Featured Post

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। কিশলয় ৪০ ।। মার্চ ২০২৫

ছবি
  সম্পাদকীয় আশা করি ভালো আছো ছোট্ট বন্ধুরা।কন কনে শীতের আবেশ ছাড়িয়ে ধীরে ধীরে ঋতুরাজের স্পর্শে প্রকৃতি নতুন রূপে সেজে উঠেছে।কচি পাতা আর রঙিন ফুলের সৌরভে মন কেমন করা পরিবেশ, তাই না? শিমুল পলাশে সব পথ রাঙিয়ে দিয়েছে যেন কেউ। দু-চোখ জুড়িয়ে যায়। সামনেই দোলযাত্রা, রঙের উৎসব। প্রকৃতির সাথে সাথে তোমরাও মেতে উঠবে সেই উৎসবে।খুব মজা করো, তবে সাবধানে, দেখো রং যেন কারোর চোখে না লাগে। যারা এ বছর মাধ্যমিক দিলে তাদের তো বেশ মজা। অনেকটা সময় পাচ্ছো ঘুরে বেড়ানোর , আনন্দ করার। এই অখণ্ড অবসরে আনন্দ উৎসবের মাঝেও একটু গল্প উপন্যাস পড়া, লেখালিখি,আঁকার জন্যও একটু সময় দিও। ভালো লাগবে।বসন্ত ঋতু সৃষ্টির ঋতু। নিজেদের সৃজনশীলতা যাতে ধীরে ধীরে বিকাশ হয় তার জন্য তো তোমাদের কিশলয়ের পাতা রয়েছে। তোমাদের ছোট ছোট প্রয়াস গুলোকে মেলে ধরাই তো এর কাজ। তাই দ্বিধা না করে ভালো মন্দ যাই লেখো,  আঁকো না কেন পাঠিয়ে দাও আমাদের দপ্তরে। তোমাদের কচি হাতের ছোঁয়ায় ভরে উঠুক তোমাদের প্ৰিয় কিশলয়। সবাই ভালো থেকো, সুস্থ থেকো আনন্দে থেকো।     শুভকামনাসহ-- প্রিয়ব্রত দত্ত ও কার্তিক চন্দ্র পাল। কার্যনির্বাহী যুগ্ম...

ছোটগল্প।। আনন্দে যাপন ।। শংকর ব্রহ্ম


       Durga pujo | Indian Roller or Neelkanth is deeply associated with Hindu  mythology and legends dgtl - Anandabazar


আনন্দে যাপন

শংকর ব্রহ্ম



                    আজ সকালে সুন্দর ঝলমলে সোনালি রোদ উঠেছে। পেঁজা তুলো মেঘগুলি নৌকার মতো যেন নীল আকাশে ভেসে বেড়াচ্ছে। বাতাসে পুজো পুজো গন্ধ। পুজোর আর বেশি দেরি নেই।

                    মার মুখে শুনেছে, মায়েদের গ্রামের জমিদার বাড়িতে নাকি পুজোর আগে একটা নীলকন্ঠ পাখি এসে বসতো।

- কেন মা, নীলকন্ঠ পাখি এসে বসতো?

- উম মা আসছেন, বাবা মহাদেবের এই বার্তা নিয়ে কৈলাশ থেকে নীলকন্ঠ পাখিটা আসতো বলে  জমিদার বাড়ির লোকের কাছে শুনেছি।

 

                   পাখিটা অনেকক্ষণ ধরেই ডাকছে কোথায় যেন। সেই ডাক শুনে, বুবাই আজ পড়ায় মন বসাতে পারছে না কিছুতেই । মনটা বারবার চলে যাচ্ছে পাখিটার ডাক শুনে তার কাছে। 

                    বাবা বলেছেন, পড়াশুনা সবসময় সময় মন দিয়ে করতে হয় , না হলে সে সময় অন্য কোনদিকে মন থাকলে, সেই পড়া মনে থাকে না। 

                    পড়ায় সে মন দেবে কী করে !  মনটা যে কেড়ে নিচ্ছে পাখিটার ওই মিষ্টি সুরের শিস।

' টি - ই - উ  টি - ই - উ  টি - ই - উ  করে একটানা কিছুক্ষণ ডেকে, একটু থামছে। আবার কিছুক্ষণ পর ডাকতে শুরু করছে। 

                     বুবাই সুরটা নকল করে নিয়ে নিজে কয়েকবার সে রকম শিস দেওয়ার চেষ্টা করেও পারলো না। ব্যর্থ হওয়ার কারণে মন কিছুটা হলেও খারাপ হয়ে গেলো তার। 

                    সে এবার জানলার কাছে গিয়ে পাখিটাকে খুঁজে দেখবার চেষ্টা করলো। জানলার সামনে একটা বড় তেঁতুল গাছ আছে। তারই পাতার আড়েলে কোথায়ও বসে ডাকছ পাখিটা। বুবাই তাকে খুঁজতে লাগলো। এটাই কি তাহলে সেই নীলকন্ঠ পাখি ? নীলকন্ঠ পাখি কি এমন সুরে ডাকে? বুবাই জানে না। মা জানলেও জানতে পারে। মা রান্না ঘরে রান্নার কাজে খুব ব্যস্ত এখন। না হলে বাবা অফিস যাওয়ার আগে তাকে সময় মতো খাবার দিতে পারবেন না। তাই এ সময় তাকে ডেকে কথাটা জানতে চাওয়া মোটেই সমীচীন হবে না , ভাবলো বুবাই।

                   এমন সময় বাবা এসে ঘরে ঢুকলেন। দেখলেন, বই ছেড়ে উঠে  বুবাই জানলায় কাছে গিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। তাই দেখে তিনি বললেন, পড়শুনা ছেড়ে জানলায় দাঁড়িয়ে কী করছো বুবাই?

- বাবা তুমি শুনতে পাচ্ছো, কেমন মিষ্টি সুরে একটা পাখি ডাকছে?

- না তো, পাচ্ছি না তো শুনতে

- তুমি একটু ভাল করে কান পেতে শোন

- আমার কাছে এতো সময নেই বাবা, তুমি পড়া ছেড়ে এসব করছো দেখলে মা কিন্তু রাগ করে, খুব বকবে তোমায়। বলে বাবা নিজের কাজ সেরে ঘর থেকে বেরিয়ে গেলেন। 

মা যে বকবে, বুবাই কী তা আর জানে না? খুব জানে। তাই সে অনিচ্ছা সত্ত্বেও,  জানলা ছেড়ে আবার পড়ার টেবিলে এসে বসলো। কিন্তু মনটা পড়ে রইলো ওই পাখিটার কাছে।


        বই খুলে বুবাই ভাবতে লাগলো,বড়োরা সব কেমন যেন। সব সময় কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকে তারা। এসব ব্যাপারে তাদের কোন কৌতূহল নেই। বুবাই আরও ভাবলো, পাখির জীবনটা কেমন আনন্দের। তাদের বাবা মার কোন কথা শুনে চলতে হয না। পড়াশুনার কোন বালাই নেই। খাও-দাও, যেখানে খুশি ঘুরে বেড়াও। কী মজা ! কী মজা ! 


            এর কয়েকদিন পর, সেদিন স্কুলে অংকের স্যার না আসায়, বুবাইদের ক্লাসে হেডস্যার এসেছিলেন। তিনি অংক করতে না দিয়ে, বললেন - তোমরা, কে কি হতে চাও, এবং কেন তা হতে চাও, সবাই খাতায় লিখে জমা দাও টেবিলে। সকলেই লিখে খাতা জমা দিলো। বুবাইও লিখে জমা দিলো।

        সকলে খাতা জমা দেবার পর। হেডস্যার এক এক করে খাতা দেখে নাম ধরে ডেকে বললেন, স্বপন এখানে এসো, কি লিখেছো পড়ো এবার। 

এরপর যার যার নাম ধরে ডাকলেন, সবাই এক এক করে সেখানে গিয়ে পড়তে শুরু করলো।

কেউ লিখছে, সে ডাক্তার হতে চায়। ডাক্তার হয়ে মানুষের সেবা করতে চায়। কেউ আবার ইঞ্জিনিয়ার হয়ে, দেশে বড় বড় সেতু অট্টালিকা গড়ে দেশের উন্নতি করতে চায়। কেউবা লেখক হয়ে সমাজের কথা লিখতে চায়। কেউ আবার মন্ত্রী হয়ে দেশের লোকের উন্নতি করতে চায়। 

          এরপর পড়ার জন্য যখন বুবায়ের ডাক পড়লো। বুবাই স্যারের টেবিলের কাছে গিয়ে, টেবিল থেকে খাতাটা তুলে নিয়ে যখন পড়তে শুরু করলো, সকলে তা শুনে হো হো করে হেসে উঠলো। ক্লাসে যেন হাসির ফোয়ারা ছড়িয়ে পড়লো । বুবায়ের লেখা শুনে হ্যাডস্যার কিন্তু মোটেও হাসলেন না। বরং বুবাইকে কাছে টেনে নিয়ে বললেন, বড় হয়ে তোমার মনটা যেন এরকমই থাকে বুবাই।

          বুবাই লিখেছিল, সম্ভব হলে আমি পাখি হয়ে সারা পৃথিবী ঘুরে বেড়াবো। এক জায়গার ফল ফুলের বীজ ঠোঁটে করে এনে অন্য জাযগায় ছড়িয়ে দেবো, যেখানে সে সব গাছপালা নেই। যখন যেখানে খুশি থাকবো। সেখানে যা পাবো তাই খুশি মনে খাব। এভাবেই আনন্দে কাটাবো আমার সারাটা জীবন।

____________________________________________________________________________________-


SANKAR BRAHMA.
8/1, ASHUTOSH PALLY,
P.O. - GARIA,
Kolkata - 700 084.

 [ছবি: ইন্টারনেট মাধ্যম থেকে সংগৃহীত]


মন্তব্যসমূহ

সপ্তাহের পছন্দ

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। কিশলয় ৪০ ।। মার্চ ২০২৫

দুটি ছড়া ।। তীর্থঙ্কর সুমিত

গল্প ।। দিন বদলায় ।। চন্দন দাশগুপ্ত

ছড়া ।। চৈতালি সুর ।। দুর্গা চরণ ঘোষ

ছড়া ।। ঝগড়া নিয়ে ছড়া ।। অরবিন্দ পুরকাইত

গল্প ।। সূর্যোদয় ।। দীপক পাল

ছড়া ।। ঐক্যতান ।। সুদানকৃষ্ণ মন্ডল

ছোটর কলম ।। মামারবাড়িতে দুপুরবেলা ।। অনমিতা মুখার্জি

কবিতা ।। মোদের ছোট্র গাঁ ।। খগেশ্বর দেব দাস

ডালমুটের ছড়া ।। গোবিন্দ মোদক

মাসের পছন্দ

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। কিশলয় ৪০ ।। মার্চ ২০২৫

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। ,39th issue: February 2025

দুটি ছড়া ।। তীর্থঙ্কর সুমিত

গল্প ।। দিন বদলায় ।। চন্দন দাশগুপ্ত

ছড়া ।। চৈতালি সুর ।। দুর্গা চরণ ঘোষ

ছড়া ।। ঝগড়া নিয়ে ছড়া ।। অরবিন্দ পুরকাইত

গল্প ।। সূর্যোদয় ।। দীপক পাল

ছড়া ।। ঐক্যতান ।। সুদানকৃষ্ণ মন্ডল

গদ্যরচনা ।। অচেনাকে ভয় ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত

ছোটগল্প ।। একটি গাছ একটি প্রাণ ।। সুজয় সাহা

বছরের পছন্দ

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 38th issue: January 2025

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। ত্রয়োত্রিংশ সংখ্যা ।। জুন ২০২৪

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সুচিপত্র ।। 37th issue: December 2024

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। চতুর্ত্রিংশ সংখ্যা ।। জুলাই ২০২৪

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 31st issue: April 2024

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। কিশলয় ৪০ ।। মার্চ ২০২৫

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। ,39th issue: February 2025

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 32nd issue: May 2024

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 30th issue : March 2024

অতি প্রিয়

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। আত্মপ্রকাশ সংখ্যা ।। অক্টোবর ২০২১

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। দ্বিতীয় সংখ্যা ।। নভেম্বর ২০২১

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 4th issue: January 2022,

নিবন্ধ ।। শিশু-কিশোর সাহিত্যবলয়ে শিশুরাই যেন ব্রাত‍্য না থাকে ।। অরবিন্দ পুরকাইত

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। 7th issue: April 2022

নিবন্ধ ।। দেশীয় উদ্ভিদ কেন গুরুত্বপূর্ণ ? ।। ডঃ চিত্তরঞ্জন দাস

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। কিশলয় - ১০ ।। জুলাই ২০২২

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। কিশলয় - ১১ ।। আগস্ট ২০২২

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র : 8th issue: May 2022

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। কিশলয় - ১২ ।। সেপ্টেম্বর ২০২২