Featured Post

লেখা-আহ্বান : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য

ছবি
     মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কোন বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠানো ভালো (যেমন, কবিতা ১২-১৪ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে)। তাতে অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়। সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৫-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) যতিচিহ্নের আগে স্পেস না দিয়ে পরে দেবেন। ৪) বিশেষ কোন চিহ্ন (যেমন @ # *) ব্যবহার করবেন না। ৫) লেখার নীচে একটি ঘোষণা দিন:  'লেখাটি স্বরচিত ও অপ্রকাশিত'। মেল আইডি :  printednabapravat@

কল্পবিজ্ঞানের গল্প ।। সি সি ডি আবিষ্কার ।। মনোরঞ্জন ঘোষাল

নতুন স্টাইলের ঝগড়া - মোঃ সিরাজুল হক এর বাংলা ব্লগ । bangla blog |  সামহোয়্যার ইন ব্লগ - বাঁধ ভাঙ্গার আওয়াজ 
সি সি ডি আবিষ্কার 
মনোরঞ্জন ঘোষাল

কদিন ভর দেখছি চারিদিকে সকলে খালি ঝগড়া করছে। ইদানিং মানুষের মধ‍্যে ঝগড়া করার প্রবণতা কিছুটা বেড়ে গেছে। অনেকে অহেতুক ঝগড়া বাধিয়ে বসে। যা করা একেবারেই ঠিক না। 
এমনটি হতে দেওয়া যায় না। কিন্তু মানুষের স্বভাব তো আর বলে বদলানো যাবে না। যেটিকে করতে বারণ করবে সে সেটিকেই বেশি করে করবে। আর ঝগড়ার কথা তো বলাই যাবে না। বলতে গেলেই সে আমার সঙ্গে ঝগড়া বাধিয়ে বসবে। 
তাই বলে আমি এমন অহেতুক ঝগড়া খালি খামকা সহ‍্য করি কি করে। তাই একটা মতলভ বার করলাম মাথা থেকে।
কেন না একটা যন্ত্র বানানো যেতে পারে। কনফ্লিক্ট কন্ট্রোল ডিভাইজ বা  ঝগড়া নিয়ন্ত্রণের যন্ত্র । 
মনে পড়া কি, অমনি স্থির করে ফেললাম অমন ঝগড়া থামানোর যন্ত্র বা কনফ্লিক্ট কন্ট্রোল ডিভাইজ তৈরী করব।
করব বললেই তো আর হবে না। সেটি কী নীতিতে কাজ করবে বা তার কাজ করার কৌশল কেমন হবে সে নিয়ে আগে বেশ চিন্তা ভাবনা করার দরকার। 
শুরু করলাম চিন্তা ভাবনা।
প্রথমে মনে এল ঝগড়ার সময় মানুষের কী পরিবর্তন ঘটে যেটিকে বাহিরে থেকে নিয়ন্ত্রন করা যেতে পারে। 
এই কথা সকলের জানা যে, ঝগড়ার সময় মানুষের শরীর উত্তেজিত হয়ে পড়ে। খুব দ্রুত খাদ‍্যের জারণ ঘটে আর প্রচুর শক্তি উৎপাদন হয়। 
যদি কোন ভাবে সেই শক্তি উৎপাদন কমিয়ে দেওয়া যায় তাহলে তার শরীর গরম হয়ে উঠবে না। তার শরীর শান্ত হয়ে পড়বে। 
আমাদের শরীরে শক্তি উৎপাদন প্রক্রিয়ার জন‍্য দায়ী দুটি বস্তু।  যাকে কাঁচা মাল বলতে পার। একটি হল খাদ‍্য আর একটি অক্সিজেন। 
খাদ‍্য আমাদের শরীরে আগে থেকেই যথেষ্ট পরিমাণে সঞ্চিত থাকে। সুতরার সেটিকে কমিয়ে দেওয়ার কথা ভাবা যাবে না। 
আবার কোশের উনুন মানে যেখানে খাবার পুড়ে আগুন বের হয় সেই মাইটোকন্ড্রিয়া তার সক্ষমতা। সেটিও আগে থেকেই শরীর ভেতরে মজুত থেকে সক্ষম করে রাখে।
এখন পড়ে থাকে অক্সিজেন। যেটি বাতাসে আছে। তার পরিমান কমানো যাবে না। আবার তাকে বাহিরে থেকে নিয়ন্ত্রন করাও যাবে না। 
তাহলে উপায়!
উপায় কিছুই খুঁজে পাচ্ছি না। অনবরত চিন্তা করে চলেছি। সঙ্গে হাতে কলমে পরীক্ষা করে চলেছি। কিছুতেই কিছু খুঁজে পাচ্ছি না। 
হঠাৎ মাথায় এল চুম্বকের আবেশ ধর্মের কথা। আর লোহার যে চৌম্বক ধর্ম আছে তা তো আমাদের সকলের জানা। ব‍্যাস মাথায় এসে গেল এক বুদ্ধি। 
আমাদের রক্তের লোহিত কণিকা লোহার সঙ্গে গ্লোবিউলিন প্রোটিন যোগে গঠিত হয়। আর সেটিই তো কোশে কোশে অক্সিজেন বহন করে নিয়ে যায়। আর চুম্বক আবেশ ঐ লোহার উপর প্রভাব বিস্তার করতে পারে। ব‍্যাস! মেকানিজম একেবারে জলের মত পরিষ্কার হয়ে গেল। 
একটি সাধারণ চুম্বক নিয়ে রক্তের ওপর পরীক্ষা চালালাম। দেখলাম যা ভেবেছিলাম তাই। চুম্বকের আবেশ গতিশীল রক্তের উপর প্রভাব বিস্তার করছে। তবে তা ব‍্যাক্তি বিশেষ কে আলাদা করে করছে না।
মানে দু জনে ঝগড়া করলে তাদের কোন একজনকে বিশেষ করে নিয়ন্ত্রণ করতে পারা যাচ্ছে না। সেই চুম্বকের আকর্ষন ক্ষেত্রের মধ‍্যে দু জনে থাকলে তবে দুজনের রক্ত প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ হয়ে পড়বে। 
আমি অমনটি ঠিক চাইছি না। আমি চাইছি আমার উদ্দেশ্য করা ব‍্যাক্তিটিই নিয়ন্ত্রিত হোক।  তার জন‍্য এক বিশেষ কৌশল জুড়ে দিলাম। 
চুম্বকের বলরেখা গুলিকে নিয়ন্ত্রণ করার কৌশল আয়ত্ব করলাম। তার সঙ্গে জুড়ে দিলাম ট্রান্সমিশন সিস্টেম।
একটি অতিব বিজ্ঞান সত‍্য হল। মানুষ তথা জীব জন্তুরা উত্তেজিত হলে তখন তাদের উত্তেজনার একটি মাপকাঠি পাওয়া যায়। নানা মানুষের সেই মাপকাঠি টি নানা মানের হয়ে থাকে। 
সূক্ষ্ম যন্ত্রের সাহায‍্যে তার পরিমাপ করা যায়। আর সেই একই কম্পাঙ্কের তরঙ্গ যদি সৃষ্টি করে ট্রান্সমিটার মারফত পাঠানো হয় তবে মানুষের উত্তেজনার কম্পাঙ্ক ঐ ট্রান্সমিটার দ্বারা নিয়ন্ত্রণ করা যায়। 
এই সব কিছু ব‍্যবস্থা এক সঙ্গে করে একটি রেডিওর মত যন্ত্র তৈরী করে ফেললাম। যাতে উত্তেজিত লোকটির উত্তেজনা তরঙ্গের সমান তরঙ্গের তড়িৎ চুম্বকীয় তরঙ্গ  রেডিওর নব ঘুরিয়ে ঘরিয়ে সম মানের সৃষ্টি করা যায়। দুটি তরঙ্গের মান সমান হলে তখন তড়িৎ চুম্বকীয় তরঙ্গের মান হ্রাস ঘটিয়ে বা বাড়িয়ে উদ্দিষ্ট‍্য ব‍্যাক্তিকে নিয়ন্ত্রন করা যাবে। 
একটি ছিমছাম ছোট রেডিও যন্ত্র বানিয়ে ফেললাম ঠিক ঐ মত। 
শুধু বানিয়ে ফেললেই তো হবে না। সেটিকে পরীক্ষা মূলক ভাবে প্রমাণ করে যাচাই করতে হবে যন্ত্রটি যথাযথ হয়েছে কি না।
যখন যন্ত্র আমার তৈরী তখন দেখি সবাই শান্ত হয়ে গেছে। কেউ আর কারো সঙ্গে ঝগড়া করছে না। 
ভারি মুশকিল হল। আমার সঙ্গে ঠিক এমনটাই হয়। যখন যেটি দরকার তখন সেটিকে আর পাওয়া যাবে না। আর যখন দরকার নেই তখন এখানে সেখানে তার দেখা মিলবে। লোকে এটিকেই গ্রহ দোষ বলে থাকে। জানিনা এটির কোন বিজ্ঞান ভীত্তিক যুক্তি আছে কি না। 
যাক সে কথা। এই নিয়ে পরে কোন একদিন আলোচনা করা যাবে।
পকেট রেডিওর মত ছোট যন্ত্রটাকে পকেটে নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছি লোকের বাড়ির আশে পাশে। অনেকে সন্দেহের চোখে দেখছে। 
আমি এমনিতেই খুব একটা বাহিরে বের হই না। আবার লোকের বাড়ির আনাচে কানাচের রাস্তা দিয়ে তো যাই না। তাই সকলে কানা ঘুষো করছে। "কি ব‍্যাপার রে বাবা! ইনি আবার এদিকে কী করছেন!" 
এমন কথা আমার কানে এল। তবে আমি এমন ভাব দেখালাম যেন ওদের কোন কথাই আমি শুনতে পাইনি। 
ঠিক তখনি মাথায় এল। আমার যন্ত্রে তো ঝগড়া বাধিয়ে দেওয়াও যেতে পারে! যখন উত্তেজনা কমানো সম্ভব তখন বাড়ানোও সম্ভব।
ব‍্যাস! একটু দুষ্টু বুদ্ধি মাথায় খেলে গেল। দুই বন্ধু পাশাপাশি খোস মেজাজে গল্প করতে করতে যাচ্ছিল। আমি পাশে থেকে একজনের উত্তেজনার তরঙ্গের পরিমাপ করে ফেললাম। তার পর সেই একই মানের তড়িৎ চুম্বচীয় তরঙ্গ আমার যন্ত্র থেকে তৈরী করে ছাড়লাম। দুটিতে মিলে গেল।
এবার আমার সৃষ্টি করা তড়িৎ চুম্বকীয় তরঙ্গের মান কিছুটা বাড়িয়ে দিলাম। 
দেখি সে আমার নিয়ন্ত্রনের সঙ্গে উত্তেজিত হয়ে উঠেছে। উত্তেজনার বশে তার গলার আওয়াজ বদলে গেল। 
ভাল কথায় সে হঠাৎ মেজাজ দিয়ে তার প্রতিক্রিয়া জানাল তার বন্ধুকে। 
কী কথা ওদের মধ‍্যে চলছিল তা আমার কানে আসে নি। আমি কেবল শুনতে পেলাম সে তার বন্ধুকে বলছে, 
"আমি কী তোকে এই কথা বললাম? তুই যে এমন করে উল্টো মানে করছিস?"
কী কথা আর তার কী উল্টো মানে তার কিছুই বুঝলাম না। আর আমি তো জানি তার ভাল মন্দ বোঝার দরকার নেই। অতি তুচ্ছ কথা হলেও আমার যন্ত্রের কেরামতিতে তা এমন বাজে আর অপছন্দের বলে মনে হবে। কারণ তার মেজাজ যে বিগড়ে আছে। 
বন্ধুটি তার ঐ রূক্ষ্ম মেজাজ পছন্দ করল না। আসলে তার মেজাজ টিকে যে এমন অসহ‍্য করে দিয়েছি। 
সে তখন তবুও ঠাণ্ডা মাথায় সমস‍্যার মিমাংসা করতে চাইছে। তাই সে বলল, "আমি তো এমন কোন খারাপ কথা বলিনি। তুই হঠাৎ এমন উত্তেজিত হয়ে উঠলি কেন? তোর কী মাথায় কোন সমস‍্যা হচ্ছে? এতক্ষণ তো তুই ঠিক ছিলি।"
এই কথা তার কাছে আরো বিরক্তিকর বলে মনে হল। সে তার মুখের উপর বলতে শুরু করল, "কী বলতে চাইছিস তুই? আমার মাথা খারাপ হয়ে গেছে? আমি পাগল হয়ে গেছি? যত সব বোকা বোকা কথাগুলো বলছিস।"
এমন করে একে অপরের মধ‍্যে ঝগড়া বেধে গেল। ক্রমে সেই ঝগড়ার পারদ উপরের দিকে ঠেলে উঠছে। দেখলাম এই না তাদের মধ‍্যে হাতাহাতি শুরু হয়ে যায়। বেশ বিচক্ষণতার সঙ্গে অপর বন্ধুটি সেই হাতাহাতি ঠেকিয়ে ফেলল। 
হাতাহাতি ঠেকাল বটে কিন্তু শুরু হল কথা বলা বন্ধ। শেষে রেগে মেগে সে তো আর বন্ধুর মুখ আলাপ আর কোনদিন করবে না বলে চলে যাচ্ছিল। আমি দেখলাম এ ভারি অন‍্যায় করা হয়ে যচ্ছে। আজ কাল একটি ভাল বন্ধু পাওয়া খুব মুসকিল। আর আমি কিনা তাদের ভাল বন্ধুত্ব টিকে জোর করে নষ্ট করে দিচ্ছি। 
মনটা খুব খারাপ হল। তখন আমি আবার যন্ত্রের নব ঘুরিয়ে তার উত্তেজনা কমিয়ে দিলাম। তখন সে পিছন ফিরে চলে যেতে থাকা বন্ধুকে ডেকে গলা জড়িয়ে ধরে মানিয়ে নিল। 
আসলে ওরাও জানে এমন পথ চলতে ঘটি বাটি ঠোকাঠুকি হয়ে থাকে। সেটিকে মনের মধ‍্যে পুষে রাখলে চলে না। তাই ওরাও আর ঝগড়ার কথা মনে করল না। আগের মত দুজনে কী সব আলোচনা করতে করতে আমাকে ছাড়িয়ে এগিয়ে চলে গেল। 
আমিও বুঝে গেলাম আমার তৈরী সি সি ডি বা কনফ্লিক্ট কন্ট্রোল ডিভাইজ যথাযথ মত তৈরী হয়েছে।
তবে আমার একটা খুঁত খুঁতে ভাব সব সময় লেগে থাকে। কোন কিছুকেই আমি সন্দেহ না করে থাকতে পারি না। বিশেষ করে আমার গবেষণা সংক্রান্ত সবকিছু। এই যেমন এইটিকে আমি সন্দেহ না করে থাকতে পারছি না।
কেবলই মনে হচ্ছে ব‍্যাক্তি বিশেষে এটির কার্যকারিতার পার্থক্য হবে না তো? 
সন্দেহটা অহেতুক না। সকল শরীর এক রকমের শক্তির আধার না। কারো শরীরে থাকা শক্তির পরিমাণ খুব বেশি আবার কারোর শরীরে সেটি কম।
শক্তি আর একটি শক্তির উপর প্রভাব বিস্তার করে ঠিকই তবে তার ভেতরে থাকা শক্তির পরিমাণের উপর সেই শক্তি বিস্তারের মাত্রা নির্ভর করে। 
মানে ঠিক বুঝতে পারলে না তো? আরে বাবা দুই পালোয়ানের লড়াই মনে করলেই হবে।
যদি একটি পালোয়ান আর এক জনের থেকে বেশি জোরদার হয় তবে সে সহজেই অপর জন কে কাবু করতে পারবে। নইলে সে চেষ্ঠা করতে থাকবে কাবু চরতে থাকার কিন্তু তেমন ভাবে কাবু সে কখনোই করতে পারবে না। 
ঠিক রঙের ফোঁটা জলে ফেলার মত। এক কাপ জলে এক ফোঁটা রঙ ফেলে দাও। এবার দেখ সেই জলের রঙ কেমন হয়েছে। আবার ঐ এক ফোঁটা রঙ এক বালতি রঙে ফেলে দাও। এবার দেখ ঐ বালতির জলের রঙ কেমন হল। 
বালতির জল একেবারে বেরঙিন দেখাবে। তবে যদি রঙের পরিমান বাড়িয়ে দাও তবে সেখানেও জল রঙিন হয়ে উঠবে। 
আমি আমার যন্ত্রে সেটিই করেছি। স্বাভাবিক চুম্বককে কাজে লাগনোর কথা চিন্তা করলেও পরে সে মত বদলে ফেলি। চুম্বকের ক্ষমতাকে নিজের ইচ্ছা মত বাড়ানোর জন‍্য আমি সেখানে তড়িৎ চুম্বকের ব‍্যবহার করেছি। তাই আমার যন্ত্রে তেমন সমস‍্যা কিছু হবে না বলেই মনে হয়। 
তবু মনে হয় একটি বার করে নানান পাত্র ভেদে আমার যন্ত্রের কর্ম ক্ষমতাটি যাচাই করে নিতে পারলেই ভাল হয়। তাই শেষ পর্যন্ত ঠিক করলাম পাত্র ভেদে এটিকে নানান পরিস্থিতিতে পরীক্ষা করে দেখব।
কাজের ফাঁকে সময় ফাঁকা পেলেই যন্ত্রটিকে পকেটে নিয়ে বেরিয়ে পড়ি তার পরীক্ষার উপকরণের খোঁজে। বাজার খুব মন্দা। ঝগড়া করার লোক কাউকে দেখা যায় না। অথচ এই কদিন আগে তা কেমন ছিল মনে করলে ভয় হয়। আজকের মত অবস্থা থাকলে তো এই যন্ত্র তৈরীর কথা চিন্তা করতে হত না। 
বেশ কটাদিন কেটে গেল। আশেপাশে কোথাও ঝগড়া হতে আর দেখছি না। মনে হল মানুষগুল সব শুধরে গেছে। তারা বুঝে গেছে এ সব ঝগড়া ঝামেলা করে কোন লাভ নেই। তাই সব ভালো মানুষ হয়ে গেছে।
দিন দুই যেতে না যেতেই বুঝতে পারলাম আমি কত ভুল। মানুষ শোধরানোর নয়। ঝগড়া আর মানুষ করবে না তাই কি হয়। কদিন কেমন সূর্য পশ্চিম দিকে উঠছিল বোধহয়। 
আবার শুরু হল কেচ্ছা।
সে দিন বাজারে গেছি। দেখি এক সব্জি দোকাদারের সঙ্গে এক খদ্দেরের ঝগড়া বেধেছে। 
সব্জি দোকানদার পাল্লায় নাকি কারচুপি করে রেখেছিল। গত কাল তার কাছে সব্জি কিনেছিল। সেটি আবার এক মুদিখানার দোকানদারের। ওনাকে সে কিনতে দিয়ে ছিল। সে কিনে নিয়ে যেতে তার পাল্লায় ওজন করে দেখেছে কম।
হালকা হালকা ওদের দুজনের মধ‍্যে কথা কাটাকাটি চলছে। তখন আমি পকেটের রেডিও যন্ত্রটিকে চালু করে দিলাম। দেখি সেটি সব্জি দোকানদারের ফ্রিকোয়েন্সিকে আগে ধরে বসেছে। বলি তাই হোক। সে অপরাধি তো কী হয়েছে। আজকাল তো রাবণের জয় হচ্ছে। একালে রামের জয় হয় না। তাই ওর জয় হলেই বা ক্ষতি কি। বলে দিলুম ক্ষমতাটা বাড়িয়ে। 
ব‍্যাস! সে ছোকরা বসে বসে দোকানদারি করছিল। পাওয়ার পেয়ে একেবারে তড়াক করে লাফিয়ে উঠল তার সেই বসে থাকা জায়গাতেই। এবার তার মেজাজ। ভাড়ের মত ভাঙা গলায় ঢব ঢব করতে করতে বলতে লাগল, 
" কালকে যখন এমনটি হয়েছিল তখন আমার কাছে আনেননি কেন? রাস্তায় কোথায় কি করতে গিয়ে ফেলে টেলে দিয়েছিন আর এখন আমাকে বলছেন কম দিয়েছি। কই এতদিন ধরে ব‍্যবসা করছি। কেউ আপনার মত নালিশ করছে না তো!" 
বলে সে সকলের দিকে আঙুল বাড়িয়ে দেখাতে লাগল।
সকলে তার দিকে এমন ভাবে তাকিয়ে রয়েছে যেন সেই চুরি করে নিয়েছে। অথবা মিছি মিছি সকাল বেলা মিথ‍্যা নালিশ জানাচ্ছে। আসলে কেউ কারোর ঝামেলায় মাথা দিতে চায় না। 
সে বেচারি ভদ্রলোক তাই অহেতুক ঝগড়া করতে চাইছে না। চুপ চাপ হয়ে গেছে।
কিন্তু দোকানি চুপ থাকবে কী করে? আমার যন্ত্র যে তার শরীরে ভর করে রয়েছে। তার মুখ সে আর বন্ধ করতে পারল না। নানান কথা বলতে বলতে বলে ফেলল, 
" বাজারে এসে সব ইয়ে করে বেড়াবে আর যত দোষ সব আমাদের ঘাড়ে এসে পড়বে।" কথাটা আমার ভালো লাগল না। 
বাজারে ভদ্রলোকেরা কেউ ইয়ে করতে আসে না। এ হেন অপমান সহ‍্য করা যাবে না। তাই সুইচ ঘুরিয়ে সেটির নিয়ন্ত্রন বাবুর শরীরে করে দিলাম। 
বাবু এতক্ষণ চুপ করে ছিলেন। আমি তার শরীরের উত্তেজনা বাড়িয়ে দিতেই একেবারে ফোঁস করে উঠলেন। 
রেগে মেগে বললেন, " বাজারে আমরা ইয়ে করতে আসি না তোমরা বসে বসে ইয়ে কর? সব ইয়ে করতে করতে মাল পত্র দেবে। উদোর পিণ্ডি বুদোর ঘাড়ে চাপাবে আর লোকেদের ঘাড়ে সেই দোষ চাপাবে। একে বারে ইয়ে মানে মামদো বাজি পেয়েছ? " 
ভদ্রলোকের গলার আওয়াজ শুনে অনেকেই সেখানে দাঁড়িয়ে পড়েছে। তাদের মধ‍্যে অনেকেই কানাঘুষা করছে। দু একজন তো বলেই ফেলল," ভদ্রলোকেদের নামে এমন বললে আমরা কিন্তু সহ‍্য করব না। "
পাশের কয়েকজন সব্জিওলা ঝগড়া থামাতে ছুটে এল। তারা বুঝেছে এমন এক এক করতে করতে অনেকে মিলে শেষে পেটাপিটি আরম্ভ করবে। তার থেকে হালকায় হালকায় এখানে ইতি টেনে দিতে পারলে ভাল। 
আমিও সুজোগ বুঝে যন্ত্রটি বন্ধ করে দিলাম। সকলে জড়ো হয়ে বলল, "দাদা ও ভুল করে ঐ কথা বলে ফেলেছে। আমি ওর হয়ে ক্ষমা চাইছি। দয়াকরে আর ঝামেলা বাড়াবেন না। তাতে আপনাদের আমাদের সকলের ক্ষতি।"
তার আগেই তো আমি উত্তেজনা কমিয়ে দিয়েছি। তাই সেই কথার কোন উত্তর ভদ্রলোক না দিয়ে বাড়ির দিকে হাঁটা দিলেন। 
আমিও বুঝলাম আমার যন্ত্রের কুশলতা ঠিকঠাক আছে। তাই আমিও আর কাল বিলম্ব না করে রওনা দিলাম বাড়ির দিকে। 
মাঝে মাঝে আমার মাথায় একটু দুষ্টু বুদ্ধি চাগাড় দিয়ে ওঠে। এই ক্ষেত্রেও তাই ঘটল। 
যন্ত্রটিকে নিয়ে একটু দুষ্টুমি করার মন বাসনা জাগল। সত‍্যি বলতে কি এটিতে আমার কোন বদ মতলব নেই। কেবল একটু মজা পাবার আশায় এটি করা। তবে আমার মজা পাওয়াতে কারো ক্ষয় ক্ষতি হবে তা আমার সহ‍্য হয় না। তাই সুযোগ বুঝে আমি সেটিকে প্রতিহত করে দিই। 
কিছু প্রসিদ্ধ জুটি আছে। আমার মনে হল সেই সব জুটি গুলির মাঝে যন্ত্রের সাহায‍্যে ঝামেলা বাধিয়ে মজা নিতে হবে। দীর্ঘদিন ল‍্যাবের মধ‍্যে গবেষণার কাজে মন নিবেশ করে মনটা আমার যন্ত্রের মত হয়ে পড়েছে। মানুষের মন বলে মনেই হয় না। একটু মজা বা আমোদ প্রমোদ যাই বল না কেন সব প্রায় ভুলে যেতে বসেছি। তাই কদিন একটু ল‍্যাবের বাহিরে কাটাব বলে স্থির করলাম।
সেই ফাঁকে ঐ জুটিদের মধ‍্যে ঝগড়া বাধিয়ে মজা নেব ঠিক করলাম। 
একদিন বিকালে রাস্তা দিয়ে হেঁটে চলেছি। দেখি এক বারান্দায় হ‍্যাপি কাপল দাঁড়িয়ে বিকালের শোভা দর্শন করছে। 
আমার তাদের সেই হ‍্যাপিনেস সহ‍্য হল না। যন্ত্র ঘুরিয়ে বাধিয়ে দিলাম তাদের মধ‍্যে ঝগড়া। 
জানি এমন ঝগড়া বাধানোয় মহিলাদেরকেই একটু এগিয়ে রাখতে হয়। তাই সেই মহিলাটিকেই উত্তেজিত করে দিলাম। 
দিব‍্যি দুজনে মিলে মিশে সব দেখছিল। হঠাৎ মহিলাটি বলল, "কী হচ্ছে কী? ওই ভদ্র মহিলার দিকে অমন ড‍্যাম ড‍্যাম করে তাকিয়ে থাকার কী আছে?"
" কই? না তো। আমি আবার কখন ড‍্যাম ড‍্যামিয়ে তাকালাম ঐ ভদ্র মহিলার দিকে?"
"আবার মিথ‍্যা কথা বলছ। আমি নিজে তোমার মুখের দিকে তাকিয়ে দেখেছি। তুমি অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রয়েছ ভদ্র মহিলার দিকে। এই কী ব‍্যাপার বল তো? তোমার কী ওনার সঙ্গে পরীচয় আছে?"
" এই তো না। তোমরা মেয়েরা না সব সময় অহেতুক সন্দেহ কর পুরুষদের। "
" মানে? আমি তোমাকে অহেতুক সন্দেহ করছি? আর তুমি যে সন্দেহ করার মত কাজ করছ, তার বেলা কিচ্ছু না। যত সব বাজে যুক্তি দেখাচ্ছো। তাই বলি আজকাল তুমি কেন আর আগের মত ভালো বাসনা আমায়!"
" ভাল বাসিনা? কে, কে বলল? এই তো ভাল বাসছি। " বলে ছেলেটি মহিলাটির হাত ধরে সোহাগ দেখানোর চেষ্টা করতে যাচ্ছিল। মহিলাটি তার হাত থেকে নিজেকে ছিনিয়ে নিয়ে ঘরে চলে গেল। বুঝলাম ভারী গোঁসা হয়েছে। মান ভঞ্জন করাতে হবে। অহেতুক আমি ওদের মাঝে একটা বিতৃষ্ণার দেওয়াল তুলে রেখে দিতে পারিনা। 
তাই বলে এই গোঁসা ভঞ্জন করব কী ভাবে তা ভেবে পাচ্ছি না। হঠাৎ মনে পড়ল কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলার কথা। 
ঝপ করে মহিলাটির উত্তেজনা কমিয়ে ছেলেটির উত্তেজনা একটু বাড়িয়ে দিলাম। ব‍্যাস!
ছেলেটি অমনি রেগে গিয়ে বলতে লাগল, " যাও যাও মিথ‍্যা সন্দেহ মনের মধ‍্যে পুষে রেখে নিজে নিজে কষ্ট পাও। যত সব উল্টোপাল্টা লোকেদের কারবার। ধুৎ তেরী! আমিও চললাম আর এ বাড়িতে ফিরব না।" 
কথা গুলো সে চিৎকার করে বলল। স্ত্রীর মাথা তো তখন ঠাণ্ডা হয়ে গেছে। সে দেখল বেগতিক অবস্থা। এখন তাকে না থামালে বিপদ ঘটে যাবে। আর সে কোন অপরাধ করেনি বলেই তো এতটা জোর দিয়ে কথা বলছে।
ঘরের ভেতর থেকে তিনি বারান্দায় বেরিয়ে এল। তখন আমিও ছেলেটির উত্তেজনা কমিয়ে দিলাম। 
স্ত্রী বেরিয়ে তাকে বলল, " সত‍্যি বলছ তুমি ওনাকে চেন না? তোমার পরিচিত না?" 
" না রে বাবা না। আমি এর আগে ওনাকে কখনো দেখিনি। "
" ও! তাহলে ঠিক আছে। "
দেখলাম তাদের দুজনের আবার মিল হয়েছে। আর ওদেরকে বিরক্ত করতে মন চাইল না। সেদিন আমি বাড়ি ফিরে এলাম।
আর একদিন। রাস্তাদিয়ে বিকালে হেঁটে চলেছি। দেখি দুই বান্ধবী কলেজ সেরে বাড়ি ফিরছে। দুজনে খোস মেজাজে নিজেদের মধ‍্যে কথা বলাবলি করতে করতে চলেছে। 
পাশে থেকে ওদের আলোচনা শুনলাম। ওরা কলেজের বন্ধু বান্ধবদের কথাই আলোচনা করছে। 
দেখি একজন তার ব‍্যাগ থেকে একটি বিস্কুটের প‍্যাকেট বের করেছে খাবার জন‍্য। আমিও বুঝলাম এই একটা মোক্ষম সময়। 
পকেট থেকে যন্তর টিকে বের করে চালু করে দিলাম। তখন সবে একজন আর একজনকে একটা বিস্কুট দিতে চলেছে।
বিস্কুটটা একজন অপর জনের হাতে দিয়ে বলছে, " আমি কিন্তু তোকে যেমনটি ভালোবাসি তুই কিন্তু আমাকে তেমন ভাল বাসিস না!"
" কেন এই কথা বলছিস? তুই আমার কী প্রমাণ পেয়েছিস?"
" তাহলে তুই আমার আর রাহুলের মাঝে থাকতিস না।"
" কে বলেছে তোকে এই কথা?"
" আমি জানি তুইও রাহুলকে ভালো বাসিস। তবে রাহুল তোকে ততটাও পাত্তাদেয় না।"
" আমি রাহুলকে ভালো বাসতে যাব কেন? আমি তো আর তোর মত পাগল নই, যে লক্ষ‍্য থেকে সরে গিয়ে ঐ সব করব!"
"ও! এখন ধরা পড়ে গেছিস বলে এই ভাবে পাশ কাটিয়ে যেতে চাইছিস?"
" এই পাগলের মত কথা বলিস না তো।"
" ও এখন তুই আমাকে পাগল সাজাতে চাইছিস তো? তাতে কোন লাভ হবে না। আমি সবাইকে বলে দেব তুই ঠকবাজ মিথ‍্যুক!"
"না। তোর সঙ্গে আর বন্ধুত্ব রাখা যাবে না। তুই মিছি মিছি যেমন সন্দেহের জালে আমাকে জড়াচ্ছিস, তেমন কোন দিন কী বিপদ ঘটাবি তা কে জানে! তাই আর নয়। আজ থেকে তোর সঙ্গে আমার আড়ি!" 
বলে সে জীভ বেরকরে কোড়ে আঙুল দেখিয়ে মুখ ভেঙচে তার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করতে উদ্দত হচ্ছে। 
তখন দেখলাম বেগতিক। এই সময়েই তাদের মিমাংসা করা দরকার। 
বলে যন্তরটি বের করে তাকে নিয়ন্ত্রণ করলাম। 
এখন দুজনের মাথা ঠাণ্ডা হয়ে পড়ল। বোধহয় ঠাণ্ডা মাথায় দুজনেই একটু একটু করে ভেবে দেখেছে যে তারা অহেতুক ঝগড়া করছে। রাহুলকে বন্ধুটি ভাল বাসেনা। ও মেধাবী ছাত্রী। জীবনে কিছু একটা করার লক্ষ‍্যে সে এগিয়ে চলেছে। তাই পড়াশোনা ছাড়া আর বাকি কিছু করার মত সময় তার কাছে নেই। আর প্রেম তো দূরের কথা। 
বন্ধুটি নিজের ভুল বুঝতে পারল। সে তার বন্ধুর কাছে ভুলের ক্ষমা চেয়ে নিল। বন্ধুটি একটি শর্তে তাকে ক্ষমা করবে বলল। যে কখনো তার সামনে রাহুলের প্রসঙ্গ সে তুলবে না। সে সেই শর্তে রাজি হয়েছে। 
যাক বাবা দুই বন্ধুর মধ‍্যে যে ভাঙন ধরিয়ে প্রায় দিয়েছিলাম তা কোন রকমে ঠেকানো গেছে। 
মনে মনে ঠিক করে ফেললাম। আর এই নিয়ে কোন পরীক্ষা নীরিক্ষা বা খুনসুটি কিছুই করব না। এই ভাবে কখন যে বিপদ ঘটে যাবে তখন নিজেকে ক্ষমা করা যাবে না। তাই আর সে পথে অগ্রসর না হওটাই সঠিক বলে মনে করে বাড়ি ফিরলাম।
আমি একটু বিজ্ঞানের অনুরাগী। আমার আশেপাশের লোকজনে তেমনটাই জানে। আমি যে এই সব আবিষ্কার টাবিষ্কার করি তা কেউ জানে না। তাই আমি কিছুটা সতর্কতার সঙ্গে পরীক্ষা নীরিক্ষা করলেও, তেমন আঁটো সাঁটো ছিলাম না। 
পাশে থেকে যে কেউ আমাকে অনুসরণ করতে পারে, সে কথা কখনও আমার মাথায় আসে নি।
আর সেই ঘটনাই ঘটে গেল। এক ব‍্যাটা চতুর আমার কাজ কখন দেখে ফেলেছিল। তার পর থেকে সে আমার পিছু নেয়। আমি সে দিকে আমল দিই নি। 
যন্তরটিকে পকেটে ঢুকিয়ে নিজের ধ‍্যানে আমি পথ চলছি। হঠাৎ দেখি একজনের সঙ্গে আমার ধাক্কা হয়ে গেল। তখনও বুঝিনি যে সে আমাকে ইচ্ছা করেই ধাক্কা মারল। 
ধাক্কা খেয়ে আমি বেসামাল হয়ে টলে পড়লে সে আমাকে মাটিতে লুটিয়ে পড়া থেকে বাঁচাল। তার সে আমাকে ছেড়ে চলে গেল।
তখনও বুঝতে পারিনি যে সে আমার পকেট থেকে যন্তরটিকে তুলে নিয়েছে। 
বাড়িতে এসে পকেটে হাত দিতে বুঝতে পারি বস্তুটি আর পকেটে নেই!
ও তো জানে না যে আমার সঙ্গে একটি গোপন নজরদারি ক‍্যামেরা থাকে। যেটি আমার সমস্থ গতিবিধি সব রেকর্ড করে রাখে। প্রয়োজন মত আমি সেই রেকর্ডিং চালিয়ে ঘটে যাওয়া ঘটনা ক্রম দেখে নিতে পারি। 
সেই মত ছেলেটিকে চিনতে আমার এতটুকু সময় লাগল না। আমি সেই পুরাতন রেকর্ডিং চালিয়ে তাকে সনাক্ত করে ফেললাম। 
তার পর শুরু করলাম তার খোঁজ। 
আমি জানি ঐ বস্তুটিকে ও সঠিক ভাবে কাজে লাগাতে পারবে না। যা হোক একটা কিছু করে সে ঝামেলা বাধিয়ে বসবে। তাতে জন জীবনের বহুল ক্ষতি হয়ে যাবে। সেটি মোটেই হতে দেওয়া যাবে না। তাই জোর কদমে খোঁজ শুরু করলাম।
এ যেন খড়ের গাদায় সূঁচ খোঁজার মত ব‍্যাপার। এই বিশাল জন সমুদ্রের মাঝে ঐ লোকটিকে কোথায় খুঁজব! তবে খুঁজতে হবে নইলে বিপদ! ভীষণ ক্ষতি করে বসবে।
চারিদিকে খোঁজ চলছে। কোথাও পাওয়া যাচ্ছে না তাকে। এমন সময় হিমালয়ের পাদদেশের এক আদিবাসী এলাকায় তুমুল ঝগড়া বাদছে প্রতি ঘরে ঘরে তা খবরের কাগজে বের হল।
বুঝলাম ও ব‍্যাটা ওখানেই গিয়ে হাজির হয়েছে। 
শোনা মাত্র আমিও রওনা দিলাম সেখানে। আমার পৌঁছনোর আগেই সে ব‍্যাটা ওখান থেকে চম্পট দিয়েছে। 
তখন বুঝলাম ও ব‍্যাটা নিশ্চয়ই  আমার উপর নজর রেখে চলেছে। তখন আমি ঠিক করলাম অন‍্য ভাবে ওর খোঁজ চালাতে হবে। 
শুরু করলাম আমার গোপন যন্ত্রপাতি নিয়ে খোঁজ।
আমার সমস্থ যন্ত্রপাতিতে আমি এক বিশেষ প্রকার মেটাল লাগিয়ে দিই। যাতে সেটি হারিয়ে গেলে আমার আল্ট্রা মেটাল ডিটেক্টরে তার হদিশ পাওয়া যায়। প্রক্রিয়াটি একটু সময় সাপেক্ষ বলে আমি সে কাজে মতি দিই নি। তা ছাড়া ইদানিং একটু ব‍্যাস্ততা রয়েছে আমার। 
কিন্তু যখন দেখলাও ঐ চোর ছেলেটি জেনে বুঝে আমার সঙ্গে চালাকি করছে। তখন আর তাকে ছাড়ি কেন। কানটি ধরে সেই বস্তুটিকে ফেরত নিয়ে নেব। 
 যন্ত্রটিকে কোথাও নিয়ে যেতে হয় না। তড়িত প্রবাহের পরিমান বাড়িয়ে তার পাল্লা বাড়িয়ে নেওয়া যায়। ঘরে বসে বসে আমি পৃথিবীর যে কোনায় থাকুক না কেন সেটি তা খুঁজে বের করে পারব। 
যন্ত্র সাজিয়ে যখন আল্ট্রা মেটাল ডিটেক্টরটি চালু করলাম। দেখলাম সেটি পশ্চিম দিকে ছুটে চলেছে। তার কিছুক্ষণ পর দেখি সেটি একটি জায়গাতে স্থির হয়ে গেল। আর কোন নড়াচড়া করছে না। 
আমার সন্দেহ হল। তার কিছুক্ষণ পর টেলিভিশনে খবর দেখাল, একটি যাত্রী বাহি জাহাজ ভূমধ‍্য সাগরে ডুবে গেছে।
আমার বুঝতে আর দেরী হল না যে। আমার যন্ত্রটি এখন ঐ ভূমধ‍্য সাগরের তলায় পড়ে আছে। সময়  পেলে তুলে আনতে হবে। 
_____________________________________________________________________________________

মনোরঞ্জন ঘোষাল
আত্মারামপুর
পশ্চিম রামেশ্বরপুর
বজ বজ
দক্ষিণ চব্বিশ পরগণা


[ছবি: ইন্টারনেট মাধ্যম থেকে সংগৃহীত]

মন্তব্যসমূহ

সপ্তাহের পছন্দ

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 32nd issue: May 2024

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচীপত্র ।। 28th issue: January 2024

ছড়া ।। তোর ।। বিবেকানন্দ নস্কর

লেখা-আহ্বান : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য

প্রচ্ছদ ও সূচীপত্র ।। 25th issue: October 2023

ছড়া ।। সবুজ ঘাসেতে প্রাণ খুঁজে পাই ।। জয়শ্রী সরকার

অনুবাদ ।। কথা না-বলা টিয়া ।। সুস্মিতা পাল

প্রচ্ছদ ও সূচীপত্র ।। 23rd issue: August 2023

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। ষড়ত্রিংশ সংখ্যা ।। সেপ্টেম্বর ২০২৪

মাসের পছন্দ

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। ষড়ত্রিংশ সংখ্যা ।। সেপ্টেম্বর ২০২৪

ছড়া ।। খোকাবাবু ।। মেশকাতুন নাহার

কবিতা ।। মাটির কাছে যায় ।। অবশেষ দাস

ছড়া ।। তোর ।। বিবেকানন্দ নস্কর

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 32nd issue: May 2024

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচীপত্র ।। 28th issue: January 2024

ছড়া ।। বর্ষার উৎসবে ।। আরতি মিত্র

ছড়া ।। পুজোর খুশী ।। আরতি মিত্র

কবিতা ।। ব্যাঘ্রমশাই ।। দীনেশ সরকার

বছরের পছন্দ

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। ত্রয়োত্রিংশ সংখ্যা ।। জুন ২০২৪

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচীপত্র ।। 29th Issue: February

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। চতুর্ত্রিংশ সংখ্যা ।। জুলাই ২০২৪

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 31st issue: April 2024

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 32nd issue: May 2024

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 30th issue : March 2024

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। পঞ্চত্রিংশ সংখ্যা ।। আগষ্ট ২০২৪

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। ষড়ত্রিংশ সংখ্যা ।। সেপ্টেম্বর ২০২৪

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচীপত্র ।। 26th issue: November 2023

অতি প্রিয়

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। আত্মপ্রকাশ সংখ্যা ।। অক্টোবর ২০২১

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। দ্বিতীয় সংখ্যা ।। নভেম্বর ২০২১

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 4th issue: January 2022,

নিবন্ধ ।। শিশু-কিশোর সাহিত্যবলয়ে শিশুরাই যেন ব্রাত‍্য না থাকে ।। অরবিন্দ পুরকাইত

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 7th issue: April 2022

নিবন্ধ ।। দেশীয় উদ্ভিদ কেন গুরুত্বপূর্ণ ? ।। ডঃ চিত্তরঞ্জন দাস

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। কিশলয় - ১০ ।। জুলাই ২০২২

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। কিশলয় - ১১ ।। আগস্ট ২০২২

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র : 8th issue: May 2022

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 5th issue: February 2022