Featured Post

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। কিশলয়-৪৮ নভেম্বর, ২০২৫

ছবি
  সম্পাদকীয় ছোট্ট বন্ধুরা, কেমন আছো সবাই? পুজোর ছুটি শেষে স্কুল যাওয়া আসা শুরু হয়েছে তোমাদের। বছরের শেষ দিকে পড়াশুনার একটা নতুন উদ্যম  শুরু হয়েছে আশা করি।  শরত শেষে হেমন্তের হাত ধরে ধীরে ধীরে শীতের আগমন ঘটছে। একটু একটু করে শীতের পোশাক চড়াতে হচ্ছে গায়ে। হেমন্তের পড়ন্ত বিকেলে সোনালী ধানের মাঠে মন চুরি যায়। ভোরের কুয়াশায় জড়িয়ে থাকে রাতের স্মৃতি।সকালে শিশিরের স্নাত ঘাসের উপর  পা দিলেই শিহরণ লাগে। শীত আসছে মানেই তো খেজুরের রস,নলেন গুড়। সারা বছর যেন আমরা মুখিয়ে থাকি তাই না? ঋতু যাওয়া আসার মাঝের সময়টাও বেশ মজাদার। বসন্তের মতো হেমন্তও ক্ষণস্থায়ী। যাওয়ার আগে মন উদাস করে দিয়ে যায়। নীল আকাশ আর বাতাসের স্নিগ্ধতায় মন কেমন করা ভাব আসে । মাঠে তখন সোনালী ধানের শীষ দোলে।কৃষকরা ব্যস্ত থাকে ধান কাটায়। চারদিকে ফসলের ঘ্রাণে ভরে ওঠে গ্রামবাংলা। তবে এই ঋতু পরিবর্তনের সময় সাবধানে থেকো সবাই। শরীরের যত্ন নিও।  আগামী শীতে  নবান্ন,পৌষপার্বণের মতো উৎসব অপেক্ষা করে আছে। সেই আনন্দে অবগাহনের আগে পরীক্ষা প্রস্তুতিও সেরে নিতে হবে। তাই না? আর সঙ্গে তো তোমাদের প্ৰিয় কিশলয় প...

বিস্তারিত জানতে ছবিতে ক্লিক করুন :

গল্প ।। পুটকির কাঠবিড়ালি ।। চন্দ্রমা মুখার্জী



1,100+ Two Squirrels Stock Photos, Pictures & Royalty-Free Images - iStock  | Two animals, Squirrel family, Penguins

পুটকির কাঠবিড়ালি

চন্দ্রমা মুখার্জী

  

পুটকিকে মনে আছে তোমাদের? আরে সেই বাচ্চা মেয়েটা যাকে তার মামা পুটকিপুলি বলে ডাকত। না না, আমরা তাকে সে নামে ডাকব না। সে এখন অনেক বড় হয়েছে তাকে পুটকিপুলি বললে সে ভীষণ রাগ করবে। আমরা তাকে তার ভালনাম মেঘনা না ডেকে তার ডাকনাম পুটকি বলেই ডাকব।

          পুটকির আগের গল্পদুটো জানো তো তোমরা? সেই শিমুলতলা গিয়ে খরগোশ আর নারায়ণচক গিয়ে টিয়াপাখি আনা? তো এইবার আমি পুটকি কি করে কাঠবিড়ালি পেলো সে গল্প বলব।

          এই শীতের ছুটিতে পুটকি ওর বাবার বন্ধু অমিতকাকুর বাড়ি গিয়েছিল। অমিতকাকুর বাড়ি আমেদাবাদ। খুব সুন্দর, শান্ত আর পরিষ্কার জায়গা। অমিতকাকুর বাড়ি ঠিক আমেদাবাদ শহরে নয়, একটু এগিয়ে গিয়ে গান্ধীনগরের কাছে। সেই জায়গাটা আরও পরিষ্কার। প্রচুর গাছপালা আছে চারপাশে। আর আছে গাছে গাছে প্রচুর পাখি আর কাঠবিড়ালি। এই কাঠবিড়ালির সাথে পুটকির কি করে বন্ধুত্ব হল সেই গল্পই এবার বলব।

          ২৪শে ডিসেম্বর রাতে পুটকিরা অমিতকাকুর বাড়ি এসেছে। ঐ রাতের অন্ধকারে চারপাশটা কেমন, কি আছে কিছুই বুঝতে পারেনি। পরেরদিন সকালে উঠে পুটকি তো অবাক, এতো সুন্দর জায়গা! কাকুর বাড়ির ঠিক পাঁচিল ঘেঁষেই একটা বড় নিমগাছ, আর তাতে – ওমা, কি অবাক কাণ্ড, একজোড়া কাঠবিড়ালি।

          পুটকি তো কাঠবিড়ালি দেখে ভীষণ খুশি। ও আগে কোনদিন সামনে থেকে কাঠবিড়ালি দেখেনি। যা দেখেছে বইয়ের পাতায় আর টিভিতে। তাই পুটকি খুব উত্তেজিত হয়ে উঠল। সারাদিন ঐ গাছটার দিকে তাকিয়ে কাঠবিড়ালি দুটোকে খুঁজে বের করাই ওর একমাত্র কাজ হয়ে উঠল। ও যে ঘরটায় ছিল তার জানলা দিয়ে গাছটাকে পরিষ্কার দেখা যায়।

          পরেরদিন থেকে পুটকি পারলে সারাদিন ঐ গাছের তলায় বসে থাকে, ঐ কাঠবিড়ালি দুটোকে ধরবে বলে। ওগুলোকে নাকি ও বাড়ি নিয়ে গিয়ে পুষবে। বাবা শুনে খুব খানিক হেসে বললেন, "কাঠবিড়ালিও আবার কেউ কখনো পোষে, শুনিনি তো। তা এতো গুজরাটি কাঠবিড়ালি, তুই ওর ভাষা তো কিছুই বুঝবি না। তারচেয়ে বরং কলকাতা গিয়ে তোকে কোথাও থেকে বাঙালি কাঠবিড়ালি ধরে এনে দেব, তাহলে চলবে তো?" মা শুনেই রেগে গেলেন, "যেখানে যাবি, একটা না একটা কিছু পোষার জন্য বায়না শুরু করবি। আমি আর তোকে কোথাও নিয়েই যাব না।" শুনে পুটকির মনটা একটু খারাপ হয়ে গেল।

          পরেরদিন গান্ধী আশ্রম গিয়েও পুটকির মনটা ঠিক যেন সেখানে ছিল না। বারবার ওর মনে হচ্ছিল যে, কখন ও বাড়ি যাবে আর ঐ কাঠবিড়ালি দুটোকে দেখবে। যদিও গান্ধী আশ্রমও খুব সুন্দর জায়গা। সামনে সবরমতী নদী আর তারধারে আশ্রমের পাঁচিলের গায়ে কোটরে প্রচুর টিয়াপাখি। সেই টিয়াপাখিগুলো সামনে এসে খাবার খেয়ে আবার উড়ে চলে যাচ্ছে। আর সেগুলোকে দেখে অনেকদিন পর পুটকির নিজের সেই টিয়াটার কথা মনে পড়ল।

          ওখান থেকে ফিরেই বিকেলে পুটকি ছুটতে ছুটতে বাগানের ঐ নিমগাছটার কাছে চলে এল। কিন্তু কাঠবিড়ালি দুটোকে দেখতে পেল না।

          সেদিন সন্ধ্যে হয়ে গেল। পুটকির মনটা খারাপ হয়ে আছে। সকাল থেকে আজ সারাদিন ও একবারও কাঠবিড়ালি দুটোকে দেখেনি। রাতে ঘুমোতে গিয়েও ওদের কথা ভাবতে লাগল।

          হঠাৎ ও একটা খুটখুট শব্দ শুনে চমকে উঠল। ধড়ফড় করে বিছানায় উঠে বসে দেখে, পাশে মা – বাবা কেউ নেই। সামনে তাকিয়ে দেখে দেওয়ালের গা ঘেঁষে যে টেবিলটা আছে, তার ওপর বসে রয়েছে সেই কাঠবিড়ালি দুটো।

          ওকে বিছানায় উঠে বসতে দেখে কাঠবিড়ালি দুটো দৌড়ে দৌড়ে ওর কাছে চলে এল। ওর লেপের ওপর দাঁড়িয়ে রইল। হঠাৎ একটা কাঠবিড়ালি অন্যটাকে কানে কানে কি যেন বলল। তারপরই হঠাৎ ওর দিকে তাকিয়ে ওকে ধমকে উঠল, "এই দুষ্টু মেয়ে, তুমি কি ভাবো আমরা গুজরাটি কাঠবিড়ালিরা বাংলা জানিনা বা বুঝিনা? আমরা সব জানি, আমরা তোমাদের মানুষদের মতো নই।"

          তখন পুটকি প্রচণ্ড চমকে গিয়ে বলল, "আমি না গো, আমার বাবা ওকথা বলেছে।" কাঠবিড়ালিটা আরও রেগে গিয়ে চোখ পাকিয়ে বলে উঠল, "তুমি কেমন মেয়ে গো? নিজের বাবার ঘাড়ে দোষ চাপাচ্ছো, এতো ভাল কথা নয়।" পুটকি কিরকম হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে রইল ঐ কাঠবিড়ালিটার দিকে। ওকি এত রাতে পুটকিকে বকতে এসেছে?

          ওর এই হতভম্ব ভাব দেখে এতক্ষণে এবার অন্য কাঠবিড়ালিটা মুখ খুলল। সে বলল, "আহা, ওকে অতো বকছ কেন? বাচ্চা মেয়ে, ঘাবড়ে যাচ্ছে। অন্যের ওপর রাগ করে ওর ওপর সেই রাগটা ঝাড়লে হবে? যা বলতে এসেছ, সেটা বলো, তারপর আমরা চলে যাই।"

          তখন অন্য কাঠবিড়ালিটা বলতে শুরু করল, "আমরা ঐ নিমগাছটায় থাকি সেটা তুমি খুব ভালই জানো। এবার বলতো দেখি, ঐ গাছটায় আমরা দুজন ছাড়া আর কোন কাঠবিড়ালি নেই কেন?" বলে চোখ পিটপিট করতে লাগল। পুটকি এবার বলল, "আমি কি করে বলব? তোমাদের ছানা নেই? বাবা – মা নেই?"

          কাঠবিড়ালিটা আবার উত্তেজিত হয়ে বলে উঠল, "না নেই। যারা ছিল সব হয় মরে গেছে, নয় এদিক – ওদিক চলে গেছে। থাকবেই বা কি করে? গাছ কেটে ফেললে থাকবে কোথায়? আগে এখানে পাশাপাশি আরও দুটো নিমগাছ ছিল। তোমার ঐ কাকুটা কেটে ফেলল। বলল, "এত নিমগাছ কি হবে। এখন শুনছি এই গাছটাও নাকি কেটে ফেলবে, ফুলগাছ বসাবে। তাহলে আমরা থাকব কোথায় শুনি?"

          অন্য কাঠবিড়ালিটা বলল, "পুটকি, তুমি তোমার ঐ কাকুটাকে বলে দেখো না যাতে গাছটা না কাটে।" পুটকি বলল, "ঠিক আছে। আমি বলব।"

          একথা বলার পরই পুটকির মনে হল, কে যেন ওকে ঠেলছে। ও চোখ মেলে দেখল, মা ডাকছে, সকাল হয়ে গেছে। ও কোনদিকে না তাকিয়ে খাট থেকে নেমেই কাকুর ঘরের দিকে ছুটল। গিয়েই কাকুকে কাল রাতের স্বপ্নের কথা বলল। সব শুনে কাকু তো অবাক।

          বাবা-ই তখন কাকুকে পুটকির আগের কাণ্ডকারখানার কথা বলল। তারপর বলল, "গাছটা কাটিস না। এমনিতেও নিমগাছ তো খুব উপকারী।" সব শুনে কাকুও রাজি হল গাছটা না কাটতে। পুটকি খুব খুশি।

          কদিন পর বাড়ি যাওয়ার জন্য বেরনোর সময় পুটকি গাছটার কাছে গেল। কাঠবিড়ালি দুটোকেও দেখতে পেল। ওর মনে হল, ওরা যেন ওকে বলছে, Thank you।

______________________________________________________________________________________ 

 

চন্দ্রমা মুখার্জী

ঠিকানা – বি সি – ৮৩, 

সমরপল্লী, কৃষ্ণপুর, কলকাতা – ৭০০১০২

[চিত্রঃ: ইন্টারনেট মাধ্যম থেকে সংগৃহীত]

 

মন্তব্যসমূহ

সূচিপত্র

আরও দেখান

সপ্তাহের পছন্দ

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। কিশলয়-৪৮ নভেম্বর, ২০২৫

কবিতা ।। বোন ।। আব্দুল্লাহ আল নোমান

ছোটগল্প ।। হাসির চাবি আর জোনাকির রাজ্য ।। অয়ন মুখোপাধ্যায়

ছোটদের আঁকিবুঁকি ।। কিশলয় মাসিক পত্রিকা ।। অষ্টচত্বারিংশসংখ্যা ।। নভেম্বর ২০২৫

ছড়া ।। স্বপ্নে ।। সুশান্ত সেন

ছড়া ।। ভাবনা ।। সুশান্ত সেন

ছড়া ।। গোলরক্ষক ।। সুশান্ত সেন

কবিতা ।। এখন ।। সুশান্ত সেন

কবিতা ।। দুষ্টু ছেলে ।। সুশান্ত সেন

ছড়া ।। জীবন গড়ো ।। গৌর গোপাল পাল

মাসের পছন্দ

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। কিশলয়-৪৮ নভেম্বর, ২০২৫

কবিতা ।। বোন ।। আব্দুল্লাহ আল নোমান

ছোটগল্প ।। হাসির চাবি আর জোনাকির রাজ্য ।। অয়ন মুখোপাধ্যায়

ছোটদের আঁকিবুঁকি ।। কিশলয় মাসিক পত্রিকা ।। অষ্টচত্বারিংশসংখ্যা ।। নভেম্বর ২০২৫

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। কিশলয় ৪৬ ।। সেপ্টেম্বর, ২০২৫

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। কিশলয় ৪৭ অক্টোবর, ২০২৫

ছড়া ।। স্বপ্নে ।। সুশান্ত সেন

ছড়া ।। ভাবনা ।। সুশান্ত সেন

ছড়া ।। গোলরক্ষক ।। সুশান্ত সেন

কবিতা ।। এখন ।। সুশান্ত সেন

বছরের পছন্দ

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। কিশলয় ৪০ ।। মার্চ ২০২৫

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। কিশলয় ৪৪ ।। জুলাই ২০২৫

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 38th issue: January 2025

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সুচিপত্র ।। 37th issue: December 2024

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। কিশলয় ৪৬ ।। সেপ্টেম্বর, ২০২৫

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। কিশলয় ৪১ ।। এপ্রিল ২০২৫

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। কিশলয় ৪২ ।। মে ২০২৫

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। ,39th issue: February 2025

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। কিশলয় ৪৫ ।।আগস্ট, ২০২৫

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। কিশলয় ৪৭ অক্টোবর, ২০২৫

অতি প্রিয়

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। আত্মপ্রকাশ সংখ্যা ।। অক্টোবর ২০২১

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। দ্বিতীয় সংখ্যা ।। নভেম্বর ২০২১

নিবন্ধ ।। শিশু-কিশোর সাহিত্যবলয়ে শিশুরাই যেন ব্রাত‍্য না থাকে ।। অরবিন্দ পুরকাইত

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 4th issue: January 2022,

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 7th issue: April 2022

নিবন্ধ ।। দেশীয় উদ্ভিদ কেন গুরুত্বপূর্ণ ? ।। ডঃ চিত্তরঞ্জন দাস

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। কিশলয় - ১১ ।। আগস্ট ২০২২

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। কিশলয় - ১০ ।। জুলাই ২০২২

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র : 8th issue: May 2022

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। কিশলয় - ১২ ।। সেপ্টেম্বর ২০২২