ভারতের মানিক
আনন্দ বক্সী
উচ্চতা বেশ ভালোই ছিল গুরুগম্ভীর গলা
পায়জামা আর ফতুয়াতে সুপুরুষ যায় বলা।
বহুমুখী প্রতিভার সে ছিলেন অধিকারী
তাঁর সৃষ্টির ভক্ত যে আজও শিশু-নরনারী।
যাঁর প্রতিভা স্বদেশ ছেড়ে পৃথিবীর মাঝে ধায়
সুকুমার-সুপ্রভার পুত্র তিনি সত্যজিত রায়।
তাঁর সৃষ্টির জোয়ারে আমরা সকলে প্লাবিত
'মানিক' ডাক নামেই তিনি অধিক পরিচিত।
বরেণ্য পরিচালক সে সাহিত্যিকও মস্ত
গান লেখা, সুর তৈরিতেও ছিলেন সিদ্ধহস্ত।
প্রযোজকরূপেও তিনি ছিলেন অগ্রগণ্য
সুখ্যাতি লাভ করেন যে বেশ ছবি আঁকার জন্য।
প্রচ্ছদ আঁকার হাতও ছিল দারুণ পরিপক্ক
এ বিষয়ে নেই সন্দেহ নেই কোন বিতর্ক।
কল্পবিজ্ঞানের গল্পতে দেখান কেরামতি
'প্রফেসর শঙ্কু'র মাধ্যমে ছড়ালেন সে জ্যোতি।
ছড়া লেখার হাতটাও তাঁর ছিল অসাধারণ
আলোড়িত করলো রে ভাই তাঁর লেখার ধরন।
শিশুদের সে মনের মাঝে ধরান তিনি কাঁপন
শিশুরা তাঁকে সানন্দে করে নিলো আপন।
গম্ভীর ছায়াছবিতে তাঁর ছিল যেমন গতি
মজার চলচ্চিত্রেও ভাই সাবলীল সে অতি।
'পথের পাঁচালি'তে শুরু আর 'আগন্তুক'-এ শেষ
ছবি তৈরির পথটা যে তাঁর প্রশস্ত ছিল বেশ।
'সোনার কেল্লা' বানান তিনি 'জয়বাবা ফেলুনাথ'
'পরশ পাথর ' ও 'জলসাঘর' মিটিয়ে মনের সাধ।
শিশুদের ছায়াছবিও করেন তিনি নির্মাণ
কচিকাঁচার কাছে দ্রুত বিখ্যাত হয়ে যান।
ভালোবেসে সৃষ্টি করেন 'ফেলুদা' চরিত্র
তাঁকে নিয়েই তৈরি করেন বহু চলচ্চিত্র।
তাঁর নির্মিত ছবি সদাই মনকে দেয় নাড়া
ছায়াছবির আশমানে সে উজ্জ্বল ধ্রুবতারা।
দেশ-বিদেশে সম্মানিত বহু পুরস্কারে
ফরাসিরা করলো বরণ 'লিজিয়ঁন দ্য নর'-এ।
ভারত সরকার এ বিষয়ে থাকলোনা পিছিয়ে
সম্মানিত করলো তাঁকে 'ভারত রত্ন' দিয়ে।
'পদ্মশ্রী'-'পদ্মভূষণ'-'পদ্মবিভূষণ' পেয়ে
ভারতবাসীর চিত্তে তিনি গেলেন পুরো ছেয়ে।
'দাদাসাহেব ফালকে' পেয়ে খুশি ছুঁলো আশমান
ভারতীয় সিনেমার এটি সর্বোচ্চ সম্মান।
সারা জীবনের স্বীকৃতি- পেলেন তিনি 'অস্কার'
হৃদয় হলো আন্দোলিত সুখটা পেলেন অপার।
সিনেমা ও সাহিত্যের সে মস্ত বড় বোদ্ধা
বিনম্রতার সাথে জানাই প্রণাম এবং শ্রদ্ধা।
____________________________________
আনন্দ বক্সী
Vill-Beliadanga, P.o-Dakshin
Barasat, P.s-Jaynagar,
Dist-South 24 Parganas,
Pin-743372.
[ছবি: ইন্টারনেট মাধ্যম থেকে সংগৃহীত]
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন