Featured Post

লেখা-আহ্বান : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য

ছবি
     মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কোন বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠানো ভালো (যেমন, কবিতা ১২-১৪ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে)। তাতে অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়। সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৫-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) যতিচিহ্নের আগে স্পেস না দিয়ে পরে দেবেন। ৪) বিশেষ কোন চিহ্ন (যেমন @ # *) ব্যবহার করবেন না। ৫) লেখার নীচে একটি ঘোষণা দিন:  'লেখাটি স্বরচিত ও অপ্রকাশিত'। মেল আইডি :  printednabapravat@

প্রবন্ধ ।। স্বদেশ পর্যায়ের গানে রবীন্দ্রনাথ ।। ভুবনেশ্বর মন্ডল

চিত্রকর রবীন্দ্রনাথ | চ্যানেল আই অনলাইন 

স্বদেশ পর্যায়ের গানে রবীন্দ্রনাথ 

ভুবনেশ্বর মন্ডল

বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী রবীন্দ্রনাথ তাঁর চিন্তা, দর্শন উপলব্ধি ইত্যাদিকে বিভিন্ন সৃষ্টিকর্মের মধ্য দিয়ে প্রকাশ করেছেন। রবীন্দ্রনাথের সৃষ্টির ভুবনে তাঁর সঙ্গীতও এক অমূল্য সম্পদ। প্রায় তিন হাজারের কাছাকাছি সংগীত তিনি রচনা করেছেন। তাঁর সংগীতগুলি বিশ্বের যে কোন প্রান্তের যে কোন মানুষের আত্ম উপলব্ধি ও অনুভবের সর্বজনীন কথা। রবীন্দ্র সংগীত তাই বিশ্বজনীন উপলব্ধিতে পরিপূর্ণ। রবীন্দ্রনাথ বিভিন্ন পর্যায়ের গান রচনা করেছেন যেমন প্রেম , প্রকৃতি, পূজা স্বদেশ , বিচিত্র, আনুষ্ঠানিক ইত্যাদি। আমার এ প্রবন্ধে আলোচনার বিষয় বস্তু রবীন্দ্রনাথের স্বদেশ পর্যায়ের গান। ওই পর্যায়ের গানের সুর ,তাল ,ছন্দ ইত্যাদি বিষয় তুলে ধরা এই প্রবন্ধের বিষয় নয়। আর ওই সব বিষয়ে আলোচনা করার মত সমঝদারও আমি নই। রবীন্দ্র সংগীতের একজন সাধারণ পাঠক হিসাবে এখানে জগত ,জীবন ও দেশ কাল সম্পর্কে কবির যে উপলব্ধি আমাকে জারিত করেছে তাই তুলে ধরার চেষ্টা করলাম এই প্রবন্ধে।

                    স্বদেশ পর্যায় নামকরণ থেকেই বোঝা যাচ্ছে যে এই সব গানগুলিতে কবির লক্ষ্য স্বদেশ অর্থাৎ নিজ দেশ। রবীন্দ্রনাথের সমকালের দেশ, দেশের মানুষ, দেশের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, সমস্যা ইত্যাদি এই পর্যায়ের সংগীতে ছায়া ফেলেছে। প্রায় প্রতিটি মানুষের মধ্যেই কমবেশি রয়েছে স্বদেশ প্রেমের তীব্র আবেগ। অনেকেই মনে করেন যে এই দেশপ্রেম আমাদের দেশে মূলত পাশ্চাত্য শিক্ষা ও জাতীয়তাবাদের জাগরণকে কেন্দ্র করে এসেছিল। কিন্তু একথা সত্য হলেও আমাদের প্রাচীন মধ্যযুগের যে সাহিত্য তাতে দেশপ্রেম যে নেই তা কিন্তু নয়। তবে সার্বভৌম অখন্ড যে স্বদেশ চেতনা তা হয়তো তখন সেভাবে দানা বাঁধেনি। আমাদের দেশে মূলত ব্রিটিশ শাসনকে কেন্দ্র করে যে পরাধীনতা ও তার নাগপাশ থেকে মুক্তির জন্য যে আন্দোলন ও প্রচেষ্টা তার গভীরে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে স্বদেশপ্রেম। স্বদেশ প্রেম একটি বিশুদ্ধ আবেগ। দেশের মাটি, মানুষ, ঐতিহ্য ,সংস্কৃতি, প্রকৃতি ইত্যাদির প্রতি যে গভীর ভালোবাসা তাই হলো স্বদেশ প্রেম। স্বদেশ প্রেমের মধ্য দিয়ে ব্যক্তিগত সংকীর্ণতা, স্বার্থপরতা ,আত্মকেন্দ্রিকতা ইত্যাদি লুপ্ত হয়। ব্যক্তি তখন সমষ্টির সঙ্গে বা বৃহত্তর সত্তার সঙ্গে একাত্মতা লাভ করে।কবি, লেখক ,সাহিত্যিক বা সৃষ্টিশীল প্রতিভাদের মধ্যে আমরা প্রায়শই দেখতে পাই তীব্র স্বদেশ প্রেম। দ্বিজেন্দ্রলাল রায় তাঁর জন্মভূমিকে বলছেন " সকল দেশের সেরা।"জীবনানন্দ দাশ বলছেন - " বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি / তাই খুঁজিতে যাই না আর পৃথিবীর রূপ।"স্বামী বিবেকানন্দও স্বদেশ ও স্বদেশের মানুষকে দেবতা জ্ঞানে পূজা করেছেন। ভগিনী নিবেদিতা তো বিবেকানন্দকে বলেছেন" পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ দেশপ্রেমিক।" শুধু এদেশের ক্ষেত্রেই নয় পৃথিবীর সকল দেশেই দেশপ্রেমিক মানুষের অভাব নেই।

                  রবীন্দ্রনাথ যে কালে জন্মগ্রহণ করেন বা যে সময়ে জীবন অতিবাহিত করেন সে কাল পর্ব এদেশের ক্ষেত্রে স্বদেশপ্রেমের কাল পর্ব বলা যেতে পারে। রবীন্দ্রনাথ জন্মেছিলেন ১৮৬১ খ্রিস্টাব্দে ‌। তার আগেই ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে এদেশে ঘটে গেছে সিপাহি বিদ্রোহের মত ঘটনা। জাতীয়তাবাদ তখন থেকেই ধীরে ধীরে একটি পরাধীন জাতির দেশপ্রেমকে জাগাতে শুরু করেছে। এরপর ১৮৮৫ খ্রিস্টাব্দে যখন তৈরি হল ভারতের জাতীয় কংগ্রেস তখন জাতীয়তাবাদ একটা সংগঠিত রূপ পেল। একটা ভারতীয়তত্ত্ব বোধ জমাট হয়ে উঠলো। এরপর ব্রিটিশ বিরোধী একাধিক আন্দোলন যেমন বঙ্গভঙ্গ, আইন অমান্য, স্বদেশী আন্দোলন, বয়কট আন্দোলন ইত্যাদি অনুপ্রেরণা জুগিয়ে গেল দেশপ্রেমকে। এই কাল পর্বের জল হাওয়ায় রবীন্দ্রনাথ নিঃশ্বাস নিয়েছেন, পুষ্ট হয়েছেন। সুতরাং দেশপ্রেম তাঁর অন্তরে একটা পূর্ণাঙ্গ মূর্তি গ্রহণ করেছিল। তাই রবীন্দ্রনাথ যেন গেয়ে উঠলেন স্বদেশপ্রেমের অমোঘ মন্ত্র -"এবার তোর মরা গাঙে বান এসেছে, জয় মা বলে ভাসা তরী।"

                    প্রথমেই মনে আসে রবীন্দ্রনাথের সেই গানের কথা -"আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি ।"
এখানে জন্মভূমি বাংলার প্রতি প্রকাশ পেয়েছে নাড়ির টান। এ বাংলা সোনার বাংলা। কবির বড় আদরের ,বড় স্নেহের, বড় ভালোবাসার। দেশপ্রেমের বিশুদ্ধ আবেগ থেকে রচিত এই গান। এ বাংলা ঐশ্বর্যে ও সম্পদে পূর্ণ। বাংলার আকাশ ,বাতাস কবির প্রাণে বাঁশি বাজায়। ফাল্গুন মাসের আমের বনের ঘ্রাণ, অঘ্রাণ মাসের ভরা খেত, বাংলার শোভা, স্নিগ্ধ ছায়া, স্নেহ, মায়া ও বাংলা মায়ের সুধা বাণী ভরিয়ে তোলে কবির হৃদয়। মায়ের মলিন বদন কবির চোখে জল আনে। মাতৃভক্ত প্রকৃত সন্তান এমনই হন। বাংলার ধুলো, মাটি কবি অঙ্গে মেখে জীবন ধন্য করতে চান। এখানকার মাটির মানুষ রাখাল, চাষি সকলের সঙ্গে কবি চান একাত্মতা। এ প্রসঙ্গে মনে পড়ে বিবেকানন্দের কথা -" দরিদ্র ভারতবাসী ,মূর্খ ভারতবাসী, চন্ডাল ভারতবাসী"-সকলকেই বিবেকানন্দ নিজের ভাই ও রক্ত রূপে দেখতে চেয়েছেন এবং ভারতবাসীকেও  দেখতে বলেছেন। এই ভাবনা প্রতিফলিত রবীন্দ্রনাথের এ গানেও। এখানে কবি বলছেন - "পরের ঘরে কিনব না আর "এখানে স্বদেশী দ্রব্য ব্যবহার, বিদেশি দ্রব্য বয়কট প্রসঙ্গ এসেছে। বিদেশি দ্রব্য ব্যবহার যেন গলার ফাঁসি। এখানে বিদেশি দ্রব্য ব্যবহারের ফলে দেশীয় শিল্পের সর্বনাশ প্রসঙ্গটিও যেন ইঙ্গিতে  তুলে ধরা হয়েছে। এখানে রবীন্দ্রনাথও যেন রজনীকান্তের মতো বলতে চেয়েছেন একই কথা -"মায়ের দেওয়া মোটা কাপড় মাথায় তুলে নে রে ভাই।"

             রবীন্দ্রনাথের আরেকটি গান - "ও আমার দেশের মাটি তোমার পরে ঠেকাই মাথা ।"দেশের মাটিকে কবি প্রণাম জানাচ্ছেন, তার কাছে নত হচ্ছেন। জননী জন্মভূমি যেন' স্বর্গাদপি গরিয়সী।' জন্মভূমি দেশ একটি ক্ষুদ্র পরিসরে বদ্ধ নয়। কারণ এখানে রয়েছে " বিশ্ব মায়ের আঁচল পাতা।"দেশ জননী বৃহত্তর পৃথিবীর অংশ, তার সঙ্গে সংযুক্ত। জাতীয়তা যেন আন্তর্জাতিকতার সঙ্গে সম্পর্কবদ্ধ। ক্ষুদ্র গণ্ডি অতিক্রম করে দেশ এখানে বিশ্বজনীনতা কে স্পর্শ করেছে। দেশের যোগ দেহের সঙ্গে, মন ও প্রাণের সঙ্গে। একটি দেশের জল, হাওয়া, মন মানসিকতা ,ঐতিহ্য, সংস্কৃতি,শিকড় একটি মানুষের চিন্তা চেতনাকে গড়ে তোলে। এখানেই জন্ম, মৃত্যু, সুখ-দুঃখ সকল খেলা। দেশমাতৃকা অন্নদাত্রী। তিনি সকল সহা, সকল বহা, মাতার মাতা। আমরা দেশের খেয়ে পরে বড় হই। দেশের কাছে আমাদের ঋণের শেষ নেই। কবি আত্মসমীক্ষা করে বলেছেন দেশের কাছ থেকে নিয়েছি অনেক কিন্তু বিনিময়ে দেশকে দিয়েছি কতটুকু? দেশের জন্য আমরা নিজেদেরকে কতটা উৎসর্গ করেছি ? এই প্রশ্ন চিরকালের। আজকের দিনেও এই প্রশ্ন প্রাসঙ্গিক। আমরা যেন স্বার্থপর, আত্মকেন্দ্রিক হয়েছি। নিজের কথা ভাবি কিন্তু দেশের কথা ভাবি না। আমার মধ্যে যে শক্তি দিয়েছেন শক্তিদাতা সেই শক্তিকে আমি দেশের জন্য, মানুষের জন্য, কতটা কাজে লাগালাম। এই চিন্তাগুলো ভাবিত করেছে রবীন্দ্রনাথকে। আর আজ তা ভাবাচ্ছে আমাদেরকেও। আমরা দেশের খেয়ে, পরে ,বড় হয়েও বহু ক্ষেত্রেই দেশকে অবহেলা করছি অকৃতজ্ঞের মত।

                      সামাজিক কাজেই হোক বা দেশ গঠনের কাজেই হোক কেউ যদি আমাদের ডাকে সাড়া না দেয় তবে সে কাজে নিজেকেই অগ্রণী হতে হবে। তাই রবীন্দ্রনাথ বলেছেন- "যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চলো রে।"কাজের দায়িত্ব গ্রহণ করতে যদি মানুষ মুখ ফিরিয়ে নেয় কিংবা ভয় পায় , আরাম বা স্বাচ্ছন্দ্য ত্যাগ করে এগিয়ে আসতে না চাই, তখন পথের কাঁটা রক্তমাখা চরণতলে দলে নিজেকেই এগিয়ে যেতে হবে। "বজ্রানলে বুকের পাঁজর জ্বালিয়ে নিয়ে" একাই চলতে হবে। প্রবল আত্মবিশ্বাসের জোরে মানুষ জয়ী হতে পারে। থেমে গেলে হবে না ,প্রয়োজনে একাই লড়াই চালিয়ে যেতে হবে। আমাদেরকে হতে হবে সংকোচ মুক্ত, আমরা যত সংকোচ যুক্ত হব ততই অপমানিত হব। কখনোই নিজেকে দীন ও নিঃসহায় ভাবা চলবে না। নিজের উপর নির্ভরতা রাখতে হবে। রবীন্দ্রনাথের এই গানটি উজ্জীবনের গান। দেশ গঠনে এগিয়ে আসতে হবে সকল জীবন সাধককে, যোগীকে, ত্যাগীকে, দুঃসহ দুঃখ ভোগীকে ও দুর্জয় শক্তি সম্পদ যুক্ত মুক্ত সমাজকে। জ্ঞানী ও কর্মীকেও দেশের লজ্জা নিবারণ করতে এগিয়ে আসতে হবে। এ প্রসঙ্গে বলতে হয় রবীন্দ্রনাথের আর একটি গান - "বাংলার মাটি বাংলার জল বাংলার বায়ু বাংলার ফল" এর কথা। গানটি বঙ্গভঙ্গের পরিপ্রেক্ষিতে রাখীবন্ধন উৎসব কে কেন্দ্র করে রচিত। আপামর বাঙালিকে হিন্দু মুসলমান নির্বিশেষে এক সূত্রে বেঁধে দেবার জন্য এই গান রচিত। এই গান নিয়ে সেদিন কম উন্মাদনা সৃষ্টি হয়নি। প্রায় সমস্ত বাঙালির কন্ঠে গীত হয়েছিল সেদিন এই সম্প্রীতির উজ্জীবনী সঙ্গীতটি। বাঙালির ঘরের সব ভাই বোন এক হয়ে উঠুক এই প্রার্থনা ধ্বনিত হয়েছে এই গানে। বাঙালির জাতিসত্ত্বার অখণ্ডতা কামনা করেছেন কবি। কবির বিশুদ্ধ স্বদেশপ্রেমের আরেকটি গান -"সার্থক জনম আমার জন্মেছি এই দেশে ।"দেশপ্রেম ও দেশ ভক্তির এক ঐকান্তিক নিদর্শন এই গান। দেশকে কতটা ভালবাসলে কন্ঠে উচ্চারিত হয় এই গান। কবি জানেন তাঁর দেশমাতৃকার রাণীর মত অর্থ-সম্পদ নেই। কিন্তু তিনি স্নেহ সম্পদে পরিপূর্ণা। হৃদয়ের চেয়ে বড় সম্পদ জগতে কি আর আছে! কোন অর্থ মূল্য দিয়ে তাকে বিচার করা যায় না। তাই এখানে জন্মে কবির জীবন সার্থক হয়ে গেছে। এখানে মৃত্যুবরণ করেও জীবন সার্থক হবে। কবিতাই তৃপ্ত কোথাও কোনো আক্ষেপ নেই। তাই আরেকটি গানে কবি বলছেন -"যে তোমায় ছাড়ে ছাড়ুক / আমি তোমায় ছাড়বো না।"দেশ মাতৃকা দরিদ্র হতে পারেন কিন্তু তাঁর হৃদয় রত্ন রাশিতে পরিপূর্ণ। কোন প্রকার মানের জন্য কবি দেশ-বিদেশ ঘুরবেন না। মায়ের ছেঁড়া কাঁথা তাঁর কাছে অনেক বেশি মূল্যবান। তাই কবি দেশমাকে বলেন -"মা কি তুই পরের দ্বারে পাঠাবি তোর ঘরের ছেলে ?"কাঁধে ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে পরের দ্বারে গেলে জুটবে অবহেলা এমনকি তাঁরা ঢেলাও মারবে। আত্মসম্মান বিসর্জন দিয়ে এভাবে পরের কাছে আত্ম বিক্রয় করতে কবি চান না। "দুরন্তআশা" কবিতাতেও রবীন্দ্রনাথ পরের দাসত্ব করার ভয়ংকর পরিণতি সম্পর্কে বাঙালিকে সচেতন করেছেন। পরাধীন ভারতবর্ষের একশ্রেণীর মানুষ যারা ব্রিটিশদের দাসত্ব করেছেন , ভজনা করেছেন তাঁদেরকেও রবীন্দ্রনাথ এখানে সচেতন করেছেন। আমাদের উচিত " ব্যর্থ প্রাণের আবর্জনা পুড়িয়ে ফেলে " আগুন জ্বালানো, আর ভাবনাতে রাখা উচিত " ঝড়ের হাওয়া।"
                            পরিশেষে বলতে হয় রবীন্দ্রনাথের স্বদেশ পর্যায়ের গানগুলি তাঁর আত্মার অভিব্যক্তি। কোথাও এতটুকু খাদ নেই। এই স্বদেশ প্রেম যতটা ঐতিহ্যগত ততটাই কবির ব্যক্তি আত্মার স্বতঃস্ফূর্ত উপলব্ধি জাত। আমরা জানি মানবতাবাদী রবীন্দ্রনাথ বিশ্বনাগরিক। তবু আমরা একটা বিশেষ দেশ ও কালে স্থিত মানুষও। একটা গাছ আকাশের দিকে তার ডালপালা মেলে ধরলেও তার শিকড় কিন্তু বিশেষ একটা জায়গার মাটিতে প্রোথিত থাকে। যেখান থেকে সে সংগ্রহ করে তার পুষ্টির উপাদান ,জীবন রস। তাই রবীন্দ্রনাথ বিশ্ব কিংবা মহাবিশ্বে বিচরণ করলেও তাঁর শিকড় কিন্তু রয়ে গেছে দেশের মাটির গভীরে।

______________________________________________________________________________________

 
ভুবনেশ্বর মন্ডল
সাঁইথিয়া লেবুবাগান
পোস্ট- সাঁইথিয়া
জেলা -বীরভূম।





 

মন্তব্যসমূহ

সপ্তাহের পছন্দ

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 32nd issue: May 2024

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচীপত্র ।। 28th issue: January 2024

ছড়া ।। তোর ।। বিবেকানন্দ নস্কর

লেখা-আহ্বান : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য

প্রচ্ছদ ও সূচীপত্র ।। 25th issue: October 2023

ছড়া ।। সবুজ ঘাসেতে প্রাণ খুঁজে পাই ।। জয়শ্রী সরকার

অনুবাদ ।। কথা না-বলা টিয়া ।। সুস্মিতা পাল

প্রচ্ছদ ও সূচীপত্র ।। 23rd issue: August 2023

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। ষড়ত্রিংশ সংখ্যা ।। সেপ্টেম্বর ২০২৪

মাসের পছন্দ

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। ষড়ত্রিংশ সংখ্যা ।। সেপ্টেম্বর ২০২৪

ছড়া ।। খোকাবাবু ।। মেশকাতুন নাহার

কবিতা ।। মাটির কাছে যায় ।। অবশেষ দাস

ছড়া ।। তোর ।। বিবেকানন্দ নস্কর

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 32nd issue: May 2024

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচীপত্র ।। 28th issue: January 2024

ছড়া ।। বর্ষার উৎসবে ।। আরতি মিত্র

ছড়া ।। পুজোর খুশী ।। আরতি মিত্র

কবিতা ।। ব্যাঘ্রমশাই ।। দীনেশ সরকার

বছরের পছন্দ

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। ত্রয়োত্রিংশ সংখ্যা ।। জুন ২০২৪

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচীপত্র ।। 29th Issue: February

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। চতুর্ত্রিংশ সংখ্যা ।। জুলাই ২০২৪

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 31st issue: April 2024

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 32nd issue: May 2024

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 30th issue : March 2024

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। পঞ্চত্রিংশ সংখ্যা ।। আগষ্ট ২০২৪

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। ষড়ত্রিংশ সংখ্যা ।। সেপ্টেম্বর ২০২৪

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচীপত্র ।। 26th issue: November 2023

অতি প্রিয়

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। আত্মপ্রকাশ সংখ্যা ।। অক্টোবর ২০২১

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। দ্বিতীয় সংখ্যা ।। নভেম্বর ২০২১

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 4th issue: January 2022,

নিবন্ধ ।। শিশু-কিশোর সাহিত্যবলয়ে শিশুরাই যেন ব্রাত‍্য না থাকে ।। অরবিন্দ পুরকাইত

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 7th issue: April 2022

নিবন্ধ ।। দেশীয় উদ্ভিদ কেন গুরুত্বপূর্ণ ? ।। ডঃ চিত্তরঞ্জন দাস

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। কিশলয় - ১০ ।। জুলাই ২০২২

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। কিশলয় - ১১ ।। আগস্ট ২০২২

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র : 8th issue: May 2022

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 5th issue: February 2022