Featured Post

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। কিশলয় ৪১ ।। এপ্রিল ২০২৫

ছবি
[প্রচ্ছদচিত্রঃ : ইন্টারনেট মাধ্যম থেকে সংগৃহীত ]    সম্পাদকীয় ক্রমে গ্রীষ্মের দিন এসে গেল। নতুন বছরের দোরগোড়ায় আমরা। কৃষ্ণচূড়া আর পলাশের সমারোহে রাঙা হয়ে রয়েছে চতুর্দিক। কচি কচি আমে ভরে আছে গাছগুলো। ছুটির দিনে বেশ লাগে কাঁচামিঠে আম খেতে খেতে বন্ধুদের সাথে গল্প করা। সব ঋতুরই একটা নিজস্ব সৌন্দর্য আছে। শুধু দেখার চোখ আর অনুভবের মন দরকার।  সামনেই চড়ক উৎসব, মেলা। শিবের গাজনে ভক্ত সন্ন্যাসীদের অদ্ভুত সব কসরত দেখতে পাওয়া যায়। চড়কের মেলা শেষ হলেই আবার শুভ নববর্ষে বেশ নতুন জামা পরে ঘুরে বেড়ানো, খাওয়া দাওয়া, হালখাতায় দোকানে দোকানে নতুন ক্যালেন্ডার, মিষ্টি এসব নিয়ে আসা। মেশ মজাতেই কাটবে আগামী কয়েকটা দিন।  এই আনন্দ উৎসবের মাঝে একটু গল্প উপন্যাস পড়া, লেখালিখি,আঁকার জন্যও একটু সময় দিও। সৃজনশীল কাজে একটা বেশ আনন্দ আছে, তাই না?  নিজেদের লেখা আঁকার বিষয়ে তোমরা আগামী দিনে যাতে পটু হতে পারো তার জন্যই তো তোমাদের কিশলয়ের পাতা রয়েছে।  দ্বিধাহীন ভাবে নিজেদের সকল লেখা আঁকা পাঠিয়ে যাও নিয়মিত।  এভাবেই কিশলয় গজিয়ে উঠুক, প্রাণবন্ত হয়ে উঠুক তোমাদের সবুজ প্রাণের আবেগ মেশানো সৃষ্টি...

জ্ঞানবিজ্ঞান || অষ্টম মহাদেশ ।। শ্যামল হুদাতী

অষ্টম মহাদেশ 

শ্যামল হুদাতী



আজ থেকে প্রায় ৮ কোটি ৩০ লক্ষ বছর আগে এক অতি মহাদেশ ছিল এই পৃথিবীতে। সেই অধিকার স্বরবাগ একসময় ভেঙে যায়। টুকরো টুকরো হয়ে তৈরি হয় নতুন মহাদেশ। সেই সময় তৈরি হয়েছিল জিল্যান্ডিয়া।

আজকের নিউজিল্যান্ডের নর্থ ও সাউথ আইল্যান্ড থেকে শুরু করে হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জ, বল'স পিরামিড কিংবা নিউ ক্যালেডোনিয়া এই সবটা নিয়েই তৈরি হয়েছে অস্ঠম মহাদেশ জিল্যান্ডিয়া। অর্থাৎ টুকরো টুকরো অংশ দিয়ে তৈরি হয়েছে এই নতুন মহাদেশ। সম্পূর্ণরূপে নিমজ্জিত হতে পারে।

ভারতীয় উপমহাদেশের চেয়েও যথেষ্ট বড়। বিভিন্ন ভূতাত্ত্বিক বিবেচনার কারণে, যেমন ভূত্বকের বেধ এবং ঘনত্বের কারণে, নিউজিল্যান্ড এবং অস্ট্রেলিয়ার কিছু ভূতাত্ত্বিক এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন যে জিল্যান্ডিয়া একটি ক্ষুদ্র মহাদেশের পরিবর্তে একটি মহাদেশ হিসাবে বিবেচনা করার জন্য সমস্ত প্রয়োজনীয়তা পূরণ করে।

সাত মহাদেশের বাইরেও এক আলাদা স্থলভাগ ছিল পৃথিবীতে। নাম জিল্যান্ডিয়া। কিন্তু দীর্ঘদিন চোখের সামনে থেকেও নিখোঁজ ছিল সেই অষ্টম 'মহাদেশ'। অবশেষে তার খোঁজ পেলেন বিজ্ঞানীরা। এই প্রথম পৃথিবীর অষ্টম মহাদেশের মানচিত্র আঁকা হল। জানা গেল এই অষ্টম 'মহাদেশ' পৃথিবীর কতটা জুড়ে ছিল।

আজ থেকে ৮ কোটি ৩০ লক্ষ বছর আগে এক অতিমহাদেশ ছিল এই পৃথিবীতে। সেই অতিকায় স্থলভাগ এক সময়ে ভেঙে যায়। টুকরো টুকরো হয়ে তৈরি হয় নতুন মহাদেশ। সেই সময়েই তৈরি হয়েছিল জিল্যান্ডিয়া। বিজ্ঞানীরা পরীক্ষা করে দেখেছেন, এই অষ্টম মহাদেশের বয়স কম করে ১০০ কোটি বছর। তবে প্রাকৃতিক কারণে একটা সময়ে জলের নীচে চলে যায় এই মহাদেশ। জেগে থাকে শুধু ছিটে ফোঁটা কিছু দ্বীপ। তারই একটি নিউজিল্যান্ড। একই আকৃতির আরও কিছু দ্বীপ রয়েছে চার পাশে। কিন্তু সেই সব ওই মহাদেশের কেবল ৬ শতাংশ। বাকি ৯৪ শতাংশ ডুবে আছে জলের নীচে।

৩৭৫ বছর আগে এই মহাদেশের কথা বলেছিলেন এক ডাচ নাবিক। সেটা ছিল ১৬৪২ খ্রীষ্টাব্দ। তার পর ২০১৭ সালে ভূতত্ত্ববিদেরা জিল্যান্ডিয়া আবিষ্কার করেন। তার পর আরও ছ'বছর কেটে গিয়েছে। অবশেষে জিল্যান্ডিয়ার সীমারেখাও আঁকতে পারলেন বিজ্ঞানীরা। সংবাদ সংস্থা বিবিসি জানিয়েছে, প্রায় ৫০ লক্ষ বর্গ কিলোমিটার জুড়ে বিস্তৃত এই মহাদেশে। যার আরেক নাম তে রিউয়া মাউয়ি।

ফিজ ডট ওআরজি নামে এক সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, জিল্যান্ডের নতুন মানচিত্রের বিশদ প্রকাশিত হয়েছে টেকটনিক্স নামের একটি জার্নালে। আপাতত বিজ্ঞানীরা সমুদ্রের তলায় ডুবে থাকা জিল্যান্ডিয়ার পাথর ছেঁচে পুরনো ইতিহাস খোাঁজার চেষ্টা করছেন।


জিল্যান্ডিয়া একটি নিমজ্জিত মহাদেশীয় ভূখণ্ড। দক্ষিণ-পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরের নিচে এর অবস্থান। ১৯৬০ সালে তেলের খনি অনুসন্ধানের সময় 'জিল্যান্ডিয়া'র মহাদেশীয় অস্তিত্ব বিষয়ে প্রথমবারের মতো নিশ্চিত হয় বিজ্ঞানীরা। নিউজিল্যান্ড রাষ্ট্র এই মহাদেশের একমাত্র দৃশ্যমান পর্বত চূড়া। বর্তমানে সাতটি মহাদেশের বাইরে জিল্যান্ডিয়াকে অষ্টম মহাদেশ হিসেবে ঘোষণার জোরালো দাবি জানাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। স্বীকৃতি পেলে জিল্যান্ডিয়া হবে পৃথিবীর অষ্টম এবং সবচেয়ে ক্ষুদ্রতম মহাদেশ।

জিল্যান্ডিয়ার আয়তন ৪.৯ মিলিয়ন বর্গ কিলোমিটার। আকারে ভারতীয় উপমহাদেশের প্রায় সমান এবং ইউরোপের অর্ধেক। পানির ওপরে আছে মহাদেশটির মাত্র ৬ শতাংশ। খনিজ সম্পদের প্রাচুর্যপূর্ণ জিল্যান্ডিয়া—নিউজিল্যান্ড মহাদেশ বা তাসমান্টিস নামেও পরিচিত।


জিল্যান্ডিয়া মহাদেশীয় ভূখণ্ডের শুধুমাত্র নিউজিল্যান্ডের নর্থ ও সাউথ আইল্যান্ড এবং নিউ ক্যালেডোনিয়া-ই পানির ওপরে মাথা তুলে আছে। জিওলজিক্যাল সোসাইটি অব আমেরিকায় প্রকাশিত এক গবেষণা নিবন্ধনে বিজ্ঞানীরা বলেন, জিল্যান্ডিয়ার আয়তন পার্শ্ববর্তী অস্ট্রেলিয়ার প্রায় দুই-তৃতীয়াংশের সমান।


বহুবছর ধরে প্রশান্ত মহাসাগরের বুকে ডুবে আছে এই মহাদেশ। এর বৈচিত্র্যময় ভূখণ্ডে আগ্নেয় এবং রূপান্তরিত ও পাললিক শিলা রয়েছে। বিজ্ঞানীরা জানান, মহাদেশটি আকস্মিকভাবে খুঁজে পাওয়া গেছে তা নয়, বরং ধীরে ধীরে এর অস্তিত্ব দেখা গেছে। ২০ কোটি বছর আগে গন্ডোয়ানাল্যান্ড থেকে আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া, অ্যান্টার্কটিকা ও ভারত ভূখণ্ড বিচ্ছিন্ন হওয়ার সময় তলিয়ে গিয়েছিল জিল্যান্ডিয়া। জিল্যান্ডিয়া ও অস্ট্রেলিয়া মহাদেশ প্রায় সাড়ে ৮ থেকে ১৩ কোটি বছর আগে বিচ্ছিন্ন হয় অ্যান্টার্কটিকা থেকে। ৬ থেকে ৮.৫ কোটি বছর আগে জিল্যান্ডিয়া বিচ্ছিন্ন হয় অস্ট্রেলিয়া মহাদেশ থেকেও। এরপর ক্রমশ এটি পানিতে নিমজ্জিত হতে থাকে। ধারণা করা হয়, ২.৩ কোটি বছর আগে সম্পূর্ণ মহাদেশটিই নিমজ্জিত ছিল।

জিল্যান্ডিয়া পানির নিচে ডুবে থাকা এক মহাদেশ—এই ধারণা সাম্প্রতিককালের নয়। হার্স্টহাউজ, যিনি বিজ্ঞানী নন, তার সময়ে ভৌগোলিক জরিপও হয়নি, ১৮৫৭ সালে নিউজিল্যান্ডের এক প্রথম দিককার ঔপনিবেশিক, তার বই 'New Zealand or Zealandia, the Britain of the South'-এ লিখেছিলেন, "নিউজিল্যান্ডের ভূপ্রকৃতি এই তত্ত্বকে নির্দেশ করে যে এটি মূলত অনেক বড় কোনো মহাদেশের একটি অংশ, যেটি দীর্ঘসময় আগে পানিতে নিমজ্জিত হয়ে গেছে।"

২০০২ সালে ব্যাথিমেট্রিক মানচিত্র প্রণয়নের মাধ্যমে জানা যায়, জিল্যান্ডিয়া একটি বিশাল অঞ্চলজুড়ে ব্যাপ্ত, সমন্বিত ভূখণ্ডও বটে। মহাদেশ হিসেবে স্বীকৃতি পেতে ভূখণ্ডের বিভিন্ন ধরনের শিলার উপস্থিতি, গভীরতা, টিলাসহ যেসব বৈশিষ্টের দরকার তার সবকটিই পূরণ করেছে এই মহাদেশীয় ভূখণ্ড—দাবি বিজ্ঞানীদের।

---------------

শ্যামল হুদাতী 
৩৫৭/১/১৩/১, প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোড 
কলকাতা ৭০০০৬৮






 

মন্তব্যসমূহ

সপ্তাহের পছন্দ

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। কিশলয় ৪১ ।। এপ্রিল ২০২৫

অণুগল্প ।। তিথি ।। দেবাঞ্জন প্রামাণিক

ছোটদের আঁকিবুঁকি 41st Issue: April 2025,

ছড়া ।। খোকার পাঠশালা ।। প্রবোধ কুমার মৃধা

ছড়া ।। নতুন বছর ।। রঞ্জন কুমার মণ্ডল

ছড়া ।। চ্যাটার্জি বাড়ির চার পোষ্য ।। জয়শ্রী বন্দ্যোপাধ্যায়

ছড়া ।। সত্যি হল ।। সুশান্ত সেন

ছড়া ।। দুর্ভাবনা ।। সুদামকৃষ্ণ মন্ডল

ছড়া ।। মিতুলের কথা ।। গোবিন্দ মোদক

ছড়া ।। ইতিহাসের ক্লাসে ।। ভাগ্য‌ধর হাজারী

মাসের পছন্দ

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। কিশলয় ৪১ ।। এপ্রিল ২০২৫

অণুগল্প ।। তিথি ।। দেবাঞ্জন প্রামাণিক

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। কিশলয় ৪০ ।। মার্চ ২০২৫

ছোটদের আঁকিবুঁকি 41st Issue: April 2025,

গোয়েন্দা গল্প ।। চতুর বিড়ালের কীর্তি ।। ইয়াছিন ইবনে ফিরোজ

ছড়া ।। খোকার পাঠশালা ।। প্রবোধ কুমার মৃধা

ছড়া ।। নতুন বছর ।। রঞ্জন কুমার মণ্ডল

ছড়া ।। চ্যাটার্জি বাড়ির চার পোষ্য ।। জয়শ্রী বন্দ্যোপাধ্যায়

ছড়া ।। সত্যি হল ।। সুশান্ত সেন

ছড়া ।। দুর্ভাবনা ।। সুদামকৃষ্ণ মন্ডল

বছরের পছন্দ

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। কিশলয় ৪০ ।। মার্চ ২০২৫

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 38th issue: January 2025

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সুচিপত্র ।। 37th issue: December 2024

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। ত্রয়োত্রিংশ সংখ্যা ।। জুন ২০২৪

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। চতুর্ত্রিংশ সংখ্যা ।। জুলাই ২০২৪

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 31st issue: April 2024

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। ,39th issue: February 2025

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 32nd issue: May 2024

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। কিশলয় ৪১ ।। এপ্রিল ২০২৫

অতি প্রিয়

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। আত্মপ্রকাশ সংখ্যা ।। অক্টোবর ২০২১

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। দ্বিতীয় সংখ্যা ।। নভেম্বর ২০২১

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 4th issue: January 2022,

নিবন্ধ ।। শিশু-কিশোর সাহিত্যবলয়ে শিশুরাই যেন ব্রাত‍্য না থাকে ।। অরবিন্দ পুরকাইত

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 7th issue: April 2022

নিবন্ধ ।। দেশীয় উদ্ভিদ কেন গুরুত্বপূর্ণ ? ।। ডঃ চিত্তরঞ্জন দাস

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। কিশলয় - ১০ ।। জুলাই ২০২২

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। কিশলয় - ১১ ।। আগস্ট ২০২২

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র : 8th issue: May 2022

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। কিশলয় - ১২ ।। সেপ্টেম্বর ২০২২