Featured Post

লেখা-আহ্বান : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য

ছবি
     মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কোন বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠানো ভালো (যেমন, কবিতা ১২-১৪ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে)। তাতে অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়। সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৫-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) যতিচিহ্নের আগে স্পেস না দিয়ে পরে দেবেন। ৪) বিশেষ কোন চিহ্ন (যেমন @ # *) ব্যবহার করবেন না। ৫) লেখার নীচে একটি ঘোষণা দিন:  'লেখাটি স্বরচিত ও অপ্রকাশিত'। মেল আইডি :  printednabapravat@

ভ্রমণকাহিনি ।। টুটুলের হিমালয় দর্শন ।। দীপক পাল

টুটুলের হিমালয় দর্শন 

টুটুলের হিমালয় দর্শন

দীপক পাল

                                




গতকাল রাত থেকে বৃষ্টি হয়েই চলেছে একটানা। কখনো খুব জোরে আবার কখনও  আস্তে। কিন্তু বিরামহীন। আর একটু পরেই নামবে সন্ধে। টুটুল আজ আর ইস্কুল  যায়নি। কি করে যাবে? রাস্তায় যে জল। আবার ইস্কুলে যাবার সময়টা ভারী বৃষ্টি হচ্ছিল। নিমেষে রাস্তার  জলটা গেল আরও  বেড়ে।  স্কুলে যাওয়ার ইচ্ছেটা আর  মা বাবাকে বলা  গেল  না l টুটুলের  স্কুল শুরু হয় সকাল সাতটা আর ছুটি  হয়  দশটা  চল্লিশে l বাবা  স্কুলে পৌঁছে দেয় আর মা  নিয়ে  আসে l বাবা তাকে  স্কুলে পৌঁছে দিয়ে বাজার  দোকান  করে  বাড়ি ফেরে l আজকে  টুটুল  স্কুল  যায়নি, তাই  বাবার বাজার করাও হয়নি l জানলা  দিয়ে সে  দেখতে পেলো রাস্তায় লোকেরা  প্রায়  হাঁটু  অব্দি ডুবিয়ে হাঁটা  চলা করছে l আর  নাক  বরাবর রাস্তাটা  পেরোতে যে বড়ো মাঠটা পরে সেই  মাঠেই টুটুল অনেক বন্ধুদের সাথে খেলাধূলা করে l বাচ্চু, শংকর, মনটাই, দেবু, খোকন, শান্তনু  এরা সব ওর বন্ধু l আজ  মাঠে কত জল l মাঠ যে  রাস্তার লেভেলের নীচে l বৃষ্টির জোর একটু  কমতে বাবা  প্যান্ট গুটিয়ে বাটার স্যান্ডাক পায়ে গলিয়ে মাথার ওপর ছাতা ধরে অত্যন্ত সাবধানে রাস্তায় নেমে জল ঠেলে ঠেলে অফিসে চলে  গেলো l টুটুল জানলা থেকে  সরে আসলো l  এসে বইপত্র নিয়ে নাড়া চাড়া  করতে লাগলো।


              বারোটা  বাজতে টুটুলের মা টুটুলকে স্নান করে নিতে বললো। দেখলো মা'র স্নান হয়ে গেছে। ঠাকুরঘরে যাবার জন্য প্রস্তুত হয়ে গেছে l এই  সময় মাকে দেখতে ভালো লাগে টুটুলের। মা যে দেখতে বেশ  সুন্দর।  মা ঘর থেকে বেরিয়ে যেতেই ও বইপত্র সব গুছিয়ে রাখলো  টেবিলের ওপর। বাথরুমে মা ওর জন্য বালতিতে জল তুলে রেখেছে। স্নানের পর কোন জামা প্যান্ট পরবে সেটাও রেখে দিয়েছে, আর রেখে দিয়েছে গামছা l গায়ের জামা প্যান্ট গুলো পরে  মা ঠাকুর ঘর থেকে এসে কেচে মেলে দেবে। টুটুল মজা করে স্নান করে বেরিয়ে আসলো। স্নান হয়ে যাবার কিছুক্ষণ পরে মা খেতে ডাকলো। খাবার টেবিলে এসে বসতেই মা গরম গরম খিচুড়ি বেগুনি আর পাঁপড় নিয়ে বসলো আর সঙ্গে একটা পাত্রে  চাটনী, তার ওপর চামচ একটা। টুটুল খিচুড়ি খেতে দারুন ভালবাসে আর তার সাথে যদি থাকে বেগুনি তাহলে তো কোন কথাই নেই। টুটুল মার সাথে গল্প করতে করতে এই মেঘলা বৃষ্টির পরিবেশে খিচুড়ি  খেতে পেয়ে ভারী খুশী হলো। বেশ খানিকটা খেয়ে ফেললো। তারপর দুপুরে মায়ের সাথে গল্প করতে করতে একসময় ঘুমিয়ে পড়লো।


               কতক্ষণ ঘুমিয়েছে সে কে জানে, ঘুম থেকে উঠে দেখে মা পাশে নেই। পাশের ঘরে টিভি চলছে শোনা যাচ্ছে।  তার মানে মা টিভি দেখছে এখন। টুটুল পাশের ঘরে না গিয়ে জানালার কাছে এসে দাঁড়ালো। দেখে রাস্তার জল অনেকটা নেমে গেছে। রাস্তার মধ্যের অনেকটা অংশ জেগে উঠেছে। কিন্তু মাঠটা ডুবে আছে। সেদিকে তাকিয়ে তার মনটা আবার খারাপ হয়ে গেল। কে জানে কতদিন পরে আবার ঐ মাঠ খেলার উপযোগী হবে। পিছনে মায়ের কন্ঠস্বর পেল,


- ' কি রে টুটুল, কখন উঠেছিস ঘুম থেকে? আমায় ডাকিসনি তো? এদিকে সন্ধে  নামছে। আমি টুক করে ঠাকুর ঘরে গিয়ে সন্ধেটা দিয়ে আসি। ঠাকুর ঘর থেকে এসে তোকে ম্যাগী বানিয়ে দেব।'


- ' মা, বাবা কখন আসবে?'

- ' এই আসলো বলে। অফিস থেকে বেরিয়ে ফোন করেছিল। সোজা বাড়ি চলে আসবে বলছিল। মেট্রো করে আসতে  কতক্ষণই বা লাগবে।' মা ঘর থেকে বেরিয়ে গেল।


              কিছুক্ষণ পরেই শাঁখের আওয়াজ পাওয়া গেল মায়ের। তারপর আশে পাশের বাড়ি থেকেও পর পর শাঁখের আওয়াজ শোনা যেতে লাগলো। টুটুল দুহাত জোর করে নমস্কার করল। তারপর পড়তে বসলো। টুটুল পড়াশোনা করতে খুব ভালবাসে। সে এবার ক্লাস  থ্রিতে উঠেছে। সে ক্লাসের  ফার্স্ট  বয়। অংকনেও ওর হাত খুব ভাল বয়স অনুপাতে। খুব বেশীদিন হয়নি ওর বাবা ওকে আঁকার ইস্কুলে ভর্তি করে দিয়েছে। এর মধ্যেই ও মাস্টার মশাইয়ের অতি প্রিয় পাত্র হয়ে উঠেছে। বাবাই ওকে ইস্কুলে  দিয়ে আর নিয়ে আসে প্রতি  রবিবার।  আঁকার ইস্কুল  থেকে ফিরে  আসতে দশটা বেজে যায়। বাড়ী ফিরে কিছু খেয়ে নিয়ে বাবার সাথে কেরাম, লুডো বা বল খেলে। না হয় টিভিতে কোন ছোটদের প্রোগ্রাম দেখে। সব চেয়ে আনন্দ লাগে বাবার কাছে গল্প শোনা। বাবা একটা গল্পের ঝুড়ি। ভারতবর্ষের  বহু জায়গাতেই ঘুরে বেরিয়েছে বাবা। সেই ঘুরে বেড়াতে গিয়ে বাবার যে কতরকম অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে সে সব গল্প শুনতে বেশ ভাল লাগে টুটুলের। মনে হয় সে যেন স্বচক্ষে সব দেখতে পাচ্ছে। ভারী রোমাঞ্চকর সে সব ঘটনা। এছাড়া কত  গল্পের বই বাবা কিনে দিয়েছে দুর্গাপুজো  ও জন্মদিন উপলক্ষ্যে। সত্যজিৎ রায়, নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়, শিবরাম চক্রবর্তী, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের নানা মজার মজার  বই । বাবা যখন টেনিদা ও হর্ষবরধন-গোবরধনের গল্প  জোরে জোরে পড়ে শোনায় তখন টুটুল হাসতে হাসতে একেবারে

গড়িয়ে পরে। এমন কি মা পর্যন্ত শুনে খুব  হাসে।


              একদিন বাবা ডিনার সারতে সারতে টুটুলকে শুনিয়ে শুনিয়ে মাকে বলে,


- ' এবার পুজোর পর টুটুলকে হিমালয় দর্শন  করাব। কিরে টুটুল যাবি তো? ঐ যে নীল আকাশে সাদা সাদা মেঘ দেখতে পাস, হিমালয়ে ঐগুলো দেখবি তোর পায়ের নিচে অথবা তোর গায়ের  ওপর দিয়ে চলে যাচ্ছে ।'  টুটুল অবাক হয়ে শোনে  আর ভাবে সেটা কি সত্যি সত্যিই হয় ? কিন্তু  সেটা কি করেই বা হয়।


              এখন শরৎ কাল। কাশফুল দেখা যায় ইতস্তত হাওয়ায় দুলতে। নীল আকাশে সাদা মেঘের দল বিভিন্ন  আকৃতিতে ভেসে বেড়াতে দেখা যায় । টুটুল আকাশের ঐ চলমান মেঘেদের দিকে অবাক হয়ে চেয়ে থাকে মাঝে মাঝে । ভাবে ঐ মেঘগুলো  কত উঁচুতে। ওরা নাকি ওই মেঘেদেরও উপরে উঠে যাবে। সেটা কি করে হবে তা সে বুঝে উঠতে পারেনা কিছুতেই। এদিকে দেখতে দেখতে দুর্গাপুজা এসে গেল। টুটুল মা বাবার সাথে দুদিন পুজোর বাজার করতেও গিয়েছিল।  পুজোয় ষষ্ঠী আর সপ্তমীতে মা বাবার সাথে অনেক অনেক ঠাকুর দেখলো। অষ্টমী থেকে দশমী পর্যন্ত বন্ধুদের সাথে পাড়ার পুজোর প্যানডেলে খুব মজা করে কাটাল। মা বাবাও অষ্টমী পুজো তে ছিল আর দশমীতে মা সিঁদুর খেলা খেললো। ঠাকুরকে সিঁদুর দিয়ে, সন্দেশ  খাইয়ে প্রণাম করে পাড়ার সব মহিলাদের সাথে সিঁদুর খেললো। তাদের মধ্যে টুটুলের বন্ধুদের মায়েরাও ছিল।


              একাদশীর  দিন সন্ধে  পৌনে আটটায় শিয়ালদহ  থেকে নর্থ বেঙ্গল এক্সপ্রেস ছাড়লো। এসি কামরায় একটা সিটে জানলার ধারে টুটুল মায়ের পাশে বসলো। বাবা বসলো ঐ লাইনেরই পাশের সিটে। মাঝে চলা ফেরার প্যাসেজ। টুটুল মাকে বললো, 


- ' মা, বাবা এই কামরার টিকিট কাটলো কেন বলতো? জানলাটা খোলা যায়না। বাইরের একটু কিছুই দেখা যাচ্ছে  না।?'


- ' সেটা তুই তোর বাবাকেই জিজ্ঞেস  কর।'  টুটুলের মা হেসে উত্তর দিল।


              টুটুল চুপ করে থাকে। নটার সময় মা টিফিন বক্স বার করে টুটুল ও তার বাবাকে দুটো কাগজের থালায় করে লুচি ও আলুর দম সাজিয়ে খেতে দিল এবং নিজেও একটা থালায় নিল l খেয়ে দেয়ে বাংকে বিছানা করে শুয়ে পড়লো সবাই। ট্রেনের  দুলুনিতে টুটুলের চোখে ঘুম নামল। মায়ের ঠেলাঠেলিতে ওর ঘুম ভাঙতেই ধড়মড় করে উঠে পড়লো। চেয়ে দেখল মা বাবা মালপত্র সব গুছিয়ে জামা কাপড় ঠিক ঠাক করে নিয়ে রেডি হয়ে গেছে। মা টুটুলকে বললো,


- ' এবার নাম তুই, এইনে ব্রাশে পেস্ট  লাগিয়ে দিয়েছি, দাঁত মেজে মুখটা ধুয়ে ফেল তাড়াতাড়ি | আমি বিছানাটা সরিয়ে রেখে বিস্কুট বার করছি। চা বিস্কুট খেতে খেতেই নিউ জলপাইগুড়ি এসে যাবে। তারপর ট্রেন থেকে নামতে হবে আমাদের। তারপরে তো দার্জিলিঙে।'


              টুটুল কোন কথাই না বলে দাঁত মেজে নিল। বাবা ওকে সঙ্গে করে নিয়ে গিয়ে মুখ ধুইয়ে বাথরুমে ঢুকিয়ে ফ্রেশ করিয়ে আনলো। তারপর চায়ের অর্ডার দিল। সত্যি সত্যিই চা খাওয়া শেষ হতেই ট্রেনটা ধীরে ধীরে স্টেশনে ঢুকলো। মালপত্রগুলো ট্রেন থেকে নামিয়ে নিয়ে ভীর ঠেলে ঠেলে ওরা বেরিয়ে এলো বাইরে। বাবা একটা ছোট গাড়ি ভাড়া করলো দার্জিলিঙে যাবার জন্য।  গাড়ির ড্রাইভার মালপত্রগুলো গাড়ির ওপরে তুলে দিয়ে ত্রিপল দিয়ে ভাল করে বেঁধে দিল। টুটুল গাড়ির জানলার পাশে গিয়ে বসল। বাবা ড্রাইভারের পাশে বসে ড্রাইভারের কাছে নানা রকম খবর নিতে লাগলো। একজায়গায় গাড়ি দাঁড় করিয়ে একটা রেস্টুরেন্টে ঢুকে ব্রেকফাস্ট করে আবার গাড়িতে উঠে বসলো। গাড়ি ছাড়লো। বাবা পেছনে ঘাড় ঘুরিয়ে টুটুলকে বললো,


- ' টুটুল এইবার আমরা পাহাড়ে উঠবো এবং উঠতেই থাকবো মেঘেদের রাজ্যের ভিতর দিয়ে সাত হাজার ফুট ওপরে ঘুম স্টেশনে। তারপর আবার কিছুটা নেমে ছ হাজার সাতশো ফুট উচ্চতায়  দার্জিলিং এ। তারপর দেখবি কি মজা।'


              টুটুল অবাক হয়ে বাবার কথা শুনছিল। মনে মনে একটা ছবি ভেসে উঠলো চোখের সামনে। এর মধ্যে শুকনা টি এস্টেট পেরিয়ে গেল। গাড়ী ঘুরে ঘুরে পাহাড়ে উঠতে লাগলো। রাস্তার একদিকে খাদ কোথাও তা বেশ গভীর আর একদিকে পাহাড়ের গা উঁচুতে উঠে গেছে। রাস্তার  দুই ধারে পাইনের অরণ্য। টুং স্টেশন  চলে গেল মেঘের ভেতর দিয়ে। ভয়ে টুটুল মাকে জড়িয়ে ধরে থাকে। মাকে বলে,


- ' মা কিছুই তো দেখা যাচ্ছে না, ড্রাইভার গাড়ী চালাচ্ছে  কি ভাবে,  গাড়ী যদি খাদে পড়ে যায়।'


-  ' চুপচাপ  বসে থাক, কিছুই হবে না দেখবি।'  ঘাড় ঘুরিয়ে বাবা বললো,


- ' টুটুল দেখ আমরা কেমন মেঘেদের রাজত্বে ঢুকে পরেছি। তোকে বলেছিলাম না সেদিন, এর পর ঘুমে গিয়ে দেখবি এই মেঘগুলো তোর পায়ের নিচে।'


              আবার সামনের রাস্তা পরিষ্কার হয়ে গেছে। মেঘ নেই। এ যেন এক লুকোচুরি খেলা। ঘুম স্টেশনে গাড়ী দাঁড়াল।  গাড়ী থেকে নেমে ওরা  চায়ের সাথে অল্প কিছু খেয়ে নিল। খাওয়ার পর টুটুলরা বেরলো ঘুরতে। একটা খুব সুন্দর  বৌদ্ধ মনাসটরি দেখলো। তারপর গেল বাতাসিয়া  লুপ্ দেখতে। আগে টয় ট্রেন এখানে বড়ো করে একটা চক্কর দিয়ে দার্জিলিঙের দিকে নামতে থাকতো। এই জায়গাটা খুব ভাল লাগলো। কত মেঘ নিচে পাহাড়ের গায়ে খাঁজে খাঁজে আটকে আছে বলে মনে হয়। এরপর আবার গাড়িতে উঠে রওনা দিয়ে অনেক গাড়ির পেছনে পেছনে লাইন করে গিয়ে একটা হোটেলের সামনে দাঁড় করাল।  এই সুন্দর হোটেলটা বাবা অনেক আগেই বুক করে রেখেছিল। হোটেলে ঢুকে একটু বিশ্রাম করে, স্নান খাওয়া সেরে টুটুলরা সোজা উঠে গেল ম্যালে। ম্যালে গিয়ে টুটুল খুব দৌড়ে দৌড়ি করলো খানিক, রেলিং ধরে দাঁড়িয়ে দুরে বহুদুরে তাকিয়ে তাকিয়ে দেখতে থাকলো। এক সময় মা বাবা তাকে ডেকে নিয়ে একটা ঘোড়ায় উঠতে বললো। খুব খুশী হয়ে সহিসের চেষ্টায় ঘোড়ার ওপরে উঠলো। সহিস ঘোড়ার লাগাম ধরে ওকে ম্যালের ওপর কিছুক্ষণ ঘোরাল। বাবা ক্যামেরায় অনেক ফটো তুললো। পরদিন একদম সকালে  বাবা সবাইকে ঘুম থেকে  তুলে হোটেলের ছাদে নিয়ে গিয়ে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখাল। টুটুল দেখে তো একেবারে মুগ্ধ হয়ে গেল। সূর্য কিরণে  কেমন সোনালি রঙ ফুটে উঠেছে কাঞ্চনজঙ্ঘার পাঁচটা পীক। অপূর্ব উজ্জ্বল আর মহীয়ান লাগছে তাকে। চোখ ফেরাতে ইচ্ছে  করছে না টুটুলের। তার কোন বন্ধু দেখেছে কিনা সে জানে না। মাও খুব খুশি  হয়েছে। বাবা পটাপট ছবি তুলে বললো,


 - ' জানিস টুটুল,  কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে পাওয়া খুব ভাগ্যের ব্যাপার। এর আগে আমি দুবার এসে একবারও দেখতে পাইনি। একবার এক বন্ধুর সাথে এসে  আর একবার তোর মার সাথে এসে। কিন্তু  তোর ভাগ্যে এবার দেখা হোল। কি বল?' মাকে উদ্দেশ্য করে বাবা বললো। মা হেসে বলল,


- ' ঠিকই তো। টুটুলের ভাগ্যেই তো দেখা হলো এ যাত্রায়।' মা স্নেহের  হাত রাখল টুটুলের মাথায়।


              এরপরেও আরও দুদিন টুটুল কত কি দেখলো। সেভেন পয়েন্ট আর একদিন টয় ট্রেনে চেপে বাতাসিয়া লুপ্ ঘুরে আসা। তাছাড়া ম্যালে  আর একদিন ঘোঁড়ায় চড়া হয়েছে। অবশেষে টুটুল কলকাতায় ফিরে এলো হিমালয়ের রহস্য ও তার অপূর্ব  সৌন্দর্য মনের মত উপভোগ করে। ঠিক করলো তার এই অবাক করা হিমালয় দর্শন করার দিনগুলোর কথা বন্ধুদের শোনাবে।


_______________________________________________________________________________________
 
দীপক কুমার পাল 
ডিটিসি সাউদার্ন হাইটস,  
ডায়মন্ড হারবার রোড,  
কলকাতা - 700104
 
[চিত্রঃ: ইন্টারনেট মাধ্যম থেকে সংগৃহীত]

          

            

মন্তব্যসমূহ

সপ্তাহের পছন্দ

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 32nd issue: May 2024

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচীপত্র ।। 28th issue: January 2024

ছড়া ।। তোর ।। বিবেকানন্দ নস্কর

প্রচ্ছদ ও সূচীপত্র ।। 25th issue: October 2023

ছড়া ।। সবুজ ঘাসেতে প্রাণ খুঁজে পাই ।। জয়শ্রী সরকার

অনুবাদ ।। কথা না-বলা টিয়া ।। সুস্মিতা পাল

প্রচ্ছদ ও সূচীপত্র ।। 23rd issue: August 2023

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। ষড়ত্রিংশ সংখ্যা ।। সেপ্টেম্বর ২০২৪

মাসের পছন্দ

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। ষড়ত্রিংশ সংখ্যা ।। সেপ্টেম্বর ২০২৪

ছড়া ।। খোকাবাবু ।। মেশকাতুন নাহার

কবিতা ।। মাটির কাছে যায় ।। অবশেষ দাস

ছড়া ।। তোর ।। বিবেকানন্দ নস্কর

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 32nd issue: May 2024

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচীপত্র ।। 28th issue: January 2024

ছড়া ।। বর্ষার উৎসবে ।। আরতি মিত্র

ছড়া ।। পুজোর খুশী ।। আরতি মিত্র

কবিতা ।। ব্যাঘ্রমশাই ।। দীনেশ সরকার

বছরের পছন্দ

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। ত্রয়োত্রিংশ সংখ্যা ।। জুন ২০২৪

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচীপত্র ।। 29th Issue: February

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। চতুর্ত্রিংশ সংখ্যা ।। জুলাই ২০২৪

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 31st issue: April 2024

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 32nd issue: May 2024

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 30th issue : March 2024

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। পঞ্চত্রিংশ সংখ্যা ।। আগষ্ট ২০২৪

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। ষড়ত্রিংশ সংখ্যা ।। সেপ্টেম্বর ২০২৪

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচীপত্র ।। 26th issue: November 2023

অতি প্রিয়

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। আত্মপ্রকাশ সংখ্যা ।। অক্টোবর ২০২১

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। দ্বিতীয় সংখ্যা ।। নভেম্বর ২০২১

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 4th issue: January 2022,

নিবন্ধ ।। শিশু-কিশোর সাহিত্যবলয়ে শিশুরাই যেন ব্রাত‍্য না থাকে ।। অরবিন্দ পুরকাইত

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 7th issue: April 2022

নিবন্ধ ।। দেশীয় উদ্ভিদ কেন গুরুত্বপূর্ণ ? ।। ডঃ চিত্তরঞ্জন দাস

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। কিশলয় - ১০ ।। জুলাই ২০২২

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। কিশলয় - ১১ ।। আগস্ট ২০২২

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র : 8th issue: May 2022

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 5th issue: February 2022