Featured Post

ছড়া ।। আকাশটাকে খোঁজে ।। দীনেশ সরকার

ছবি
আকাশটাকে খোঁজে দীনেশ সরকার            পড়তে বসলে জানলা দিয়ে মন ছুটে যায় দূরে গাইছে পাখি ওই যে গাছে মিষ্টি-মধুর সুরে। কিংবা যখন হাত বাড়িয়ে আকাশ আমায় ডাকে পড়ার পাতায় মন আমার কি বাঁধা তখন থাকে?   পূবের হাওয়া কড়া নাড়ে যখন আমার দোরে কিংবা অলি গুনগুনিয়ে চতুর্দিকে ঘোরে প্রজাপতি পাখা মেলে ওড়ে ফুলের মেলায় কখন যেন অবুঝ এ মন যায় হারিয়ে হেলায়।   কাঠবেড়ালি কাটুস্‌-কুটুস্‌ আমার দিকে তাকায় মন তখন কি আটকে থাকে পড়ার বইয়ের পাতায়? টুনটুনিটা তিড়িং-বিড়িং পুচ্ছ নাচায় গাছে মনটা বাঁধা তখন কি আর অঙ্কখাতায় আছে?   অঙ্ক কষতে ভুল হয়ে যায়, পড়া যাই যে ভুলে স্যারের বকা মাঝে মাঝেই খাই আমি ইস্কুলে। মনকে আমি কত্ত বোঝাই, মন তবু কি বোঝে সুযোগ পেলেই জানলা দিয়ে আকাশটাকে খোঁজে।   ******************************************** দীনেশ সরকার ১৪০ ডি, হিজলি কো-অপারেটিভ সোসাইটি, প্রেমবাজার, খড়্গপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর---- ৭২১৩০৬

জ্ঞানবিজ্ঞানের খবর ।। সংক্ষেপে জেনোবটস ।। মৃণাল কান্তি দেব

সংক্ষেপে জেনোবটস

মৃণাল কান্তি দেব


ছোট্ট বন্ধুরা,রোবোটিক্স নিয়ে তোমাদের আগ্রহ আছে নিশ্চই? হয়তো ইতিমধ্যে তোমরা অনেক কিছু জেনেছ যন্ত্রমানবদের ব্যাপারে। অনেকে আবার এই রোবোটিক্স নিয়ে এখন থেকেই ভাবনাচিন্তা শুরু করেছো। কিন্তু, তোমরা জেনোবটস এর ব্যাপারে কিছু জানো?? অনেকে হয়তো নামটা নতুন শুনছো, আবার অনেকে নামটার সাথে পরিচিত হলেও বিষয়টা নিয়ে ধন্দে আছো। তাহলে শুরু করা যাক, জেনোবটস হল লিভিং রোবট। লিভিং রোবট অর্থাৎ জীবন্ত রোবট। কি, অবাক হলে তো? ভাবছো রোবট অথচ তা জীবন্ত? এ তো সায়েন্স ফিকশন হয়ে গেল, নতুবা হয়ে গেল, সোনার পাথরবাটি। কিন্তু, এটাই সত্যি। রোবট আর স্টেম সেল এর যুগলবন্দিতে তৈরী হওয়া জেনোবোটস বায়োটেকনোলজির আর রোবোটিক্স একাডেমীর বিস্ময়কর সৃষ্টি।

 জেনোবটস এর জেনো কথাটি এসেছে আফ্রিকান এক ফ্রগ এর  নাম থেকে। আফ্রিকান ব্যাঙের সেই প্রজাতির "জেনোপাস লেইভিস "। এই জেনোপাস এর এমব্রায়ো থেকে যে স্টেম সেল পাওয়া যায়, তার উপর ভিত্তি করেই তৈরী করা হয় জেনোবটস এর জেনো তথা

লিভিং পার্ট। এই কাজটির তত্বাবধানে থাকে বায়োটেকনোলোজিস্ট ও মাইক্রোবায়োলজিস্টরা।

রোবোটিক সিস্টেম তৈরী হয় মাইক্রোইলেক্ট্রনিক্স বিভাগের অন্তর্গত আধুনিক কৌশলে। ভারমন্ট ইউনিভার্সিটির লিড রিসার্চার জোশুয়া বনগার্ড এ প্রসঙ্গে বলেছেন "it looks like a tiny blob of moving pink flesh, which can be used in medical field and other social welfare "। বনগার্ড ও তার টীম সুপারকম্পিউটার এর সহায়তায় ডিজাইন তৈরী করেছেন এবং জেনোবটসের ফার্স্ট ভার্সন তৈরী করেছেন।

   জেনোপাস এর স্টেম সেল কে আলাদা করে প্রিজার্ভ করে তাকে ইনকিউবেশন এর জন্য রেখে দেওয়া হয়েছিলো । বিজ্ঞানীরা পর্যবেক্ষণ করে দেখলেন, স্টেম সেল এর স্বাভাবিক বৃদ্ধি(গোলাকার বিন্যাস)ও মিউকাসের জালিকাকার বিন্যাসের দিকে। কোনোরকম নিউট্রিয়েন্টস ছাড়া এই সেল বেশ কিছু দিন টিকতে পারে। বিজ্ঞানীদের মনে হয়েছিল এই স্কিন হার্ট এমব্রায়ো সাইজে মাত্র 1 মিলিমিটার। এই এমব্রায়োর স্টেম সেল টার্গেট সেল এ পৌঁছতে ক্রিয়া সম্পাদন করতে পারে,তাই এই সেল কেই বেছেছিলেন বিজ্ঞানীরা। হার্ট সেল এর ফ্লেক্সিবিলিটিকে কাজে লাগানোর পাশাপাশি স্কিন সেল কেও ব্যবহার করেছিলেন আকৃতি তৈরির জন্য। আবার, বিজ্ঞানীরা  অতি ক্ষুদ্র এই সেলুলার অর্গানাইজেশন এর সাথে যুক্ত হয় সুপার কম্পিউটারের সাহায্যে সৃষ্ট algorithm। সেন্সর, মাইক্রো ডিটেক্টর, প্রসেসর যুক্ত সার্কিটকেও যুক্ত করেছেন অন্যান্য বিজ্ঞানীরা, যাতে সুনির্দিষ্ট কাজটি সম্পাদন করা যায়। আবার, এই স্টেম সেল নিউট্রিয়েন্টস গ্রহণ করলেও সিস্টেমে থাকার দরুন বৃদ্ধি পায় না। ইউরোপের নানা বায়োইঞ্জিনিয়াররা গবেষণা করে বলেছেন, এই সেল সুগারকে absorb করলে যে এনার্জিটা gain করে, তার বেশ কিছুটা পার্সেন্টেজ রূপান্তরিত হয় যান্ত্রিক গতিশক্তিতে, যা ক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে।

টার্গেট সেল কে বৃত্তাকার পথে আবর্তিত করে সেই টার্গেটেড স্পটে ক্রিয়া সম্পাদন করতে পারে জেনোবটস। আবার, কোনো কারণে সেল ড্যামেজ হয়ে গেলেও রিকভার হয়ে যায় নিজে থেকেই। শরীরের মধ্যে থাকা অবাঞ্চিত সেল এর ধ্বংসসাধন, ক্ষতিকর বিজাতীয় পদার্থকে সর্ট আউট করার মতন কাজগুলিও করতে পারবে লিভিং বট, যদিও বিষয়টা এখনো বিস্তর পরীক্ষানিরীক্ষার মধ্যে রয়েছে। জেনোবটস নিয়ে  মাল্টিডাইমেনশনাল অ্যাডভান্সড রিসার্চও শুরু হয়েছে জোরকদমে। বিজ্ঞানের অগ্রগতি হলেও প্রত্যেক মুহূর্তে আমরা মুখোমুখি হচ্ছি নিত্যনতুন চ্যালেঞ্জের। আর সেই চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতে বিজ্ঞানকে আরো ফাস্ট, আরো দুরন্ত হতে হচ্ছে, আর সেই দুরন্ত গতিতে চলার মাঝে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিদ্যা সৃষ্টি করে চলেছে জেনোবটস এর মতন যুগান্তরকারী বিষয়। অন্যান্য টিস্যুর প্রি ডিফেক্টেড অবস্থায় রোগকে চিহ্নিত করা, অর্গান এর বিরূপ ক্রিয়া, টক্সিক এলিমেন্ট কে প্লাসমা থেকে আলাদা করা ইত্যাদি সব কাজগুলিই দ্রুতভাবে করবে বটস। আর্টারি তে পৌঁছে প্লাক কে সক্ষম এটি।বিশেষ কিছু দুরারোগ্য ব্যাধিতে এন্টিবায়োটিককে একদম সোর্স অফ ডিজিজ এ পাঠানো যেতে পারে এই জেনোবটসের সাহায্যে। বিজ্ঞানীরা এই নিয়ে অনেক দূর এগিয়েছেন। ভিটামিন ট্রিটমেন্ট দিয়ে বহু মানুষকে বাঁচাতে সক্ষম জেনোবটস। চর্বির স্তরকে ক্ষয় করতেও পারদর্শী জেনোবটস। সেন্ট্রাল নার্ভাস সিস্টেম এর সমস্যাতেও জেনোবটস এফেক্টিভ। 

 রোগ সরানো ছাড়াও জেনোবটস ব্যবহৃত হচ্ছে প্লাস্টিড নিয়ে রিসার্চ এ, টিস্যু কালচারে, সিনথেটিক বায়োলজিতে। অন্যভাবে বলতে গেলে, জেনোবটস হতে চলেছে ডিপ রুটেড বায়োলজির গেটওয়ে হিসেবে।

ব্যক্তিগতভাবে মনে হয়, জেনোবটস ফুড ইন্ডাস্ট্রি আর কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিস ও ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিতে হাই কোয়ালিটির প্রোডাক্ট নির্মাণে সহায়তা করবে। একাধিক গবেষণা চলছে এই বিষয়ে।

 পরিবেশবিদরা জেনোবটস কে পরিবেশের স্বার্থে নতুনভাবে ডিসাইন করেছেন। সমুদ্রে মাইক্রোপ্লাস্টিক কালেক্ট করে তাকে dissolve করে দেওয়া, কেমিক্যাল টক্সিন কে বিনষ্ট করা ইত্যাদি নানা কাজ করতে পারে জেনোবটস। জেনোবটস এর সব থেকে ভালো দিক হল এই সেল একেবারে নষ্ট হলেও পরিবেশের কোনো ক্ষতি হওয়ার চান্স নেই।

তাহলে, বন্ধুরা, আশা করি, তোমরা জেনোবটস বিষয়টা ভালো ভাবেই বুঝে গিয়েছ।  



   

 চিত্র: জেনোবট

চিত্রঋণ: ইন্টারনেট 

 ___________________________________________________________________________________

 

 

মৃণাল কান্তি দেব


ঘাটাল, কোন্নগর, পশ্চিম মেদিনীপুর

ওয়ার্ড নং -13

মন্তব্যসমূহ

সপ্তাহের পছন্দ

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 38th issue: January 2025

কবিতা ।। আকাশ-সাগর ।। শান্তনু আচার্য

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সুচিপত্র ।। 37th issue: December 2024

কবিতা ।। নতুন বছর ।। জীবন সরখেল

চোখের ভাষা ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত

ছড়া ।। শীতের দু'টি মাসে ।। গোবিন্দ মোদক

প্রচ্ছদ ও সূচীপত্র ।। 24th issue: September 2023

ছোটদের আঁকিবুঁকি ।। কিশলয় - ২২ ।। জুলাই ২০২৩

ছড়া ।। দৃষ্টিকাড়া বৃষ্টি ।। শচীন্দ্র নাথ গাইন

ছড়া ।। অদ্ভূতুড়ে ।। প্রবোধ কুমার মৃধা

মাসের পছন্দ

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 38th issue: January 2025

কবিতা ।। আকাশ-সাগর ।। শান্তনু আচার্য

ছড়া ।। শৈশবের রথ ।। ইয়াসমিন বানু

কবিতা ।। নতুন বছর ।। জীবন সরখেল

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সুচিপত্র ।। 37th issue: December 2024

অণুগল্প ।। ঝুমুক ঝুমুক ।। ব্রজ গোপাল চ্যাটার্জি

ছোটগল্প ।। হেমন্ত দাদার সাথে ।। দীপক পাল

ছড়া ।। আকাশটাকে খোঁজে ।। দীনেশ সরকার

ছড়া ।। শীতবুড়িটা ।। প্রবোধ কুমার মৃধা

কবিতা ।। খুকির বায়না ।। খগেশ্বর দেব দাস

বছরের পছন্দ

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। ত্রয়োত্রিংশ সংখ্যা ।। জুন ২০২৪

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 38th issue: January 2025

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সুচিপত্র ।। 37th issue: December 2024

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। চতুর্ত্রিংশ সংখ্যা ।। জুলাই ২০২৪

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচীপত্র ।। 29th Issue: February

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 31st issue: April 2024

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 32nd issue: May 2024

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 30th issue : March 2024

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। পঞ্চত্রিংশ সংখ্যা ।। আগষ্ট ২০২৪

অতি প্রিয়

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। আত্মপ্রকাশ সংখ্যা ।। অক্টোবর ২০২১

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। দ্বিতীয় সংখ্যা ।। নভেম্বর ২০২১

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 4th issue: January 2022,

নিবন্ধ ।। শিশু-কিশোর সাহিত্যবলয়ে শিশুরাই যেন ব্রাত‍্য না থাকে ।। অরবিন্দ পুরকাইত

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 7th issue: April 2022

নিবন্ধ ।। দেশীয় উদ্ভিদ কেন গুরুত্বপূর্ণ ? ।। ডঃ চিত্তরঞ্জন দাস

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। কিশলয় - ১০ ।। জুলাই ২০২২

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। কিশলয় - ১১ ।। আগস্ট ২০২২

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র : 8th issue: May 2022

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। কিশলয় - ১২ ।। সেপ্টেম্বর ২০২২