Featured Post

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। কিশলয় ৪৫ ।।আগস্ট, ২০২৫

ছবি
সম্পাদকীয় প্রিয় বন্ধুরা, আবার এল আগস্ট মাস। ছাতা মাথায় বৃষ্টি ভেজা দিন, স্কুলে দেরি, আর খেলার মাঠে কাদামাটি—সব মিলিয়ে একেবারে অ্যাডভেঞ্চারের মরশুম! তবে আগস্ট মানে শুধু বৃষ্টির দুষ্টুমি নয়, স্বাধীনতারও মাস। ভাবো তো, যদি আমাদের দেশ স্বাধীন না হতো, তবে কি আজ আমরা এত মজা করে খেলাধুলা, গান, পড়াশোনা করতে পারতাম? স্বাধীনতা মানেই সুযোগ—যে সুযোগ দিয়ে তোমরা নিজেদের স্বপ্ন গড়ে তুলতে পারো। কিন্তু সেই স্বাধীনতার পথে কত আত্মত্যাগ, কত রক্ত, কত অশ্রু লুকিয়ে আছে—তা ভোলা যায় না। আজকের কিশোররা যদি সেই ত্যাগের ইতিহাস মনে রাখে, তবে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম কখনো পথ হারাবে না। তোমাদের হাতে আজকের কলমই আগামী দিনের অস্ত্র—যা দিয়ে গড়ে উঠবে বিজ্ঞান, সাহিত্য, শিল্প আর মানবিকতার এক নতুন পৃথিবী।  এই সংখ্যায় পাবে ভ্রমণের উপন্যাস, নিবন্ধ, গল্প  আর তোমাদের জন্য লেখা দারুণ সব ছড়া আর কবিতা। পড়ে দেখো, আর তোমাদেরও লেখা বা আঁকা আমাদের পাঠিয়ে দিও—আগামী সংখ্যায় প্রকাশের জন্য।   সকলে ভালো থেকো, আনন্দে থেকো।       শুভকামনাসহ-- প্রিয়ব্রত দত্ত ও কার্তিক চন্দ্র পাল। কার্যনির...

জ্ঞানবিজ্ঞান || অষ্টম মহাদেশ ।। শ্যামল হুদাতী

অষ্টম মহাদেশ 

শ্যামল হুদাতী



আজ থেকে প্রায় ৮ কোটি ৩০ লক্ষ বছর আগে এক অতি মহাদেশ ছিল এই পৃথিবীতে। সেই অধিকার স্বরবাগ একসময় ভেঙে যায়। টুকরো টুকরো হয়ে তৈরি হয় নতুন মহাদেশ। সেই সময় তৈরি হয়েছিল জিল্যান্ডিয়া।

আজকের নিউজিল্যান্ডের নর্থ ও সাউথ আইল্যান্ড থেকে শুরু করে হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জ, বল'স পিরামিড কিংবা নিউ ক্যালেডোনিয়া এই সবটা নিয়েই তৈরি হয়েছে অস্ঠম মহাদেশ জিল্যান্ডিয়া। অর্থাৎ টুকরো টুকরো অংশ দিয়ে তৈরি হয়েছে এই নতুন মহাদেশ। সম্পূর্ণরূপে নিমজ্জিত হতে পারে।

ভারতীয় উপমহাদেশের চেয়েও যথেষ্ট বড়। বিভিন্ন ভূতাত্ত্বিক বিবেচনার কারণে, যেমন ভূত্বকের বেধ এবং ঘনত্বের কারণে, নিউজিল্যান্ড এবং অস্ট্রেলিয়ার কিছু ভূতাত্ত্বিক এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন যে জিল্যান্ডিয়া একটি ক্ষুদ্র মহাদেশের পরিবর্তে একটি মহাদেশ হিসাবে বিবেচনা করার জন্য সমস্ত প্রয়োজনীয়তা পূরণ করে।

সাত মহাদেশের বাইরেও এক আলাদা স্থলভাগ ছিল পৃথিবীতে। নাম জিল্যান্ডিয়া। কিন্তু দীর্ঘদিন চোখের সামনে থেকেও নিখোঁজ ছিল সেই অষ্টম 'মহাদেশ'। অবশেষে তার খোঁজ পেলেন বিজ্ঞানীরা। এই প্রথম পৃথিবীর অষ্টম মহাদেশের মানচিত্র আঁকা হল। জানা গেল এই অষ্টম 'মহাদেশ' পৃথিবীর কতটা জুড়ে ছিল।

আজ থেকে ৮ কোটি ৩০ লক্ষ বছর আগে এক অতিমহাদেশ ছিল এই পৃথিবীতে। সেই অতিকায় স্থলভাগ এক সময়ে ভেঙে যায়। টুকরো টুকরো হয়ে তৈরি হয় নতুন মহাদেশ। সেই সময়েই তৈরি হয়েছিল জিল্যান্ডিয়া। বিজ্ঞানীরা পরীক্ষা করে দেখেছেন, এই অষ্টম মহাদেশের বয়স কম করে ১০০ কোটি বছর। তবে প্রাকৃতিক কারণে একটা সময়ে জলের নীচে চলে যায় এই মহাদেশ। জেগে থাকে শুধু ছিটে ফোঁটা কিছু দ্বীপ। তারই একটি নিউজিল্যান্ড। একই আকৃতির আরও কিছু দ্বীপ রয়েছে চার পাশে। কিন্তু সেই সব ওই মহাদেশের কেবল ৬ শতাংশ। বাকি ৯৪ শতাংশ ডুবে আছে জলের নীচে।

৩৭৫ বছর আগে এই মহাদেশের কথা বলেছিলেন এক ডাচ নাবিক। সেটা ছিল ১৬৪২ খ্রীষ্টাব্দ। তার পর ২০১৭ সালে ভূতত্ত্ববিদেরা জিল্যান্ডিয়া আবিষ্কার করেন। তার পর আরও ছ'বছর কেটে গিয়েছে। অবশেষে জিল্যান্ডিয়ার সীমারেখাও আঁকতে পারলেন বিজ্ঞানীরা। সংবাদ সংস্থা বিবিসি জানিয়েছে, প্রায় ৫০ লক্ষ বর্গ কিলোমিটার জুড়ে বিস্তৃত এই মহাদেশে। যার আরেক নাম তে রিউয়া মাউয়ি।

ফিজ ডট ওআরজি নামে এক সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, জিল্যান্ডের নতুন মানচিত্রের বিশদ প্রকাশিত হয়েছে টেকটনিক্স নামের একটি জার্নালে। আপাতত বিজ্ঞানীরা সমুদ্রের তলায় ডুবে থাকা জিল্যান্ডিয়ার পাথর ছেঁচে পুরনো ইতিহাস খোাঁজার চেষ্টা করছেন।


জিল্যান্ডিয়া একটি নিমজ্জিত মহাদেশীয় ভূখণ্ড। দক্ষিণ-পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরের নিচে এর অবস্থান। ১৯৬০ সালে তেলের খনি অনুসন্ধানের সময় 'জিল্যান্ডিয়া'র মহাদেশীয় অস্তিত্ব বিষয়ে প্রথমবারের মতো নিশ্চিত হয় বিজ্ঞানীরা। নিউজিল্যান্ড রাষ্ট্র এই মহাদেশের একমাত্র দৃশ্যমান পর্বত চূড়া। বর্তমানে সাতটি মহাদেশের বাইরে জিল্যান্ডিয়াকে অষ্টম মহাদেশ হিসেবে ঘোষণার জোরালো দাবি জানাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। স্বীকৃতি পেলে জিল্যান্ডিয়া হবে পৃথিবীর অষ্টম এবং সবচেয়ে ক্ষুদ্রতম মহাদেশ।

জিল্যান্ডিয়ার আয়তন ৪.৯ মিলিয়ন বর্গ কিলোমিটার। আকারে ভারতীয় উপমহাদেশের প্রায় সমান এবং ইউরোপের অর্ধেক। পানির ওপরে আছে মহাদেশটির মাত্র ৬ শতাংশ। খনিজ সম্পদের প্রাচুর্যপূর্ণ জিল্যান্ডিয়া—নিউজিল্যান্ড মহাদেশ বা তাসমান্টিস নামেও পরিচিত।


জিল্যান্ডিয়া মহাদেশীয় ভূখণ্ডের শুধুমাত্র নিউজিল্যান্ডের নর্থ ও সাউথ আইল্যান্ড এবং নিউ ক্যালেডোনিয়া-ই পানির ওপরে মাথা তুলে আছে। জিওলজিক্যাল সোসাইটি অব আমেরিকায় প্রকাশিত এক গবেষণা নিবন্ধনে বিজ্ঞানীরা বলেন, জিল্যান্ডিয়ার আয়তন পার্শ্ববর্তী অস্ট্রেলিয়ার প্রায় দুই-তৃতীয়াংশের সমান।


বহুবছর ধরে প্রশান্ত মহাসাগরের বুকে ডুবে আছে এই মহাদেশ। এর বৈচিত্র্যময় ভূখণ্ডে আগ্নেয় এবং রূপান্তরিত ও পাললিক শিলা রয়েছে। বিজ্ঞানীরা জানান, মহাদেশটি আকস্মিকভাবে খুঁজে পাওয়া গেছে তা নয়, বরং ধীরে ধীরে এর অস্তিত্ব দেখা গেছে। ২০ কোটি বছর আগে গন্ডোয়ানাল্যান্ড থেকে আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া, অ্যান্টার্কটিকা ও ভারত ভূখণ্ড বিচ্ছিন্ন হওয়ার সময় তলিয়ে গিয়েছিল জিল্যান্ডিয়া। জিল্যান্ডিয়া ও অস্ট্রেলিয়া মহাদেশ প্রায় সাড়ে ৮ থেকে ১৩ কোটি বছর আগে বিচ্ছিন্ন হয় অ্যান্টার্কটিকা থেকে। ৬ থেকে ৮.৫ কোটি বছর আগে জিল্যান্ডিয়া বিচ্ছিন্ন হয় অস্ট্রেলিয়া মহাদেশ থেকেও। এরপর ক্রমশ এটি পানিতে নিমজ্জিত হতে থাকে। ধারণা করা হয়, ২.৩ কোটি বছর আগে সম্পূর্ণ মহাদেশটিই নিমজ্জিত ছিল।

জিল্যান্ডিয়া পানির নিচে ডুবে থাকা এক মহাদেশ—এই ধারণা সাম্প্রতিককালের নয়। হার্স্টহাউজ, যিনি বিজ্ঞানী নন, তার সময়ে ভৌগোলিক জরিপও হয়নি, ১৮৫৭ সালে নিউজিল্যান্ডের এক প্রথম দিককার ঔপনিবেশিক, তার বই 'New Zealand or Zealandia, the Britain of the South'-এ লিখেছিলেন, "নিউজিল্যান্ডের ভূপ্রকৃতি এই তত্ত্বকে নির্দেশ করে যে এটি মূলত অনেক বড় কোনো মহাদেশের একটি অংশ, যেটি দীর্ঘসময় আগে পানিতে নিমজ্জিত হয়ে গেছে।"

২০০২ সালে ব্যাথিমেট্রিক মানচিত্র প্রণয়নের মাধ্যমে জানা যায়, জিল্যান্ডিয়া একটি বিশাল অঞ্চলজুড়ে ব্যাপ্ত, সমন্বিত ভূখণ্ডও বটে। মহাদেশ হিসেবে স্বীকৃতি পেতে ভূখণ্ডের বিভিন্ন ধরনের শিলার উপস্থিতি, গভীরতা, টিলাসহ যেসব বৈশিষ্টের দরকার তার সবকটিই পূরণ করেছে এই মহাদেশীয় ভূখণ্ড—দাবি বিজ্ঞানীদের।

---------------

শ্যামল হুদাতী 
৩৫৭/১/১৩/১, প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোড 
কলকাতা ৭০০০৬৮






 

মন্তব্যসমূহ

সূচিপত্র

আরও দেখান

সপ্তাহের পছন্দ

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। কিশলয় ৪৫ ।।আগস্ট, ২০২৫

কিশোর ভ্রমণ উপন্যাস ।। তিতলির বিশ্বভ্রমণ ।। ডাঃ অরুণ চট্টোপাধ্যায়

ছোটদের আঁকিবুঁকি ।। কিশলয় মাসিক পত্রিকা ।। পঞ্চচত্বারিংশ সংখ্যা ।। আগস্ট ২০২৫

গল্প ।। মেজমামার অদ্ভুত কান্ড ।। অঞ্জনা মজুমদার

ছড়া ।। ভাবছে খোকন ।। দীনেশ সরকার

ছড়া ।। খুশীর বন্যা ।। আরতি মিত্র

গল্প ।। খটাশ ।। অর্পিতা মল্লিক

ছড়া ।। কাঁঠাল ।। উদয় নারায়ণ বাগ

ছড়া ।। বৃষ্টি বুড়ি ।। চিত্তরঞ্জন সাহা চিতু

ছড়া ।। গোলরক্ষক ।। সুশান্ত সেন

মাসের পছন্দ

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। কিশলয় ৪৫ ।।আগস্ট, ২০২৫

ছড়া ।। গ্রামের হাট ।। গোবিন্দ মোদক

গল্প ।। মেজমামার অদ্ভুত কান্ড ।। অঞ্জনা মজুমদার

ছোটদের আঁকিবুঁকি ।। কিশলয় মাসিক পত্রিকা ।। পঞ্চচত্বারিংশ সংখ্যা ।। আগস্ট ২০২৫

কবিতা ।। প্রত্যয় ।। শৈবাল কর্মকার

কিশোর ভ্রমণ উপন্যাস ।। তিতলির বিশ্বভ্রমণ ।। ডাঃ অরুণ চট্টোপাধ্যায়

ছড়া ।। বাংলা ভাষা ।। পাভেল আমান

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। কিশলয় ৪৪ ।। জুলাই ২০২৫

ছড়া ।। আয় বৃষ্টি আয় ।। হারান চন্দ্র মিস্ত্রী

ছড়া।। পাখপাখালির মেলা ।। চন্দন মিত্র

বছরের পছন্দ

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। কিশলয় ৪০ ।। মার্চ ২০২৫

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। কিশলয় ৪৪ ।। জুলাই ২০২৫

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 38th issue: January 2025

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সুচিপত্র ।। 37th issue: December 2024

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। কিশলয় ৪১ ।। এপ্রিল ২০২৫

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। কিশলয় ৪২ ।। মে ২০২৫

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। ,39th issue: February 2025

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। কিশলয় ৪৩ ।। জুন ২০২৫

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। ষড়ত্রিংশ সংখ্যা ।। সেপ্টেম্বর ২০২৪

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। কিশলয় ৪৫ ।।আগস্ট, ২০২৫

অতি প্রিয়

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। আত্মপ্রকাশ সংখ্যা ।। অক্টোবর ২০২১

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। দ্বিতীয় সংখ্যা ।। নভেম্বর ২০২১

নিবন্ধ ।। শিশু-কিশোর সাহিত্যবলয়ে শিশুরাই যেন ব্রাত‍্য না থাকে ।। অরবিন্দ পুরকাইত

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 4th issue: January 2022,

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 7th issue: April 2022

নিবন্ধ ।। দেশীয় উদ্ভিদ কেন গুরুত্বপূর্ণ ? ।। ডঃ চিত্তরঞ্জন দাস

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। কিশলয় - ১০ ।। জুলাই ২০২২

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। কিশলয় - ১১ ।। আগস্ট ২০২২

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র : 8th issue: May 2022

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। কিশলয় - ১২ ।। সেপ্টেম্বর ২০২২