এলাচআনন্দ বক্সী
আদি বাসভূমি ছিল ভারতের দক্ষিণ
সেথা হতে করে আজ পৃথিবী প্রদক্ষিণ।
আদা-পরিবারেরই এ যে এক সদস্য
মশলা হিসাবে জানে একে সারাটা বিশ্ব।
ছোট-বড় দুই রূপে একে পাবে ধরাধামে
সহজ-সস্তা নয় এটি মহার্ঘ দামে।
টাকু বা ডিম্বাকার এর দেহের গড়ন
রাজকীয় যেন সব তার ধরনধারন।
পাতলা পাপড়ি সম এর বাইরের স্তর
অন্তরে কুচোদানা বসে থাকে পরপর।
হলুদ-বাদামি হোক বা সে লালচে বাদামি
দানাগুলো আমাদের অতি মঙ্গলকামী।
সবুজ ও কালো রঙ এর ত্বকে দেখা যায়
তীব্র শীতল স্বাদে এ যে জিভ চমকায়।
গরমমশলারও এটি এক উপাদান
গোটা-গুঁড়ো দু'ভাবেই এতে করে যোগদান।
ভারত-রাজ্যগুলি একে নানা নামে ডাকে
'এলাচ' নামেই ভাই চেনে বাঙালিরা একে।
ভিটামিন এ-সি আছে এর দেহখানিজুড়ে
খনিজ-প্রোটিন পেতে একে খাও বেশি করে।
ফাইবার-ফ্যাটটাও তুমি এর কাছে পাবে
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পেতে কার কাছে যাবে?
আমিষ ও নিরামিষ নানা পদ রান্নায়
এলাচের অবদান চট করে ভোলা দায়।
বিরিয়ানি রাঁধো এতে আর কাবাব-পোলাও
স্বাদ ও গন্ধ বলে আগে মুখে তুলে নাও।
পায়েস-হালুয়া করো কিম্বা ক্ষীর-মিষ্টি
এর যোগে হয়ে ওঠে অন্য সে সৃষ্টি।
লস্যি বানাও এতে আর স্যালাড ফলের
অপরূপ সৌরভ তুমি পাবে সদা টের।
আইসক্রিম-কফি-চায়ে যদি দাও এর গুঁড়ো
স্বাদ তার ছুঁতে চায় যেন পাহাড়ের চুড়ো।
ঔষধ রূপেও যে আছে নানা কাজ তার
নানা রোগ উপশমে একে খুব দরকার।
প্রতিরোধ করে এটি মধুমেহ-অবসাদ
অম্বল সাথে লড়ে করে দেয় কুপোকাত।
রুখে দেয় শুনি এটি ক্যান্সার-হৃদরোগ
মাথাব্যাথা-হাঁপানির কমে যায় দুর্ভোগ।
মানসিক চাপ কমে এতে, কমে কাশি-জ্বর
কোষ্ঠকাঠিন্যকে এ যে করে দেয় পর।
কেশকে দীর্ঘ করে আর গোড়া মজবুত
কালো দাগ দূর করে ত্বকে রাখেনাতো খুঁত।
ঠোঁটকে কোমল করে আনে গোলাপির আভা
স্বচ্ছতা এনে ত্বকে বাড়ায় যে তার প্রভা।
হার্টবিট ভালো রাখে চুলকানিকে হারায়
মুখের দুর্গন্ধ এটি সহজে তাড়ায়।
হঠাৎ পেশিরটানে এ যে খুব দরকারি
উচ্চ রক্তচাপে একে প্রয়োজন ভারি।
পরিপাক ভালো করে স্মৃতিশক্তি বাড়ায়
দাঁত ও মাড়ির রোগ এ যে সহজে সারায়।
বিপদ বাড়তে পারে যদি খাও হরদম
গলব্লাডার স্টোনেতে এ খেওনা একদম।
নেপাল-ভূটান-চিনে এর চাষ হয় জানি
'মশলার রানি' বলে একে সক্কলে মানি।
_______________________________
গ্রাম-বেলিয়াডাঙ্গা,ডাক-দক্ষিণ বারাশত, থানা-জয়নগর,
জেলা-দক্ষিণ ২৪পরগনা,সূচক-৭৪৩৩৭২।
[ছবি: ইন্টারনেট মাধ্যম থেকে সংগৃহীত]
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন