চারটি কবিতা ।। সুশান্ত সেন
কথা
আমার কথা শুনলে পরে হতো না আর পস্তাতে
টাকা তুলে রাখতে তুমি আলমারিতে নয় বস্তাতে,
হিসেব কোনোই থাকতো না আর বেহিসাবি মৌতাতে
রাবড়ি আর গাওয়া লুচি খেতে পেতে রোজ রাতে।
আমার কথা শুনলো যারা সকাল বিকেল রাত্রি তে
এখন তারা হিমগিরিতে হিমালয়ের যাত্রী রে।
পাড়ার বিশু যখন এসে দুঃখ করে বললো ভাই
মনে আমার বেজায় ব্যথা ভালো হবার দাওয়াই চাই;
শুনিয়ে দিলাম তখন তাকে বীরবাহুর যাত্রা পথ
তারই সাথে শিখিয়ে দিলাম বেহাগ সুরের তিনটে গৎ
সেই পথেতে চলে চলে বাজিয়ে বীণা শিখল সুর
মনের ব্যথা পালিয়ে গেল 'বাপ রে ' বলে অনেক দূর।
তাই ত বলি চুপটি বসে আমার কথা বেবাক শোন
চোখটা বুজে সকাল সকাল একশ থেকে পাঁচশ গোন।
হটাৎ
হটাৎ করে পা পিছলে পড়ে গেলাম জোরে
বলল সবাই কেন তোরই মাথা কেবল ঘোরে
চারপাশে ত যাচ্ছে দেখা হরেক রকম মাথা
সে সব মাথা সরেস বড়, তোর মাথাটা যা থা ।
সব মাথারা চলছে সোজা বড় রাস্তা ধরে
উচিয়ে মাথা কুচকাওয়াজে পাড়া গরম করে,
তার মধ্যে তোর মাথাটা আলাদা হয় কেন ?
দেব দ্বিজে ভক্তি তোর একটুও নেই যেন !
হটাৎ করে তোর মাথাটা কেন যে যায় ঘুরে
মুন্ডু টাকে আলাদা কর, ফেলেদে তাকে ছুঁড়ে।
তখন অনেক শান্তি পাবি পাঁচ রাস্তার মোড়ে
সবাই এসে বলবে তোকে পা দুখানি ধরে
মুন্ডু হারা রাজা তুমি রাজ্য টাকে ধরো
শাসন করার শতেক নিয়ম এবার চালু কর ।
রাত্রি হলে
ঢেউ উঠলো পাতায় পাতায়
ঢেউ উঠলো ঘাসে
রাত্রি হলে গাছের গোড়ায়
পেত্নী বুড়ি হাসে।
সাদা আলোয় দিক ভরে যায়
ঘাড়ে লাগে নিশ্বাস
লম্বা লম্বা ঝাউগাছ গুলো
টলায় যে বিশ্বাস।
দাঁত কিড়মিড় ছায়া গুলো সব
খাচ্ছে ছাগল ছানা
মনের ভেতর কেঁপে ওঠে মন
করছে শতেক মানা।
রাত্রি হলেই সবাই ত জানে
দত্তি দানব আসে
ঢেউ উঠে পড়ে পাতায় পাতায়
চোখ বুজে আসে ত্রাসে।
ভ্রমণ রঙ্গ
আজ যাবো মধুপুর কাল যাবো দেরাদুন
কচ্চ সাগরে যাবো পেয়ে যাবো সেরা নুন।
সিমলা ও যেতে পারি যেতে পারি মণিপুর
হয়তো বা চলে যাবো নাক সোজা জয়পুর,
ইচ্ছে যখন হল পা বাড়িয়ে রেখেছি
ভ্রমণ পথের সুধা পদে পদে চেখেছি।
আফ্রিকা ইউরোপ কোথায় না যেতে চাই
সীমাহীন সমুদ্র খোলা আছে দেখ ভাই,
নানা দেশ ঘুরে ফেলা এতটুকু সোজা নয়
নানা ভাষা নানা দাবি বাঁধা দেয় নিশ্চয়।
সব বাঁধা টপকিয়ে মানুষের আঙিনায়
মনটা সবুজ হয়ে বারবার যেতে চায়।
===============
সুশান্ত সেন
৩২বি, শরৎ বসু রোড
কলিকাতা ৭০০০২০
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন