ভালোবাসার সেবক
আনন্দ বক্সী
ভালোবাসা ভরা ছিল যাঁর অন্তর
ঈশ্বর-দূত সে কি? না কি ঈশ্বর?
ছিলেন না তিনি কোন পাকা অভিনেতা
বা আজকে দিনের সে কোন জননেতা।
তাঁর অন্তরে ছিল ক্ষমাশীল মন
ওটাইতো মানুষের অমূল্য ধন।
টানতেন কাছে তিনি দিয়ে বাগ্মীতা
করতেন সহজেই সকলকে মিতা।
দরদি হৃদয়ে তাঁর ছিল না যে খুঁত
আকর্ষণ ক্ষমতা সেও অদ্ভুত।
দারিদ্রে ভরা ছিল তাঁর সে জীবন
লড়েছেন তার সাথে তিনি আজীবন।
বেথেলহেম গ্রামের তিনি সন্তান বীর
পুত্র ছিলেন তিনি যোসেফ-মেরীর।
ভালোবাসা-স্নেহ দিয়ে গড়া যাঁর দেহ
যিশু খ্রিষ্টই তিনি নন আর কেহ।
খ্রিষ্টান ধর্মের তিনি প্রচারক
দয়া-মায়া-মমতার মহান সেবক।
প্রচার করে যে ওই ঈশ্বর-বাণী
আম জনতাকে তিনি কাছে নেন টানি।
বোঝাতেন তিনি সব গল্পের ছলে
সুমধুর হতো তা সে কন্ঠের বলে।
তাঁর অমৃতবাণী শোনার আশায়
বহু লোক কাছে এলো মহা ভরসায়।
বললেন তাদেরকে তিনি দৃঢ়ভাবে
সত্যের পথে গেলে ঈশ্বর পাবে।
ওই পথে যেতে পাবে নানারূপ বাধা
সে পথে রয়েছে যেন বাঁক একগাদা।
জগৎপিতার কাছে যেতে যদি চাও
সত্যের পথটাকে আগে ধরে নাও।
তাঁর কাছে যেতে হলে চাই মনোযোগ
ত্যাগ আর সাধনার মহা সংযোগ।
ধর্মের নামে ওই হত্যা পশুর
মনকে নাড়াতো তাঁর করতো আতুর।
পশু হত্যার তিনি ছিলেন বিরোধী
চেষ্টা চালিয়ে যান তিনি নিরবধি।
পশুবিক্রেতাদের দিলেন তাড়িয়ে
চলে গেল তারা সব ব্যবসা হারিয়ে।
পশুবিক্রেতাগণ হলো বিদ্রোহী
খেতাব পেলেন তিনি 'ঈশ্বরদ্রোহী'।
লোভ-হিংসার কাছে মানলেন হার
ধর্মীয়গোঁড়ামীর হলেন শিকার।
বিশ্বাসঘাতকতা পেলেন যে শেষে
শিষ্যের কাছ থেকে তিনি অবশেষে।
আসেনি কখনো যেটা তাঁর ধারণাতে
ব্রুটাস ধরাবে তাঁকে শত্রুর হাতে।
প্রহসন হলো খুব বিচারের নামে
প্রাণদন্ডই হয় শেষে পরিনামে।
ভীষণ নিষ্ঠুরতা পান শেষটাতে
ক্রশেতে বিদ্ধ করে মারা হয় তাঁকে।
অকালেই চলে গেল প্রাণ তরতাজা
ধর্মান্ধ লোকেরা দিলো তাঁকে সাজা।
শেষ কথা বলে যান না ফেরার দেশে
'ক্ষমা করে দিও প্রভু সবে ভালোবেসে।
জানেনাতো কিছু এরা অবুঝ-অবোধ
এদের মনেতে ভরো তুমি শুভবোধ'।
নিতে হলে নিজেদের অন্তর জ্বেলে
সত্যের বাণী তাঁর পাবে 'বাইবেলে'।
আর্তের তিনি সদা ছিলেন তারক
মানুষ হিসাবে সে যে বড় উপকারক।
আনন্দ বক্সী ।। গ্রাম-বেলিয়াডাঙ্গা,ডাক-দক্ষিণ বারাশত, থানা-জয়নগর, জেলা-দক্ষিণ ২৪ পরগনা, সূচক-৭৪৩৩৭২।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন