Featured Post

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। ত্রয়োত্রিংশ সংখ্যা ।। জুন ২০২৪

ছবি
  প্রচ্ছদ-চিত্রঃ সুনীত নস্কর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা। সম্পাদকীয় কেমন আছো ছোট্ট বন্ধুরা। গরমের ছুটি তো শেষ হয়ে এল। স্কুল খুলে যাচ্ছে। কিন্তু গরমের দাবদাহ কিন্তু এতটুকু কমেনি। এই গরমে  খুবই সাবধানে নিয়ম মেনে চলতে হবে তোমাদের। এখন তো আম, জাম কাঁঠালের সময়। এখন এইসব মৌসুমী ফল খেতে হবে। তাহলে শরীর সুস্থ থাকবে। শরীর সুস্থ থাকলে মন সুস্থ থাকবে। মন সুস্থ থাকলে পড়াশুনো ভালো হবে।           আশাকরি এতদিন বাড়িতে থেকেই মন দিয়ে পড়াশুনো করেছ। সঙ্গে অনলাইন কিশলয়ের পাতায় চোখও রেখেছ। পড়াশুনোর পাশাপাশি গল্প লেখা, ছবি আঁকা ইত্যাদির শখও মনের মধ্যে লালন পালন করতে হবে তোমাদের। পড়াশুনোর চাপে সব ছেড়ে দিলেও চলবে না কিন্তু। স্কুলের পড়া, বাড়ির পড়ার পাশাপাশি গল্প- কবিতা লেখা, প্রবন্ধ লেখা, ছবি আঁকা ইত্যাদি চালিয়ে যাও। তোমাদের প্রতিভার বিকাশ হোক। তোমাদের সৃজনীসত্ত্বার প্রকাশ হোক তোমাদের সৃষ্টির মধ্য দিয়ে। আর সাথে সাথে তোমার সেই সৃষ্টি অনলাইন কিশলয়ে প্রকাশের জন্য পাঠিয়ে দাও। বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে থাকা বাকি বন্ধুরাও জানুক তোমার সৃষ্টি সম্পর্কে। আর কী? সবাই সুস্থ থাকো, ভালো থাকো, আনন্দে থাকো।   শুভকামনাসহ-- প্রিয়ব্রত দত্ত ও কার্

অনুবাদ ।। কথা না-বলা টিয়া ।। সুস্মিতা পাল

কথা না-বলা টিয়া

(মূল লেখা -  দ্য প্যারট হু উড নট টক / রাস্কিন বন্ড)

অনুবাদ - সুস্মিতা পাল


           " তুই একটা যাচ্ছেতাই! না পারিস কথা বলতে, না গাইতে, না নাচতে।"
রুবিকাকি যখন বেচারা টিয়াটাকে কথাগুলো বলে দ০
বিঁধতে থাকে,সে তখন উত্তরভারতে ঠাকুমার  বাংলো বাড়িটার  লম্বা বারান্দার এক প্রান্তে কারুকাজ করা খাঁচায় বসে বোকার মতো সবার দিকে চেয়ে থাকত।
      ‌ তখনকার দিনে, ভারতীয় বা ইউরোপীয়ান- সবার বাড়িতে টিয়া পোষার চল ছিল। ছোটগুলোকে বলা হতো লাভবার্ড।এদের মধ্যে কেউ কেউ দারুণ কথা বলত,অন্যের গলা নকল করত, মন্ত্রপাঠ করতে পারত। কেউ কেউ তো আবার ছোটদের উপদেশও দিত -" পড়ো, বেটা, পড়ো" বা " লোভ কোরো না"। আসলে বাড়ির কাউকে বহুদিন ধরে বলতে শোনার পরেই তারা এসব শিখত।
   কিন্তু, আমাদের কপাল মন্দ, টিয়াটা কথা বলতেই চায় না।
          পাড়ায় এক পাখিওলার কাছ থেকে রুবিকাকি টিয়াটা কিনেছিল।ওর কাছে রংবেরং-র বাজারিগার,কিচিরমিচির মুনিয়া আবার দামী বিরল জাতের পাখি বলে বেশি দামে বিক্রির জন্য রং করা চড়ুইও থাকত।দাদু ঠাকুমা কেউ খাঁচা বন্দী পাখি পোষা পছন্দ করতেন না, কিন্তু রুবিকাকির  বায়না- সামলানো ভয়ানক ব্যাপার ।
            যাইহোক, রুবিকাকি টিয়া পুষবে, আবার তাকে কথা বলতেও শেখাবে বলে জেদ ধরল।কিন্তু কেন জানি না, পাখিটা রুবিকাকিকে একেবারেই পছন্দ করত না। সঙ্গত কারণেই কাকির সব তোষামোদ ব্যর্থ হলো।
            খাঁচার শিকে মুখ লাগিয়ে কাকি চুমু দিতে বলত।রুবিকাকির সম্ভাব্য চুমুর  আশঙ্কায় টিয়াটা সঙ্গে সঙ্গে ছোট চোখদুটো রাগে আরো ছোট করে পিছিয়ে যেত।একবার তো হঠাৎ এগিয়ে এসে এমন ঠোকর মেরেছিল যে কাকির চশমা নাক থেকে নিচে পড়ে গিয়েছিল।তারপর থেকে সব চেষ্টা ছেড়ে রুবিকাকি বেচারা টিয়াটাকে বিষ নজরে দেখতে শুরু করল। যখনতখন মুখ ভেংচে খারাপ খারাপ মন্তব্য করত।
               আমার ওপর ওকে খাওয়ানোর দায়িত্ব ছিল। দশ বছরের আমি কাঁচালঙ্কা, পাকা টমেটো হাতে করে দিতাম আর টিয়া ভালোবেসে খেত। তখন আমের মরসুম বলে আমের টুকরো দেওয়ার সময় দু একটা নিজের মুখেও ফেলে দিতাম।
              একদিন দুপুরে, সবাই ঘরে ভাতঘুম দিচ্ছে,  আমি টিয়াটাকে খেতে দিয়ে ইচ্ছা করে খাঁচার দরজা খোলা রাখলাম।মুহূর্তের মধ্যে পাখি ডানা মেলে আমবাগানে ফুরুৎ!
           ঠিক তখনই দাদু বারান্দায় এলেন, " তোমার কাকির পাখি তো  পালাল"।
      আমি একটু কাঁধ ঝাঁকালাম, " দরজাটা বেশ নড়বড়ে ছিল। মনে হয় না টিয়াটাকে আর দেখতে পাব!"
       রুবিকাকি প্রথমে সামান্য মনখারাপ করলেও শাসানি দিলেন যে,আর একটা পাখি কিনবেন।এক বাটি গোল্ডফিশ কিনে দেব কথা দিয়ে তখনকার মতো তাকে থামানো হলো।
" কিন্তু গোল্ডফিশ তো কথা বলে না" ,কাকি প্রতিবাদ করে উঠলেন।
"সে তো তোমার টিয়াও বলে না" , দাদু বলে উঠলেন,
" তাহলে তোমাকে একটা গ্রামোফোন কিনে দেব, সারাদিন লতা মঙ্গেশকরের গান শুনো। সবাই তো তাকে নাইটিঙ্গল বলে।"
    আমি ভেবেছিলাম আর কোনোদিন টিয়াটাকে দেখা যাবে না। কিন্তু তার বোধহয় কাঁচালঙ্কার জন্য মনকেমন করছিল। কদিন পরেই বারান্দার রেলিঙে  ঘাড় কাত করে দেখি আমার দিকে  চেয়ে বসে আছে। আমিও হিংসুটেপনা না করে অর্ধেক আম ওকে খেতে দিলাম।
         টিয়াটা আম খাচ্ছে,  এমন সময় রুবিকাকি ঘর থেকে বেরিয়ে অবাক হয়ে চিৎকার করে উঠলেন, " দেখো, দেখো, আমার পাখি ফিরে এসেছে! ওর বোধহয় আমার কথা খুব মনে পড়ছিল।"
        বলতে না বলতে ক্যাঁও করে এক কানফাটানো ডাক দিয়ে টিয়াটা উড়ে গিয়ে সামনের গোলাপঝাড়ের ওপর বসে রুবিকাকির দিকে তাকিয়ে অবিকল কাকির গলায় বলে উঠল, " তুই একটা যাচ্ছেতাই,  না পারিস কথা বলতে,  না গাইতে, না নাচতে।"
রুবিকাকি মুখচোখ লাল করে দৌড়ে ভেতরে চলে গেলেন।
    কিন্তু ঘটনা এখানেই শেষ নয়।টিয়াটা এরপর প্রায়ই বাগানে, বারান্দায় উড়ে আসত আর  রুবিকাকিকে দেখতে পেলেই চেঁচিয়ে বলত, "তুই একটা যাচ্ছেতাই,  না পারিস কথা বলতে,  না গাইতে,  না নাচতে।"
     সে যাই হোক , টিয়াটা তো শেষমেশ কথা বলতে শিখল।

                           ---------*--------

সুস্মিতা পাল।
৩৪, আর্য্য বিদ্যালয় রোড
 কোলকাতা -৭০০০৭৮

মন্তব্যসমূহ

সপ্তাহের পছন্দ

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। ত্রয়োত্রিংশ সংখ্যা ।। জুন ২০২৪

ছোটোদের আঁকা ।। মনামি মন্ডল, রায়সী চক্রবর্তী ও নিশান্তিকা নস্কর।

ছড়া ।। একটা খুশি ।। তীর্থঙ্কর সুমিত

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 32nd issue: May 2024

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। কিশলয় - ১২ ।। সেপ্টেম্বর ২০২২

ধারাবাহিক উপন্যাস ।। তিতলির বিশ্বভ্রমণ ।। ডাঃ অরুণ চট্টোপাধ্যায়

ছড়া ।। ও জোনাকি ।। কান্তিলাল দাস

দুটি ছড়া ।। গোবিন্দ মোদক

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। আত্মপ্রকাশ সংখ্যা ।। অক্টোবর ২০২১

মাসের পছন্দ

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। ত্রয়োত্রিংশ সংখ্যা ।। জুন ২০২৪

কবিতা || মর্যাদা || অবশেষ দাস

ছোটোদের আঁকা ।। মনামি মন্ডল, রায়সী চক্রবর্তী ও নিশান্তিকা নস্কর।

নিবন্ধ ।। কোনারক মন্দিরের ভয়াবহতা ।। সুজয় সাহা

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 32nd issue: May 2024

ছোটর কলম ।। বইপড়া ।। উন্নীত কর্মকার

গল্প ।। রবীন্দ্রজয়ন্তী ।। কুহেলী ব্যানার্জী

ছড়া ।। একটা খুশি ।। তীর্থঙ্কর সুমিত

অণুগল্প ।। পুরস্কার ।। চন্দন দাশগুপ্ত

বছরের পছন্দ

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। ত্রয়োত্রিংশ সংখ্যা ।। জুন ২০২৪

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচীপত্র ।। 29th Issue: February

প্রচ্ছদ ও সূচীপত্র ।। 24th issue: September 2023

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 31st issue: April 2024

প্রচ্ছদ ও সূচীপত্র ।। 25th issue: October 2023

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 32nd issue: May 2024

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 30th issue : March 2024

প্রচ্ছদ ও সূচীপত্র ।। 23rd issue: August 2023

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচীপত্র ।। 26th issue: November 2023

অতি প্রিয়

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। আত্মপ্রকাশ সংখ্যা ।। অক্টোবর ২০২১

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। দ্বিতীয় সংখ্যা ।। নভেম্বর ২০২১

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 4th issue: January 2022,

নিবন্ধ ।। শিশু-কিশোর সাহিত্যবলয়ে শিশুরাই যেন ব্রাত‍্য না থাকে ।। অরবিন্দ পুরকাইত

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 7th issue: April 2022

নিবন্ধ ।। দেশীয় উদ্ভিদ কেন গুরুত্বপূর্ণ ? ।। ডঃ চিত্তরঞ্জন দাস

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। কিশলয় - ১০ ।। জুলাই ২০২২

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। কিশলয় - ১১ ।। আগস্ট ২০২২

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র : 8th issue: May 2022

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। কিশলয় - ১২ ।। সেপ্টেম্বর ২০২২