তার গায়ে মারলেন হালকা করে ফুঁক। তাতেই তার ধুতি পাঞ্জাবি খুলে যাবার উপক্রম।
তাই দেখে বিশ্বিমিত্র বললেন। "রাজন এ পোশাক পরিত‍্যাগ করে, রাজ বেশ ধারন করে আসুন। নইলে স্বর্গের দেবতারা পছন্দ করবেক না।"
বিশ্বামিত্রের কথামত রাজা ত্রিশঙ্কু রাজবেশ পরে তার সামনে হাজির হলেন। গলায় শিকলের মত সাধের সোনার হারটিও পরলেন। তাতে ইয়া বড় লাল হিরক বসানো লকেটটি তার ভীষণ পছন্দের। মনে ভাবলেন দেবতারা তা দেখে খুব পছন্দ করবে। 
বিশ্বামিত্র ফুসফুসে বেশ করে হাওয়া ভরে এবার জোরসে ছুঁড়ে দিলেন ফুঁক রাজার গায়ে। ব‍্যাস! রাজা হাওয়ায় উড়তে শুরু করলেন। উড়তে উড়তে খুঁজতে থাকলেন স্বর্গরাজ‍্য। অবশেষে দেখতে পেলেন স্বর্গরাজ‍্য কিন্তু পৌঁছাতে আর পারলেন না। কারণ তখন তো বিশ্বামিত্রের ফুঁয়ের জোর শেষ হয়ে গেছে। আবার মাথাটিও তার গোল হয়ে গেছে তাই চিনতে পারছে না তার রাজ‍্য কোথায়।
চারিদিকে সব আলোর কণার মত চাঁদ সূর্য গ্রহ নক্ষত্র ঘুরে বেড়াচ্ছে। সব যেন এক রকম দেখতে। তখন তো বিজ্ঞান এতটা উন্নত হয় নি যে নীল গ্রহটা পৃথিবী তা চিনে ফেলবে। 
তাই সে আজও পৃথিবী আর তার রাজ‍্য খুঁজে বেড়াচ্ছে। এমন দু লক্ষ‍্যের মাঝে ঘুরতে থাকা মানুষের দশাকে ত্রিশঙ্কু দশা বলে। 
তবে আজকের দিনে তার সঙ্গে কিন্তু এমন অন‍্যায় করা হবে না। এত সব চাঁদ সূর্যে যাচ্ছে তাদেরকে বলে রাখছি। যদি মহাশূন‍্যের কোথাও রাজ পোষাকে রাজা ত্রিশঙ্কুকে কেউ ঘুরে বেড়াতে দেখতে পান তবে নীল গ্রহটি যে পৃথিবী তা কেউ বলবেন না। এখানে এখন অনেক মানুষ। কেউ তাকে চিনবে না। আর রাজত্ব সে আর কোন দিন ফিরে পাবে না। 
তার চেয়ে বরং চাঁদের দেশে পাঠিয়ে দেবেন। সেখানে তো কেউ নেই। নিজে রাজ‍্য গড়ে নিতে পারবে। কেউ ঝামেলা করতে যাবে না। এখন ওনার মহাশূন‍্যে ঘুরে ঘুরে চাঁদের দেশে  বাস করার অভ‍্যাস হয়ে গেছে। 
আবার দেরি করেনা যেন। নানান দেশ থেকে যেভাবে চাঁদের মাটিতে দখল নিতে যাচ্ছে সব। দেরি করলে সব দখল হয়ে যাবে। তখন চাঁদেও আর জায়গা হবে না।
______________________________________________________________________________________

মনোরঞ্জন ঘোষাল
আত্মারামপুর
পশ্চিম রামেশ্বরপুর
বজ বজ
দক্ষিণ চব্বিশ পরগণা।
 [ছবি: ইন্টারনেট মাধ্যম থেকে সংগৃহীত]

মন্তব্যসমূহ

সপ্তাহের পছন্দ

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 38th issue: January 2025

কবিতা ।। আকাশ-সাগর ।। শান্তনু আচার্য

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সুচিপত্র ।। 37th issue: December 2024

কবিতা ।। নতুন বছর ।। জীবন সরখেল

চোখের ভাষা ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত

ছড়া ।। শীতের দু'টি মাসে ।। গোবিন্দ মোদক

প্রচ্ছদ ও সূচীপত্র ।। 24th issue: September 2023

ছোটদের আঁকিবুঁকি ।। কিশলয় - ২২ ।। জুলাই ২০২৩

ছড়া ।। দৃষ্টিকাড়া বৃষ্টি ।। শচীন্দ্র নাথ গাইন

ছড়া ।। অদ্ভূতুড়ে ।। প্রবোধ কুমার মৃধা

মাসের পছন্দ

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 38th issue: January 2025

কবিতা ।। আকাশ-সাগর ।। শান্তনু আচার্য

ছড়া ।। শৈশবের রথ ।। ইয়াসমিন বানু

কবিতা ।। নতুন বছর ।। জীবন সরখেল

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সুচিপত্র ।। 37th issue: December 2024

অণুগল্প ।। ঝুমুক ঝুমুক ।। ব্রজ গোপাল চ্যাটার্জি

ছোটগল্প ।। হেমন্ত দাদার সাথে ।। দীপক পাল

ছড়া ।। আকাশটাকে খোঁজে ।। দীনেশ সরকার

ছড়া ।। শীতবুড়িটা ।। প্রবোধ কুমার মৃধা

কবিতা ।। খুকির বায়না ।। খগেশ্বর দেব দাস

বছরের পছন্দ

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। ত্রয়োত্রিংশ সংখ্যা ।। জুন ২০২৪

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 38th issue: January 2025

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সুচিপত্র ।। 37th issue: December 2024

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। চতুর্ত্রিংশ সংখ্যা ।। জুলাই ২০২৪

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচীপত্র ।। 29th Issue: February

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 31st issue: April 2024

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 32nd issue: May 2024

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 30th issue : March 2024

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। পঞ্চত্রিংশ সংখ্যা ।। আগষ্ট ২০২৪

অতি প্রিয়

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। আত্মপ্রকাশ সংখ্যা ।। অক্টোবর ২০২১

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। দ্বিতীয় সংখ্যা ।। নভেম্বর ২০২১

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 4th issue: January 2022,

নিবন্ধ ।। শিশু-কিশোর সাহিত্যবলয়ে শিশুরাই যেন ব্রাত‍্য না থাকে ।। অরবিন্দ পুরকাইত

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 7th issue: April 2022

নিবন্ধ ।। দেশীয় উদ্ভিদ কেন গুরুত্বপূর্ণ ? ।। ডঃ চিত্তরঞ্জন দাস

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। কিশলয় - ১০ ।। জুলাই ২০২২

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। কিশলয় - ১১ ।। আগস্ট ২০২২

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র : 8th issue: May 2022

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। কিশলয় - ১২ ।। সেপ্টেম্বর ২০২২